খেলাধুলা
৮ লাখ রুপি যুবরাজের প্রতিটি রানের মূল্য!
স্পোর্টস ডেস্ক:
ম্যাচ: ১৪, রান: ২৪৮, সর্বোচ্চ: ৫৭, গড় ১৯.০৭ এবং স্ট্রাইক রেট: ১১৮.০৯ করে। এবারের আইপিএলে সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার, ১৬ কোটির রুপিতে দিল্লি ডেয়ার ডেভিলসের কেনা ক্রিকেটার যুবরা সিংয়ের পারফরম্যান্সের খেরোখাতা এটি। আইপিএল এইটের নিলাম চলাকালীনই যুবরাজ সিংয়ের মূল্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে থাকা কোনও ক্রিকেটারের পিছনে কেন ১৬ কোটি রুপি খরচ করছে ফ্র্যাঞ্চাইজি। ফর্মহীনতার কারণে দলেই সুযোগ পাচ্ছেন না যিনি, তাকে কেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা ঢেলে দেওয়া হচ্ছে। শঙ্কাটা সত্যি প্রমাণ হলো মাঠেই। ভাত ছড়ালে কাকের অভাব হয় না! বাংলায় এই প্রবাদটা আইপিএলে মোটেই সত্য নয়। আইপিএলে টাকা ছড়ালেও রানের অভাব হয়! আইপিএল এইটের সবচেয় দামী ক্রিকটার যুবরাজ সিংয়ের হতাশাজনক পারফরম্যান্সে এখন এটাই প্রমাণিত। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয় বেশি দামী ক্রিকেটার যুবির রান পিছু খরচ সাড়ে আট লক্ষ রুপিরও বেশি। গত ফেব্র“য়ারিতে অনুষ্ঠিত হয় আইপিএল এইটের নিলাম। স্টাইলিস্ট ব্যাটসম্যান এবং বোলার (এক কথায় স্টাইলিস্ট অলরাউন্ডার) যুবরাজকে ১৬ কোটি টাকা দিয়ে কেনে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে যা সর্বোচ্চ। নিলামে যুবির দাম নিয়ে তখনই তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছিল। অনেকেই ভ্রু কুঁচকেছিলেন। বিশেষজ্ঞরাও বলেছিলেন, যুবির পিছনে এই ব্যয় অর্থহীন। আইপিএলের লিগ পর্ব শেষে সেটাই সত্য প্রমাণিত হল। আট দলের টুর্নামেন্টে লিগ টেবিলে শেষ দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করেছে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। ১৩ ইনিংসে পাঞ্জাব পুত’রের ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ২৪৮ রান। গড় ১৯.০৭। এর মানে রান পিছু ৩৩ বছরের যুবির জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজির খরচ হয়েছে প্রায় আট লক্ষ ৫০ হাজার রুপি করে। লিগ তালিকায় সর্বাধিক রান সংগ্রহকারী ডেভিড ওয়র্নারের থেকেও বহুগুণ বেশি। টুর্নামেন্টে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ অধিনায়ক ৫৬২ রান করেছেন। গড় ৪৩.২৩ করে। স্ট্রাইকরেট ১৫৬.৫৪। ওয়ার্নারের রান পিছু খরচ প্রায় এক লক্ষ তিরিশ হাজার রুপি। শুধু তাই নয়, একাই দলকে অনেক ম্যাচ জিতিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এই বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান। কিন্তু, কোনও ম্যাচ একা জেতাতে পারেননি ডেয়ারডেভিলসের এই বাম হাতি। আইপিএল সেভেনের নিলামে যুবিকে ১৩ কোটি দিয়ে কিনে হতাশ হয়েছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর মালিক বিজয় মালিয়া। প্রত্যাশাপূরণে ব্যর্থ হওয়ায় আইপিএল সেভেনের পর যুবরাজে ছেড়ে দেয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স। অথচ, আইপিএল এইটে ভুলের মাশুল দিল দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। বাজে পারফরম্যান্স সত্ত্বেও সবচেয়ে বেশি দাম দিয়ে কিনে নিল যুবরাজকে। শুধু আইপিএল এইট কেন, কোন আসরেই নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি যুবরাজ সিং। অথচ প্রতিবারই উচ্চমূল্য দিয়ে তাকে কিনেছিল ফ্রাঞ্চাইজিগুলো। আইপিএলের প্রথম আসর থেকে এ পর্যন্ত ৮ আসরে মোট ৯৮ ম্যাচ খেলে ২০৯৯ রান করেছেন যুবরাজ। সর্বোচ্চ ৮৩, গড় ২৫.২৮ করে। স্ট্রাইক রেট ১২৯.৮৮। একবারও তার রান ৪০০ ছোঁয়নি। সবচেয়ে বেশি ৩৭৬ রান করেছিলেন ২০১৪ আইপিএলে। অথচ, তুলনা করলে দেখা যাবে সুরেশ রায়না প্রতিবারই নিজের রানকে নিয়ে গেছেন ৪০০’র ওপর।