মোহাম্মদপুর বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড- এক শিশু নিহত, ভস্মীভুত ৫০০ ঘর
স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বস্তিতে আগুনে দগ্ধ হয়ে চার বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গত কাল বেলা পৌনে ১টার দিকে কাটাসুরের পুলপাড়ের ওই বস্তিতে পুড়ে যাওয়া ঘরের ধ্বংসস্তূপ থেকে ফাতেমা নামে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়
এর আগে সকাল ৮টা ২৮ মিনিটে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে মোহাম্মদপুর, পলাশী, লালবাগ ও কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকক্ষ মিলিয়ে ফায়ার সার্ভিসের মোট ১০ ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আগুন লাগার সোয়া এক ঘণ্টার মাথায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান।
আগুনে নিহত ফাতেমা বস্তির বাসিন্দা অটোরিকশাচালক জয়নালের মেয়ে। তার মা নুরুন্নাহার গৃহিণী। সকালে ছোট মেয়েকে ঘরে রেখে নুরুন্নাহার বড় মেয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী জয়নাবকে পাশের জাফরাবাদ সরকারি স্কুলে নিয়ে যান বলে নিহতের ফুপু মুন্নী জানিয়েছেন। পরে নুরুন্নাহার বস্তিতে ফিরে ঘরে আগুন জ্বলতে দেখেন। আশপাশে খোঁজাখুঁজি করে মেয়েকে আর পাননি। পরে তার মেয়ের লাশ পাওয়া যায়।
এছাড়া, আগুনে পুড়ে গেছে বস্তির অন্তত ৪০টি দোকান ও শতাধিক ঘর। স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল হক জানান, সকালে প্রতিবেশী সিদ্দিকের বাড়ির আশপাশ থেকে আগুন-আগুন বলে চিৎকার শুনতে পাই। আমরা ছুটোছুটি করে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু ঘূর্ণি বাতাস বেশি থাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনাস্থল থেকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বস্তির পূর্ব পার্শ্বের ঘরগুলো বেশি আগুনে পুড়েছে। এছাড়া, আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পশ্চিম পার্শ্বের ঘরগুলোও। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, পুলপাড় বস্তিতে অন্তত ৫০০ ঘর রয়েছে। ওই বস্তিতে ১৯টি বাড়িতে ৫৫১টি পরিবার বাস করত বলে মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ স¤পাদ হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন। আগুন লাগার কারণ স¤পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা।
সরকারী সহায়তা: এদিকে কাটাসুর এলাকার পুলপাড় বস্তিতে লাগা আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সরকার পুনর্বাসিত করবে বলে জানিয়েছেন সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ স¤পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, দুই ধরনের পুনর্বাসনের কথা চিন্তা করা হচ্ছে। একটি আপদকালীন ও অপরটি স্থায়ী পুনর্বাসন। পরিবারগুলো যেন শীতে কষ্ট না পায় সেজন্য তাদের আপাতত আপদকালীন পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে সরকার। স্থায়ী পুনর্বাসনের বিষয়ে পরে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আগুন লাগার কারণ বিষয়ে তিনি বলেন, কীভাবে আগুন লাগল, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়াও ঢাকা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ইকরামুল হক ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারকে প্রাথমিকভাবে ২০ কেজি চাল ও একটি করে কম্বল দেওয়ার কথা বলেছেন।