Connect with us

দেশজুড়ে

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে আলোচনা সভা

Avatar photo

Published

on

Captureনোয়াখালী প্রতিনিধি:

আমাদের দেশের শতকরা ৯০ জন মানুষ মুসলমান। তারা আল্লাহ, আল্লাহর রসুল ও ধর্মগ্রন্থকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসে। কাজেই এই ধর্মপ্রাণ মানুষগুলোর ধর্মবিশ্বাস অবজ্ঞা করার, খাটো করে দেখার বা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। যাদেরকে ইসলামের নাম করে ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত করা হচ্ছে তারা মনে করছে ওই কাজ করলে তারা জান্নাতে যেতে পারবে, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হবে। এই মানুষগুলোকে ধর্মব্যবসায়ীদের দ্বারা ব্যবহৃত হওয়া থেকে ফেরাতে চাইলে তাদের ঈমানকে ভুল পথ থেকে সরিয়ে এনে সঠিক পথে পরিচালিত করতে হবে। সকলকে বুঝতে হবে- যে ঈমান দুনিয়াতে মানুষের কল্যাণে কাজে আসে না, সেই ঈমান পরকালেও কোনো কাজে আসবে না। বুধবার নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ধর্মবিশ্বাস: এক বৃহৎ সমস্যার সহজ সমাধান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচক দৈনিক বজ্রশক্তির উপদেষ্টা রুফায়দাহ পন্নী এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন- সহিংসতা বা সন্ত্রাস করা জেহাদ হতে পারে না, বরং জেহাদ হলো সহিংসতা-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা অর্থাৎ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো। সমাজের ধর্মপ্রাণ মানুষগুলো যদি ধর্মের প্রকৃত শিক্ষাটি পায় তাহলে স্বার্থবাদীরা তাদেরকে আর ভুল পথে নিতে পারবে না। ফলে মানুষের ঈমান সমাজের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে আবির্ভূত হবে।
ধর্মব্যবসায়ীদের হাত থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষের ঈমানকে রক্ষা করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, স্রষ্টা পৃথিবীতে ধর্ম পাঠিয়েছেন মানবজাতিকে ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব, শৃঙ্খলা, মানবতা, সাম্য, সৌহার্দ্য, এক কথায় শান্তিময় সমাজ উপহার দেওয়ার জন্য। কিন্তু বর্তমানে ধর্মের দোহাই দিয়ে অহরহ অকল্যাণকর কার্য সম্পাদিত হচ্ছে। মানুষের ধর্মবিশ্বাস ভ্রান্ত পথে প্রবাহিত করে একটি স্বার্থান্বেষী শ্রেণি দেশ ও জাতিকে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে দাঁড় করাচ্ছে। বারবার মানুষের ঈমানকে হাইজ্যাক করা হচ্ছে, ফলে মানুষ এদের কথা বিশ্বাস করে ইহকাল-পরকাল উভয়ই হারাচ্ছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব এই স্বার্থান্বেষী মানুষের কবল থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষকে রক্ষা করে ধর্মকে মানবতার কল্যাণে কাজে লাগানো প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব মিজানুর রহমান বাদল। