ফিচার
পৃথিবীর প্রাচীনতম ভাসমান গ্রাম ’কাসোনি’
আমেরিকার ফ্লোরিডা ও ইউরোপের ভেনিস জলাধারের চেয়েও এই জলাধার অনেক বড়। সুন্দর পরিবেশের জন্য এই জলাধারকে মধ্যপ্রাচ্যের ভেনিস বলা হয়। ‘মা ডান’ উপজাতি কয়েকটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠী নিয়ে গঠিত হয়েছে। পাঁচ হাজার বছর ধরে জলাধারের মধ্যে তারা উন্নত, টেকসই, পরিবেশবান্ধব এক সাংস্কৃতিক জীবন ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে।
ভাসমান গ্রামের ঘরগুলো অভিনব কৌশলে তৈরি। খড় ও পাকা ফসলের অংশ ভাসমান গ্রামটি প্রতিষ্ঠা করেছে। এখানে ঘরও তৈরি হয় ফসলের খড়কুটো দিয়ে। ঘর তৈরিতে কোনো কাঠ ও পেরেক ব্যবহার করে না বাসিন্দারা। একেকটি ঘর তৈরি করতে তিন দিন সময় লাগে। এসব ঘরকে আরবের স্বর্গ বলা হয়। এখানকার বাড়িগুলো সত্যিই বিস্ময়কর।
এখানকার জেলেরা এ ভাসমান গ্রামের নামকরণ করেছেন ’কাসোনি’(casoni)। ভাসমান এ বসতি বর্তমানে ‘মাডহিফ’ (mudhif)নামে পরিচিত। ভাসমান বসতিগুলো দেখতে খুবই চমৎকার।
নৌকাই এখানকার বাসিন্দাদের চলাচলের প্রধান মাধ্যম। এখানকার নারী-পুরুষ সবাই নৌকা চালাতে পারে। ভাসমান বসতির নারীদের বোরকা পরে বাইরে বের হতে হয়। এ ভাসমান বসতিতে এখানকার বাসিন্দারা পশুপালনও করে।
১৯৯০ সালে সাদ্দাম সরকারের সময়ে অনেক মানুষকে উদ্বাস্তু হিসেবে এখানে পাঠানো হয়। ১৯৯১ সালে উদ্বাস্তু মানুষের মাত্রা বাড়তে থাকে। অধিকাংশ ‘মার্শ আরব’ সাদ্দাম সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়। সাদ্দামের ভয়ে অনেকেই এ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। ২০০৩ সালে সাদ্দাম সরকারের পতনের পর আবার সেখানে মার্শ আরবরা ফিরে যায়।
বর্তমান ইরাক সরকার মার্শ আরবদের হাজার বছরের ঐতিহ্যকে রক্ষার চেষ্টা করছে। মার্শ আরবদের এই কুঁড়েঘর পর্যটকদের অতিথিশালা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।