কপোতাক্ষের পর অস্তিত্বের সংকটে শিবসা
পাইকগাছা প্রতিনিধি, খুলনা:
কপোতাক্ষ নদের পর নাব্যতা হারিয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে ঐতিহ্যবাহী শিবসা নদী। পলি জমে আশঙ্কাজনক হারে গভীরতা কমে গেছে নদীটির। শিববাঢী ব্রিজ থেকে হাড়িয়া চৌমুহনী পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার নদী ভাটার সময় সম্পূর্ণ শুকিয়ে যায়। ফলে জোয়ারের সময় কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও ভাটার সময় বন্ধ হয়ে যায় নৌযান চলাচল। পলি জমে গত কয়েক বছরের মধ্যে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। নদীটি খননের উদ্যোগ না নিলে, আগামী দু’এক বছরের মধ্যে গোটা পৌরসভাসহ বিস্তীর্ণ এলাকা স্থায়ী জলাবদ্ধতায় রূপ নিবে বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার নদ-নদীগুলোর মধ্যে শিবসা ও কপোতাক্ষ অন্যতম। এ দু’টি নদ-নদী উপজেলার প্রাণ। ইতোমধ্যে ভরাট হয়ে গেছে কপোতাক্ষ। কপোতাক্ষের পর এবার অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে ঐতিহ্যবাহী শিবসা। একসময় এ নদী দিয়ে লঞ্চ, স্টিমার, চলাচল করত। মালামাল পরিবহন থেকে শুরু করে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম ছিল এ নদীটি। মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত শতশত পরিবার। ঐতিহ্যবাহী নদীটি আজ মৃত প্রায়। কপোতাক্ষের পথ অনুসরণ করে গত কয়েক বছরে পলি জমে কপোতাক্ষ নদ শেষ প্রান্ত অর্থাৎ শিববাঢী ব্রিজ থেকে হাড়িয়া চৌমুহনী পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার নদী নাব্যতা হারিয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে।
পৌর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর জানান, নদীটি খনন করা না হলে আগামী দু’এক বছরের মধ্যে পৌরসভাসহ বিস্তীর্ণ এলাকা রূপ নেবে স্থায়ী জলাবদ্ধতায়। ফলে ব্যাপক ফসলহানীসহ দুর্ভোগে পড়বে হাজার হাজার মানুষ। উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. স.ম. বাবর আলী জানিয়েছেন, উপজেলার সকল নদ-নদীর প্রাণ হচ্ছে শিবসা নদী। এলাকার পানি নিষ্কাশন থেকে শুরু করে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম এ নদীটি। এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান স্বাভাবিক রাখতে নদীটি খনন জরুরি হয়ে পড়েছে। নদীটি খননের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ এবং এ সংক্রান্ত বিষয়ে মহান জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে বলে স্থানীয় এমপি এ্যাড. শেখ মো. নূরুল হক এফএনএসকে জানান। অনতিবিলম্বে নদীটি খনন করে এ অঞ্চলের জীবন-জীবিকা ও অর্থনীতির চালিকা শক্তিকে সচল রাখা হোক এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।