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আজকে হেযবুত তওহীদ যে কর্মসূচি নিয়ে নেমেছে তাকে স্বাগতম জানাই। এই কাজটি আমাদেরই করা উচিত ছিল, এটা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। আইএস তালেবান নামে যে জঙ্গি সৃষ্টি হচ্ছে তার সবই হচ্ছে মানুষের ঈমানকে ভুল পথে পরিচালিত করার কারণে। একজন মুসলমান গাছের সাথে বেঁধে অপর মুসলমানকে চাকু দিয়ে জবাই করছে। এরা কেমন মুসলমান? আমাদের দেশে আমরা দেখি ইসলামের নাম করে ইট দিয়ে পুলিশের মাথা থেঁতলে দেয়া হচ্ছে, কচি কচি শিশুকে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, মিছিল নিয়ে এসে সরকারি অফিস জ্বালিয়ে দিচ্ছে, সন্ত্রাস করছে, একদিকে নারীদেরকে পর্দার দোহাই দিয়ে ঘরের মধ্যে আটকে রাখছে, অন্যদিকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাদেরকে পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য প্রভাবিত করছে। এসব কি ইসলামের শিক্ষা? তিনি আরও বলেন, হেযবুত তওহীদের স্লোগান হলো- সকল ধর্মের মর্মকথা, সবার ঊর্ধ্বে মানবতা। মানবতার কল্যাণই হলো মানুষের প্রকৃত এবাদত। আমি আমার অবস্থান থেকে হেযবুত তওহীদকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছি। মানবতাবাদী যুক্তিশীল প্রকৃত মু’মিনের, দেশপ্রেমিক জনতার ঐক্যবদ্ধ হবার সময় এসেছে। সময় এসেছে স্বাধীনতাকে অর্থবহ করার।
এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশেষ অতিথি রংমালা দারুল সুন্নাহ মডেল আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ জনাব মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, একপেশে বক্তব্য দিয়ে ইসলাম হয় না। মানবতার কল্যাণে কথা না বলে, কাজ না করে শুধু নামাজ-রোজার কথা বললে সেটা ইসলাম হবে না। আবার নামাজ রোজা বাদ দিয়ে শুধু মানবতার কল্যাণে কথা বললে সেটা হবে আংশিক।
একটি কথিত ইসলামী রাজনৈতিক দলের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, এরা ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ইসলামপ্রিয় জনতাকে বিভ্রান্ত করেছে। মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করছে। হেযবুত তওহীদ আজ যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সেটা অত্যন্ত সময়পোযোগী এবং দরকারি। নামাজ রোজা যেমন ফরজ তেমনি মানবতার কল্যাণে কাজ করাও ফরজ। এখানে ডকুমেন্টারিতে যেটা দেখানো হয়েছে তার সাথে আমি সহমত পোষণ করি। মসজিদ-মাদ্রাসায় দান করা যেমন সওয়াবের কাজ, তেমনি রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট ইত্যাদি নির্মাণের জন্য দান করাও এবাদত- এটাই ইসলামের শিক্ষা। এছাড়া ইসলামে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই উল্লেখ করে তিনি সকল প্রকার সহিংসতা, অন্যায়, অবিচার ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা জনাব খিজির হায়াত খাঁন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আরজুমান পারভিন ও জনাব আজম পাশা চৌধুরী (রুমেল) এবং উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার জনাব আজিজুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হেযবুত তওহীদের নোয়াখালী জেলা আমির মো: নিজামউদ্দিন।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গাজীপুর

গাজীপুরে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে পুনরায় রেস্টুরেন্ট চালু, আতঙ্কে স্থানীয়রা

Avatar photo

Published

on

গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরে বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত ভবনে অননুমোদিতভাবে পুনরায় রেস্টুরেন্ট চালু হওয়ার বিগত ৫ বছরেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। বেইলি রোড ট্র্যাজেডির পর রেস্টুরেন্টটিতে পুনরায় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রীতিমতো আতঙ্গে ভুগছেন প্রতিবেশীরা। রেস্টুরেন্ট মালিক বিস্ফোরণের ঘটনাকে ‘অগ্নিকাণ্ড’ উল্লেখ করে বীমা কোম্পানি থেকে কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ পেলেও আশপাশের ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আজও দাঁড়ায়নি কেউ। উন্মুক্ত আলো-বাতাস বিহীন ওই রেস্তোরাঁর বদ্ধ রান্নাঘরে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে ভবনের ভেসমেন্ট লন্ডভন্ড হয়ে যায় এবং কয়েকটি ভবনের মূল কলাম ভেঙ্গে পড়ে।

উল্লেখ্য বিগত ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রাতে গাজীপুর মহানগরীর বোর্ড বাজারে অবস্থিত বাংলার রাঁধুনি রেস্তোরাঁয় সংঘটিত ওই বিস্ফোরণে ১ জন নিহত ও ১৭ জন আহত হয়। ব্যস্ততম বোর্ড বাজার বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘেঁষেই মনসুর আলী সুপার মার্কেটের নীচ তলায় রেস্তোরাটি অবস্থিত। বিস্ফোরণে রেস্তোরাঁর ভেতরে থাকা লোকজন ছাড়াও পথচারিরাও আহত হয়। মহাসড়কের বিপরীত পাশে বোর্ডবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে গিয়েও বিস্ফোরিত বস্তু আঘাত আনে। মসজিদের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ আজও ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণের সাক্ষী হয়ে আছে।

স্থানীয়দের প্রশ্ন, আর কত ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও প্রাণ ঝরলে কর্তৃপক্ষ সজাগ হবে। ওই ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে। এ ঘটনায় গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দেয়া পর্যন্তই সবার দায়িত্ব শেষ। পরবর্তীতে রেস্তোরাঁ বা ভবনটির কার্যক্রম সম্পর্কে আর কেউ খবর রাখেনি। এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির প্রস্তাবনা-নির্দেশনাও আর বাস্তবায়ন হয়নি। বরং যথাযথ নিয়ম কানুন প্রতিপালন ছাড়াই চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে আগের জায়গায় রেস্তোরাঁ চালুসহ সব ধরনের কার্যক্রম চলছে আরো জোরেশোরে। এতো বড় একটা দুর্ঘটনার পরও যেনতেনভাবে সেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পুনরায় রেস্টুরেন্ট চালু হওয়ায় বিস্ময়ে অবাক স্থানীয়রা। ভবনটি সংস্কার বা পুনঃনির্মাণে রাজউকের অনুমোদন ও ফায়ার সার্ভিসের অনাপত্তি সনদও নেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি রেস্তোরাঁ ও ভবন মালিকপক্ষ।ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটিতে কীভাবে আগের মতই সব কার্যক্রম চলছে তা যাচাই করে দেখারও সময় হয়নি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের।

পাশের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও ভবন মালিকরা জানান, বিস্ফোরণে ক্ষয়ক্ষতি হলেও রেস্টুরেন্ট মালিক ‘অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বাবদ’ বীমা কোম্পানি থেকে এক কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ লাভ করেন। অথচ ওই রেস্তোরাঁ মালিকের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের কাউকেই একটি টাকাও ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়নি। বিগত ২০২১ সালের ২৭ জুন রাজধানীর মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৭ জন নিহত হওয়ার পর দিনই প্রতিবেশী আতঙ্কগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বাংলার রাঁধুনি রেস্তোরাঁর কার্যক্রম পরিচালনা প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেন। প্রায় তিন বছর পেরিয়ে গেলেও আজও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব‍্যবস্থা গ্রহণ করেননি। সম্প্রতি রাজধানীর বেইলি রোডের একটি ভবনে রেস্টুরেন্টে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় অর্ধশত প্রাণহানির ঘটনায় গাজীপুর বোর্ড বাজারের আলোচিত বাংলার রাঁধুিন রেস্তোরাঁ সংলগ্ন ব্যবসায়ীদের মধ্যে এখন রীতিমতো আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্থানীয়দের প্রশ্ন, বাংলার রাঁধুনির জরুরি বর্হিনির্গমন ব্যবস্থা না থাকা ভবনের ভেতরে আটকে থাকা মানুষগুলোর পরিণতি যদি নতুন কোনো বেইলি রোড ট্র্যাজেডি তৈরি করে তাহলে তার দায়ভার কে নিবে? বিগত ২০১৯ সালের দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোরই বা কি হবে যারা পূর্বের দুর্ঘটনার ঋণের বোঝা এখনো বয়ে বেরাচ্ছেন। রাঁধুনি রেস্তোরাঁর মালিক হাবিব কিন্তু ঠিকই ইন্সূরেন্সের টাকা দিয়ে তার ক্ষতি পুষিয়ে নিবেন। রাশেদের মতো সন্তান হারানো মায়ের কোল ভরিয়ে দিবে কে?

এদিকে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাংলার রাঁধুনি রেস্তোরাঁর মালিক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ভবনটি যথাযথভাবে সংস্কার করেই আমরা পুনরায় রেস্তোরাটি চালু করেছি। এখন আর কোন ঝুঁকি নেই।

Continue Reading

গাজীপুর

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের মেমোরিয়াল ডে-২০২৪ উদযাপন

Avatar photo

Published

on

কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যের স্মরণে “পুলিশ মেমোরিয়াল ডে-২০২৪” উদযাপন করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ।

‘কর্তব্যের তরে, করে গেলে যাঁরা,আত্মবলিদান-প্রতিক্ষণে স্মরি, রাখিব ধরি, তোমাদের সম্মান’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শনিবার এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ মাহবুব আলম বিপিএম পিপিএম(বার)।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার। পরে ১ মিনিট নীরবতা পালন ও কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের পরিবারবর্গ ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Continue Reading

গাজীপুর

মাদক দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ কোনাবাড়ি থানার এএসআইয়ের বিরুদ্ধে

Avatar photo

Published

on

গাজীপুর প্রতিনিধি :

ঘুষ না দেয়ায় মাদক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কোনাবাড়ি থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। তিনি কোনাবাড়ির বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক অন্যায় করে বেড়াচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে বেশকিছু অভিযোগ।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে নিয়ে ওই এএসআই রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর দাদা মোঃ লাল মিয়া (৬২) নামে এক ব্যক্তি গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি অপরাধ (উত্তর) বিভাগে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এএসআই রুহুল আমিন।

লিখিত অভিযোগে লাল মিয়া জানায়, গেল ৪-ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৫টার দিকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ি থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এসএআই) রুহুল আমিন ও তার সঙ্গী ফর্মা (সোর্স) মিলে লাল মিয়ার নাতী ইমনকে আমবাগ লালঘাট ব্রিজের কাছে থেকে আটক করে।

পরে তাকে ধরে নিয়ে মিতালী ক্লাব সংলগ্ন ভুক্তভোগীর বর্তমান ঠিকানার ভাড়াবাসায় এসে মাদকদ্রব্যের কথা বলে ঘরে প্রবেশ করেন ওই দারোগা এবং তার সোর্স মোঃ শরিফ মিয়া। এ সময় তাদের ঘরে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্র বিছানা, আলমারি, সুকেশ তল্লাশি করেন তারা। তল্লাশিরকালে ইমনদের বাসায় মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত কোনো কিছুই পায়নি ওই পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক।

এ পর্যায়ে তাদের ঘর তল্লাশি শেষে কিছু না পেয়ে এএসআই রুহুল আমিন ও তার সঙ্গে ফর্মা (সোর্স) ঘরে থাকা স্টিলের আলমারি থেকে নগদ তিন হাজার টাকা, সুকেশ এর ড্রয়ার থেকে আট আনা স্বর্ণের একটি চেইন, আট আনা ওজনের একজোড়া স্বর্ণের কানের দুল, তিন আনা ওজনের একটি আংটি এবং ব্যবহৃত অপ্পো ব্রান্ডের পুরাতন মোবাইল সেট নিয়ে নেয়।

পরে পুলিশের সঙ্গে থাকা সোর্স শরিফ এবং চাঁন মিয়া অভিযোগকারীর নাতী ইমনকে মারধর করে এবং টাকা দিতে বলে। টাকা না দিলে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে বলে ইমনের মাকে হুমকী দিয়ে ইমনকে নিয়ে চলে যায়।

লিখিত অভিযোগকারী ইমনের দাদা লাল মিয়া বলেন, এরপর ৫-ফেব্রুয়ারি অনুমানিক রাত দেড়টার দিকে এএসআই রুহুল তার সোর্স মোঃ শরিফ (২০বাসায় পাঠায় এবং ১নং আসামি ইমনের মা রাশেদা বেগমের কাছে (৫০) পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে বলে। ৫০ হাজার টাকা দিলে থানা থেকে তার ছেলে ইমনকে ছেড়ে দেয়া হবে।

অভিযোগকারী লাল মিয়া জানায়, তার ছেলে নুর আলম নাতী ইমনসহ পরিবার নিয়ে বর্তমান ঠিকানায় দুই বছর যাবৎ বসবাস করছেন। ইমনের বাবা নুর আলম নছের মার্কেট এলাকায় ভিভিন্ন ঝুটগুদামে ডেইলী লেবারের কাজ করেন। আর নাতী ইমন বাসায় থেকে সুইং মেশিন চালিয়ে প্যান্ট ও গেঞ্জির কাজ করে সংসার চালিয়ে আসছে। আমি এবং আমার পরিবারের কেউই কখনো মাদকদ্রব্য সেবন, গ্রহণ এবং ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে সম্পৃত্ততা নেই এমন কি এলাকার কেউ বলতে পারবে না যে, আমার নাতী ইমন মাদকের সংঙ্গে জড়িত।
অথচ দারোগা রুহুল সন্দেহ বশত্ব রাস্তা থেকে আমার নাতীকে গ্রেপ্তার করেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা টাকা চেয়েছিল, মূলত টাকা না দেয়ার কারণে আমার নাতিকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে জেলে প্রেরণ করেছেন রুহুল দারোগা। এই বিষয়ে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আমার বর্তমান ঠিকানা ভাড়া বাসার সামনে স্থাপনকৃত সিসি ক্যামেরায় সংরক্ষিত সব ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। ওই ভিডিও ফুটেজে এএসআই রুহুল আমিনসহ সোর্সদের দেখা গেছে ইমনের বাসায় ঢুকতে। ভিডিও ফুটেজে ইমনকে মারপিট করার শব্দও শোনা গেছে।

ইমনের বাবা নুর আলম বলেন, আমার ছেলে ইমনের সঙ্গে মিতালী ক্লাব উত্তরপাড়া এলাকার নয়ন (১৯) কেও গ্রেপ্তার করে হয়। নয়নকে ১৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট আর আমার ছেলেকে ২৫পিস ইয়াবা চালান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, রুহুল নয়নের পরিবারের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে নয়নকে ১৫পিস ট্যাবলেট দিয়েছে।

ইমনের বাবা বলেন, আমি গরীব মানুষ বিভিন্ন ঝুট-গুদামে লেবারের কাজ করে কোনো মতে সংসার চালায়। আমার ছেলেকে যেদিন গ্রেপ্তার করা হয় সেদিন বরিশালে পীরের দরবারে ছিলাম। বাসায় এসে শুনি আমার ছেলে ইমনকে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার করে জেলে দেয়া হয়েছে। আমি মেয়ের জন্য আস্তে আস্তে কিছু স্বর্ণের জিনিস করেছিলাম সেগুলোও ওই পুলিশ নিয়ে গেছেন। সোর্স ওবায়দুল ওই গয়না গুলো খুলে নেন। টাকা দিতে পারিনি বিধায় আমার ছেলেকে মাদক মামলায় জড়ানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, ইমনকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর পরে তারা খুব মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছে। এর প্রতিকার চেয়ে দারোগা রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে বর্ণিত বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবী করে লিখিত অভিযোগ করেছি।

তবে এসব অভিযোগ এএসআই রুহুল আমিন অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে তারা মিথ্যা অভিযোগ করছেন।

জিএমপি কোনাবাড়ি থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মহিউদ্দিন ফারুক জানান, অন্যায় করতে পছন্দ করি না, কেউ যদি অন্যায় করে সমর্থনও করি না, পুলিশের কেউ যদি এমন অপরাধ করে থাকে তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আছেন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবে।

Continue Reading