পোশাকশিল্প নিয়ে আন্তর্জাতিক যড়যন্ত্র চলছে : শিল্পমন্ত্রী
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প নিয়ে আন্তর্জাতিক যড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
তিনি বলেন, ‘পোশাক শিল্পে আমাদের রফতানি প্রবৃদ্ধি ঠেকাতে প্রতিযোগিরা তৎপর রয়েছে। রানা প্লাজা ধ্বস ও তাজরীন ফ্যাশনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর এ বিষয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের তৎপরতা আরো বেড়েছে। বহির্বিশ্বে স্বার্থান্বেষী মহল বাংলাদেশের পোশাক শিল্প নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণাও চালাচ্ছে।’ তবে এর জন্য বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প থেমে থাকেনি বরং এখাতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস শিল্পের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ‘টেক্সটেক বাংলাদেশ ২০১৫’ এর উদ্বোধনী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিন দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে সেমস্-গ্লোবাল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। এতে অন্যাণ্যের মধ্যে বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার অসীম কে. মহাজন, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশেনর (এফবিসিসিআই) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সেমস্-গ্লোবাল এর এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট ও গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেহরুন এন ইসলাম বক্তব্য রাখেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, রানা প্লাজা ধ্বস ও তাজরীন ফ্যাশনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, এশিয়া ও অষ্ট্রেলিয়ার ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর দু’টি সংগঠন এ্যাকর্ড এবং এ্যালায়েন্স বাংলাদেশ থেকে পোশাক কেনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন শর্তারোপ করেছিল। তারা গার্মেন্ট শিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নয়ন, শ্রমিকদের নিরাপত্তা জোরদার, ন্যূনতম মজুরী নির্ধারণ, শিল্প কারখানা পরিদর্শন ও মনিটরিং জোরদারসহ বিভিন্ন ইস্যু জুড়ে দিয়েছিল। এসব শর্তের অধিকাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, পোশাক শিল্পে মূল্য সংযোজন, প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও এক্সেসরিজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্য সরকার কাজ করছে। এমন প্রেক্ষাপটে এ ধরনের প্রদর্শনীর আয়োজন সময়োপযোগী উদ্যোগ। এটি বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক শিল্পখাতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি স্থানান্তরে সহায়তা করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, কর্মসংস্থান তৈরি ও শিল্পের প্রসারে সরকার সব খাতে শিল্পবান্ধব নীতি-কৌশল গ্রহণ করেছে।এর ফলে ব্যক্তিখাতে শিল্পায়নের প্রসার দ্রুত ঘটছে।
টেক্সটেক প্রদর্শনী বাংলাদেশের উদীয়মান তৈরি পোশাক শিল্পখাতে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগসহ যৌথ বিনিয়োগের নতুন ক্ষেত্র উন্মোচন করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার অসীম কে. মহাজন বাংলাদেশের পোশাক শিল্প পণ্য এবং এ খাতের রফতানি প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পখাতে যেমন ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে, পাশাপাশি চ্যালেঞ্চও রয়ে গেছে। এই চ্যালেঞ্চ মোকাবেলার বড় বাঁধা ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহার। তিনি পোশাক শিল্পের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সুদহার হ্রাস এবং অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রদর্শনীতে ১৫টি দেশ থেকে প্রায় ৬০০ প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। এতে বিভিন্ন প্রযুক্তি যন্ত্রপাতি এবং যন্ত্রাংশ প্রদর্শিত হচ্ছে।
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর