Connect with us

বিচিত্র সংবাদ

গোটা গ্রামকে নিমন্ত্রণ জানিয়ে কৃষকের আত্মহুতি

Published

on

মাঠ1অনলাইন ডেস্ক: শ্রাদ্ধের নিমন্ত্রণ করেছিলেন তিনি। গোটা গ্রাম ছিল নিমন্ত্রিত। গ্রামবাসীরা বিস্ময়ে প্রশ্ন করেছিলেন, শ্রাদ্ধ! কার? কে মারা গেলেন? বছর চল্লিশের শেষরাও শেজুল বলেছিলেন, ‘আমার।’ শেষরাওয়ের রসিকতায় হেসে ফেলেছিল গ্রাম। তা না হলে মহারাষ্ট্রের মরাঠাওয়াড়া অঞ্চলের জালনা গ্রামে রঙ্গ-রসিকতার বড় একটা ঠাঁই নেই। ফুটিফাটা চরাচরে চাষের জমিও যে বন্ধ্যা হয়ে পড়ে!
রসিকতাই তো! তা না হলে নিজের শ্রাদ্ধ বলে গ্রামের লোকজনকে কেউ রীতিমতো নিমন্ত্রণ করে খাওয়াতে পারে! কিন্তু, বিপন্ন চাষির সেই ‘রসিকতা’ যে কত নির্মম, তা বোঝা গিয়েছিল পরের দিন, গ্রামের এক নিমগাছ থেকে শেষরাওয়ের ঝুলন্ত দেহের সন্ধান পাওয়ার পর। বাড়ির লোকজনের পাশাপাশি গ্রামের মানুষও বুঝলেন, রসিকতা নয়, নিজের ‘শেষকৃত্য’ সম্পূর্ণ করতে মরাঠাওয়াড়ার অভুক্ত চাষি শেষরাও সত্যিই সকলকে নিমন্ত্রণ করেছিলেন। গ্রামেরই এক জন বলছিলেন, ‘‘শেষরাও আমাকে আর গ্রামের আরও বেশ কয়েক জনকে বলেছিল, ও আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছে, তাই ওর শেষ কাজে আমাদের সবাইকে নিমন্ত্রণ করছে। কিন্তু কেউই ওর কথায় গুরুত্ব দেয়নি।’’
দু’একর জমি ছিল শেষরাওয়ের। সেখানে তিনি সোয়াবিনের চাষ করেন। কিন্তু মহারাষ্ট্রের এই মরাঠাওয়াড়া অঞ্চলে ভয়ঙ্কর খরায় সেই ফলন মার খায়। ঋণের বোঝা তাঁর ঘাড়ে চেপে বসে এই অঞ্চলের আরও অজস্র কৃষিজীবীর মতোই।
নিজের জীবন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে বটে শেষরাওয়ের, কিন্তু গতি পেয়েছে রাজনীতির চাকা। কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনায় সরব হয়েছে মহারাষ্ট্রে বিজেপি-র জোটসঙ্গী শিবসেনা। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে শিবসেনা। মহারাষ্ট্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের সুফল বোঝাতে সামনের মাসেই ‘মেক ইন ইন্ডিয়া উইক’ পালনের পরিকল্পনা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু শিবসেনার মুখপাত্র ‘সামনা’য় তারা প্রশ্ন তুলেছে, শেষরাওয়ের ওই নিমন্ত্রণ কি ‘মন্ত্রালয়’ পর্যন্ত পৌঁছেছিল?
প্রশ্নগুলো সহজ। আর উত্তরও তো জানা! তা হলে?
‘রসিক’ শেষরাও এর শেষটা জেনে যেতে পারেননি। যে শেষরাও শেজুল-রা এখনও বেঁচে রইলেন তাঁরাও কি এই জানা উত্তরের উত্তর পাবেন?

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *