Connect with us

দেশজুড়ে

বেনাপোল কাস্টম হাউসে রাজস্ব আদায়ে ধ্বস, কমেছে অমদানি-রফতানি

Published

on

Benaple_pic_bg_722152351

কামাল হোসেন, বেনাপোল প্রতিনিধি : বেনাপোল কাস্টম হাউসে চলতি ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের প্রথম দুই মাসে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের ধ্বস নেমেছে। রাজস্ব বোর্ডের দেয়া লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। দুই মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৯৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে ৪৩৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।

ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছে গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি সহ দেশের সিংহভাগ শিল্প কল কারখানার কাচামাল আমদানি হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। খুব অল্প সময়ে কলকাতা থেকে মাত্র আড়াই ঘণ্টায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে মালামাল আমদানি হয়ে থাকে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষের জোর করে পন্যের মুল্য বৃদ্ধি করে আবার তার ওপর জরিমানা আদায়, বন্দর থেকে খালাশকৃত পন্য মাঝ পথে বিজিবি কর্তৃক তল্লাশীর নামে দিনের পর দিন আটকে রেখে হয়রানি ও অবাধ চোরাচালানের কারনে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পন্য আমদানি কমে গিয়ে রাজস্ব আদায়ে ধ্বস নেমেছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। এসব সমস্যা সমাধান করা হলে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ছাড়িয়ে দ্বিগুন হবে বলে দাবি ব্যবসায়ীে দর।

শুধুমাত্র চলতি জুলাই মাসেই ১ হাজার ২৩১’শ টন পন্য কম আমদানি হযেছে ভারত থেকে। ইতিমধ্যে এই বন্দর দিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে পচনশীল পন্য যেমন, ফল , পিয়াজ, রসুন, আদা, পান, মাছ, শাড়ী, থ্রি পিচ,জুতা স্যান্ডেল, সুতা, বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল সহ বমে কিছু পণ্য।

মংলা, চট্রগ্রাম, ভোমরা, হিলি সোনামসজিদ সহ দেশের বিভিণœ শুল্ক হাউসে যে মূল্যে পন্যের শুল্কায়ন করা হচ্ছে বেনাপোলে তার চেয়ে বেশী মূল্যে শুলায়ন করায় ব্যবসায়ীরা বৈধ পথে পন্য আমদানি কমিয়ে চোরাইপথে পণ্য আমদানি করছে। অন্যদিকে উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান সহ অন্যাণ্য আমদানিকারকদের আমদানি করা প্রতিটি কেমিক্যাল জাতীয় পণ্য রাসায়নিক পরীক্ষার নামে দিনের পর দিন আটকে রেখে হয়রানি করা হচেছ বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। এসব হয়রানির কারণে আমদানিকারকরা বাধ্য হয়ে এ বন্দর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন। প্রতিটি ঈদ উপলক্ষে বেনাপোল বন্দর দিয়ে শত শত ট্রাক শাড়ি থ্রি পিচ, তৈরী পোষাক আমদানি হতো বর্তমানে ঈদুল আযহা উপলক্ষে তা বন্ধ রযেছে। বিশেষ করে উচ্চ শুল্ক হারের পন্য আমদানি কমে গেছে এসব হয়রানির কারনে। বর্তমানে বন্দরে এক একটি পন্য চালান কাস্টম কর্তৃপক্ষের পরীক্ষা করতে ৪/৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগছে।

কাস্টম সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থ-বছরের জুলাইয়ে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ১৯০ কোটি ১৮ লাখ টাকা। আগস্টে ২৫২ কোটি ৪৯ লাখ টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছে ২৪৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, কতিপয় কাস্টমস কর্মকর্তাদের অহেতুক হয়রানির কারণে রাজস্ব আদায়ে ধ্বস নেমেছে। এছাড়া সপ্তাহে দুই একদিন অনলাইন সিস্টেম বিকল, অহেতুক পন্যের মূল্যবৃদ্ধি সহ সব পন্য শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করানোর কারণেও ব্যবসায়ীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচেছ। ফলে তারা অন্য বন্দরের দিকে ঝুঁকে পড়ছে।

আমাদনি রফতানি কারক সমিতির সহ সভাপতি আলহাজ্ব আমিনুর রহমান জানান, কাস্টমস কর্তৃপক্ষের জোর করে পন্যের মুল্য বৃদ্ধি করে আবার তার ওপর জরিমানা আদায়, বন্দর থেকে খালাশকৃত পন্য মাঝ পথে বিজিবি কর্তৃক তল্লাশীর নামে দিনের পর দিন আটকে রেখে হয়রানি ও অবাধ চোরাচালান বন্ধ করা সহ মংলা ও চট্রগ্রাম কাস্টমস হাউসে যে নিয়মে পন্যের শুল্কায়ন ও খালাশ দেয়া হয় সেই নিয়ম ফলো করলে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি রফতানি বাড়বে বাাড়বে রাজস্ব আয়।

কাস্টম কর্তৃপক্ষ আমদানিকৃত একটি চালান ৪/৫ দিন ধরে সরেজমিন শতভাগ পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে রাজস্ব আদায় করে বন্দর থেকে খালাশ দেয়ার পর বিজিবি সেই চালান মাঝপথে আটক করে চালানে অবৈধ পন্য আছে এই অজুহাতে পন্যচালান ক্যাম্পে নিয়ে দিনের পর দিন আটকে রেখে কোন কারন ছাড়াই আবার তা কাস্টমস গুদামে জমা দিচ্ছে। ফলে পন্যের গুনগত মান নস্ট হয়ে যাচ্ছে , ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে আমদানিকারকর্।

বেনাপোল ট্রাক মালিক সমিতির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক মোতালেব হোসেন জানান, ভারত থেকে এদেশে পণ্য আমদানি হলে প্রতিটি ট্রাক থেকে আগে ভারতের বনগাঁয় ইউনিয়ন পরিষদ টোল আদায় করতো। এখন সেখানে বনগাঁ পৌরসভা কালিতলায় গাড়ি পার্কিং করে টোল আদায় করছে সিরিয়াল ধরে। এতে আমদানিকৃত পণ্যবাহী ্রটাক ৩-৪ দিন ধরে আটকা পড়ে সময়মত পন্য আমদানি হচেছ না। এটি অবিলম্ভে বন্ধ করতে হবে।

বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার এএফএম আবদুল্লাহ খান জানান, ঈদের পর পন্য আমদানি কমে যাওয়ায় রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। আগামীতে এই ঘাটতি থাকবেনা। সরকারের রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে কিছু কিছু পণ্যের রাসায়নিক পরীক্ষার প্রয়োজন বিধায় সেসব আইটেম পরীক্ষা করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের কোনো কর্মকর্তা হয়রানি করলে আমাদের জানালে আমরা তার ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *