Connect with us

বিশেষ নিবন্ধ

অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়তে হলে ন্যায়ের দণ্ড ধারণ করতে হবে -হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম

Published

on

পাবনা শহরের রফিকুল ইসলাম পৌর মিলনায়তন মুক্তমঞ্চে গতকাল হেযবুত তওহীদ আয়োজিত জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে ভাষণ দান করেন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। তাঁর ভাষণের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

‘‘আজ এমন একটা সময়ে এসে আমরা এই সমাবেশ করছি যে সময়টি সম্পর্কে সচেতন থাকা আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য। সময়জ্ঞান খুব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। রোদ দেখে, সূর্য দেখে, পরিবেশ দেখে বোঝা যাচ্ছে এখন দিন। তেমনি মানবজাতির সার্বিক অবস্থা দেখে, পরিস্থিতি দেখে বুঝতে হবে সময়টা কেমন। মানবজাতির প্রথম থেকে বর্তমান পর্যন্ত সবচাইতে কঠিন সঙ্কটকাল চলছে এখন। কীভাবে, সেটাই বুঝতে হবে আমাদেরকে, উপলব্ধি করতে হবে। আমার কোনো বক্তব্যই গতানুগতিক কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য নয়। কেননা আমরা হেযবুত তওহীদ কোনো রাজনীতি করি না। আমি চেষ্টা করব মানবজাতির সঙ্কট, মুসলমান নামক জাতির সঙ্কট ও আমাদের দেশের সঙ্কট তুলে ধরে তা থেকে উত্তরণের উপায় তুলে ধরতে। আপনাদের প্রতি অনুরোধ- আমার কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনবেন। তারপর সিদ্ধান্ত নিবেন যা মনে হয়। মনের উপর তো জোর চলে না।
আমাদেরকে সমগ্র মানবজাতি নিয়ে ভাবতে হবে। সুরা নিসায় আল্লাহ বলেছেন, তোমাদেরকে একজন ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছি। অর্থাৎ মানুষমাত্রই একে অপরের ভাই। আমেরিকায় যে ব্যক্তিটি মারা যাচ্ছে সে যেমন আমার ভাই, ভারতে মারা গেলেও আমার ভাই, মধ্যপ্রাচ্যে মারা গেলেও আমার ভাই। ভাইয়ের বিপদে ভাইকে এগিয়ে যেতে হবে। ভাইয়ের দুর্দশা নিয়ে ভাইকে ভাবতে হবে। পৃথিবীময় আজকে যে যুদ্ধ, রক্তপাত, হানাহানি, মারামারি, দুর্ভিক্ষ চলছে তা দেখে কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ বসে থাকতে পারে না। কাজেই ভাবতে হবে বিশ্ব নিয়ে, মানবজাতি নিয়ে। আপনারা ভাবনাহীনভাবে কোনো কর্ম করবেন না। দেখার জন্য আল্লাহ দৃষ্টিশক্তি দিয়েছেন, কান দিয়েছেন শোনার জন্য, হৃদয় দিয়েছেন উপলব্ধি করার জন্য, ব্রেইন দেওয়া হয়েছে কোনটা সঠিক কোনটা বেঠিক তা বিচার করার জন্য। এজন্য হাশরের দিনে মানুষের দৃষ্টিশক্তি, শ্রবণশক্তি, চিন্তাশক্তি ইত্যাদি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। যদি এইসব নেয়ামত পাওয়ার পরও এর সঠিক ব্যবহার করতে না পারেন তাহলে পশুর সাথে মানুষের পার্থক্য রইল কোথায়? আজকে সাতশ’ কোটি মানুষ দুনিয়াময় ছড়িয়ে আছে, তাদেরকে দেখতে হবে পৃথিবীময় কী হচ্ছে, শুনতে হবে সারা পৃথিবীর মানুষের কণ্ঠস্বর, উপলব্ধি করতে হবে সারা পৃথিবীর অবস্থা। কারণ পাশের বাড়িতে আগুন লাগলে নিজের বাড়িও নিরাপদ থাকে না। আমি আশা করব আমি কোনো মৃত মানুষের সামনে কথা বলছি না। আমি আশা করব কবরস্থানে বসে কোর’আন পড়ছি না। আমি কথা বলছি জীবন্ত মানুষের সামনে।
