Connect with us

কবিতা

তাপস বিশ্বাসের কবিতা – বেঁচে থাকার ভান

Avatar photo

Published

on

কবিতা

বেঁচে থাকার ভান

   তাপস বিশ্বাস


বেঁচে থাকায় দোষ নেই
সবাই বাঁচতে চায়
বেঁচে থাকার অভিনয়টাই ঝামেলার।
যোগ্যতা, আসক্তি, আকাঙ্ক্ষা হারানো জীবন
মুখ থুবড়ে পড়া বাক্যের মত অর্থহীন,
ন্যাড়া বটগাছের মতই ছায়াহীন
মৃতনদীর মত ফেরারি সময়ের সাক্ষী।
গুরুচণ্ডালী দোষে দুষ্ট জীবন
মাদাম তুসোর জাদুঘরে রাখা
মন-প্রাণহীন মোমের পুতুল।

যোগ্যতার অযোগ্য ইতিহাস বুকে নিয়ে
চায়ের কাপের অপেক্ষায় থাকে
খবরের কাগজ। ডুকরে কেঁদে ওঠে সে
মানুষের মৃত চোখেরা দেখে যায়
তার চোখের জল। ভুলে যায় তা মুছে দিতে;
কাপের চা কাপেই থাকে
চোখের জল চোখেই।
আজকের খবর বাসী হয় কাল
নতুন খবরের নিচে চাপা প’ড়ে
হারিয়ে যায় কালের কৃষ্ণগহ্বরে।
বেঁচে থাকায় দোষ নেই
অভিনয়টাই ঝামেলার।

আসক্তির হিসাব বড়ই জটিল
স্তন আর নিতম্ব দুলিয়ে
অশ্লীল নেচে যায় বেশরম নাচনেওয়ালি।
নৃত্যকলার অনুপস্থিতিতে কপালে জোটেনা
নৃত্যশিল্পীর খেতাব। দর্শকরা ঘুমে অচেতন
সুযোগ বুঝে রক্তে চুমুক লাগায়
ব্যক্তিত্বহীন ছারপোকা আর মশাদের দল,
জীবনের নদীতে অনন্ত ভাটা
জোয়ারের দেখা মেলা দায়।
বেঁচে থাকায় দোষ নেই
অভিনয়টাই ঝামেলার।

গলা ফাটিয়ে স্বপ্নের ফেরী করে বেড়ায়
দৈত্যাকৃতির গলাবাজ। শ্রোতাদের কানের পর্দা
ফেটেছে আগেই, শোনার ভান শুধু;
আকাঙ্ক্ষা নেই সুরহীন সংগীত শোনার
উৎসাহের কমতি নেই তবু কর্কশ কণ্ঠের,
রাগ-রাগিনী লজ্জায় মৃত।
জলসাঘরের দরজার গোপন তালা
ঝুলতে থাকে অনন্তকাল ;
বেরোবার পথ নেই
অন্ধকারে চক্কোর খায় জ্বরাক্রান্ত জীবন।
বেঁচে থাকায় দোষ নেই
অভিনয়টাই ঝামেলার।

বিডিপি/এমএম

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কবিতা

কবিতা: ছুটে এসে মিশে যাও

Avatar photo

Published

on

ছুটে এসে মিশে যাও
প্রকাশ চন্দ্র রায়

ক্যামন করে তোমার হস্তগত হলাম,
ক্যামন করে পৌঁছলাম এসে যৌবনের ঘাটে,
কোনদিকে পালালো বাল্য-কৈশোর আমার
জানি না তা! জানি না সঠিকভাবে!
যৌবনের ডালে ফুল ফুটেছে,
বসন্ত এসে ভর করেছে দেহ-মনে;
ক্ষণে ক্ষণে এখন মনে জাগে কেবল
তোমাকে কাছে পাওয়ার অতল আকুলতা।
সুস্মিতা! সামান্য ক্ষণের ছোঁয়া-ছুঁয়িতে
আর অনধিক কালের আলিঙ্গনে,
তুমি আমাকে উন্মাদিত এক প্রেমিক বানালে।
প্রাসঙ্গিক ভাবনার ব্যূহ ভেদ করে
তোমার ভাবনারা’ই এখন উঁকিঝুঁকি মারে
অপ্রাসঙ্গিকভাবে মস্তিস্কের মণিকোটরে।
এভাবে কতদিন!কতক্ষণ আর সহ্যের সীমানায়
পুষে রাখা যায় অম্লমধুর স্বাদের অমলিন যাতনাকে।
যমযাতনা’র অবসান কল্পে তুমি আসছ না কেন ছুটে?
আমি তো বুক পেতে রেখেছিই অহর্নিশি
তোমাকে আপনার করে রেখে দেবার ছলে।
কেন যে হারালো বাল্য-কৈশোর!
কেন যে আসলো উন্মত্ত যৌবন!
কেন যে তোমার সান্নিধ্য-সুখ পেলাম যৌবনের ঘাটে!
এখন আর দিন কাটে না-রাত কাটে না!
অচেনা আতঙ্কে বয়ে চলছে অস্থির সময়।
সুস্মিতা!তুমি ছুটে এসে মিশে যাও আমার আত্মায়-সত্ত্বায়;
নইলে আমার প্রাণ যায় প্রাণ যায়।

রচনাকাল- ৭ আগস্ট ২০২১, শনিবার।

Continue Reading

কবিতা

পান্ডুলিপির কবিতা- সাইফ সাত্তার

Avatar photo

Published

on

পান্ডুলিপির কবিতা
সাইফ সাত্তার

আসুন, এই চক্রান্তকারী সন্ধ্যায় চায়ের লিকারের মতো
ব্যক্তিগত ব্যার্থতায় চুমুক দিই।

সিগ্রেটে আগুন দেবার আগে মনে করার চেষ্টা করি-
আমাদের প্রত্যেকের ভিতরে অসহ্য অগ্নিঝড়।
আর রাতেই আমরা ঘরে ফিরবো।

দরজায় অপেক্ষমান অন্ধকারের মুখোশ পরে আমাদের স্ত্রীগণ জেগে থাকবেন-
আগামী বছরের প্রতিশ্রুতি পূরণের আশায় এক সাথে ঘুমিয়ে পড়বেন দুজন।

শ্রবনবিদ্ধ শব্দের ভেতর তবুও জেগে থেকে আমি (যেহেতু পুরুষ)
সেহেতু ঘরের মধ্যে আমিই দন্ডিত বৃক্ষ।
আমার সক্ষম ছায়ায় বেড়ে উঠবে আমার ভবিষ্যত

রমনীময় হয়ে উঠবে আগামী বছর।
একটা সূক্ষ্ণ লিলেনের জামা
বাবুটার স্কুলের টিফিনে একটা অরেঞ্জকেক
একজোড়া সিটি গোল্ডের রিং
বাতাসে আমাদের স্ত্রীগণের হাসির মতো দুলে উঠবে।

আমি জানি, এই দেশ তাঁর সর্বস্হটুকু হারিয়ে ফেলেছে রাজনীতির মধ্যে-
রাষ্ট্রযন্ত্রের মধ্যে।

প্রথম প্রেমিকের জন্য স্ত্রীরা যা হারিয়েছে
তা তাদের অলৌকিক বিস্ময়।

আসুন, এসব ব্যক্তিগত আগামী বছরগুলো
আমরা বিনিময় করি।
মনেরাখি, ফার্মের ডিমের মতো পৃথিবীটা গোলাকার।
আর সেখানে কমলালেবুর সংজ্ঞাটা
প্রমানিত রাজনীতির মতো!

বিডিপত্র/সাহিত্য

Continue Reading

কবিতা

স্বীকারোক্তি -সঞ্জয় কুমার মল্লিক।

Avatar photo

Published

on

স্বীকারোক্তি
সঞ্জয় কুমার মল্লিক।

আমি আামাতে বিস্তৃত
সহজ সরল এক আবেগী
দায়িত্বের দ্বারে দাড়ানো
রামের ভ্রাতার মতন।

আমি হৃদয় উজাড় করে
সবটুকু দিতে পারা এক
ভালবাসার সৈনিক,
আমি মরুর বালুকারাশি,
সূর্যের তাপে উত্তপ্ত
হতে পারি দৈনিক।

আমি আমার মাঝে
জ্বলতে জানি,
অন্যেরে নিভাই,
আমি পথ ভুলতে জানি –
অন্যেরে পথ দেখাই।

আমি পিতা আমি পুত্র,
আমি প্রেমিকজন
আমি ভ্রাতা বন্ধু সজন ,
আমি সুহৃদ দৌহিত্র।

আমি কেঁদে হাসাতে জানি
আমি দিতে জানি প্রেম,
ভালবাসা স্নেহ মায়য়া মমতা,
করতে পারি লেনদেন।

আমি জ্বলতে জানি
জ্বালতে হৃদয়ে আলো,
আমি আমাতে মহান
সৃষ্টিকর্তার দান –
আমি সবারই চাই ভালো।

বিডিপত্র/সাহিত্য

Continue Reading