আপনারা নিশ্চয়ই জানেন এই মুহূর্তে ১৬ হাজার অ্যাটম বোম তৈরি করে রাখা হয়েছে। আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপনাস্ত্র তাক করে রাখা হয়েছে বিভিন্ন রাষ্ট্রের দিকে। কিছুদিন আগে সিরিয়ায় একটি রাসায়নিক অস্ত্রের হামলায় ২৭টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সা¤্রাজ্যবাদী পরাশক্তিগুলো প্রতিনিয়ত তাদের সামরিক খাতে ব্যয় বাড়াচ্ছে। এই পৃথিবীতে বর্তমানে সমস্ত শক্তির মালিক ঐ পরাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলো। সমস্ত অর্থের মালিক তাদেরই গুটিকয় মানুষ। এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে যে, এই মুহূর্তে বিশ্বের চারশ’ কোটি দরিদ্র মানুষের সম্পদ একত্র করলে যতখানি হয়, ততখানি সম্পদ মাত্র আটজনের হাতে জড় হয়েছে। আর অন্যদিকে কোটি কোটি মানুষ দুর্ভিক্ষে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। এই হচ্ছে বিশ্বের পরিস্থিতি।
অন্যদিকে আমার হতভাগা, দুর্ভাগা মুসলিম জাতির অবস্থা কী সেটাও পৃথিবীর দিকে তাকালেই বোঝা যায়। এই জাতির ব্যাপারে আল্লাহ কোর’আনে বলেছেন- ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, তোমাদের উত্থান ঘটানো হয়েছে, তোমরা মানবজাতিকে সৎ কাজের আদেশ করবে, অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখবে।’ কিন্তু আজ আমরা গোলাম। আমাদের লক্ষ লক্ষ আলেম আছে, লক্ষ লক্ষ কোর’আনের হাফেজ আছে, লক্ষ লক্ষ মুফতি আছে, লক্ষ লক্ষ মোফাসসির ও মোহাদ্দীস আছে, কিন্তু আমরা ফিলিস্তিনে মার খাই, আমরা কাশ্মীরে মার খাই, আমরা চীনে মার খাই, আমরা বসনিয়ায় নির্যাতিত হই। আমরা আমাদের জন্মভুমি রক্ষা করতে পারি না। আমাদের ইরাক দখল করে নিল, আমাদের আফগানিস্তান ধ্বংস করে নিল, আমাদের সিরিয়া ধ্বংস করে দিল। আর এখন আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
১৯৪৭ সালে দেশবিভাগ হয়ে পাকিস্তান পেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম ইসলাম পাব। কিন্তু পেয়েছি কেবল বঞ্চনা। ফলে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে দেশ স্বাধীন করেছি। কিন্তু স্বাধীনতার পর চার দশক পেরিয়ে গেলেও আমরা একটি ঐক্যবদ্ধ জাতিসত্তা গঠন করতে পারি নাই। একদিকে পাশ্চাত্যের তৈরি বিভিন্ন বাদ-মতবাদ, রাজনীতির নামে দলাদলি করে নিজেরা নিজেরা মারামারি ও হানাহানি করে ঐক্য নষ্ট হয়েছে, অন্যদিকে ধর্মের নামে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন দল-উপদল, ফেরকা-মাজহাব ইত্যাদি। মানুষের ধর্মবিশ্বাসকে ভুল খাতে প্রবাহিত করা হয়েছে বারবার। কেউ বলেছে আমাকে টাকা দাও, আমি জান্নাতের ওসিলা হব। যেন জান্নাত তার বাপদাদার সম্পত্তি। কেউ বলেছে অমুক মার্কায় ভোট দাও জান্নাত পাবা। আবার কাউকে আল্লাহ, রসুল ও ইসলামের কথা বলে উত্তেজিত করে বোমাবাজী, সন্ত্রাসীপনায় লিপ্ত করা হয়েছে। মানুষ আল্লাহকে পাওয়ার জন্য জাতিবিনাশী কর্মকা-ে ভুল পথে পা বাড়িয়েছে। তারা আল্লাহকে পায় নাই, রসুলকে পায় নাই, মানবতার উপকার হয় নাই, মাঝখান থেকে দুইটি কাজ হয়েছে। মুসলমি দেশগুলো ধ্বংস হয়েছে আর ইসলাম কলঙ্কিত হয়েছে। এই মুহুর্তে ছয় কোটি মানুষ উদ্বাস্তু তারা মুসলমান। ইউরোপের রাস্তায় ভিক্ষা করে বেড়াচ্ছে মুসলমান। সমুদ্রে ভেসে যাচ্ছে মুসলমানের লাশ। আর আজ যেই মাটিতে আমি জন্মগ্রহণ করেছি, যেই মাটিতে আমার পূর্বপুরুষের অস্থিমজ্জা মিশে আছে, যেখানে ফসল ফলিয়ে আমরা ক্ষুধা নিবারণ করি সেই ভূ-খ-টি নিয়েও ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
এতদিন যা ছিল বিদেশের খবর আজ তা আমাদের দেশের খবর
আমরা এতদিন আমাদের পত্র-পত্রিকায়, বই-পুস্তকে, ডকুমেন্টারিতে, আলোচনা সভায়, বক্তব্যে বারবার এই কথাটি বলে এসেছি যে, আমাদের দেশকে টার্গেট করা হয়েছে। সা¤্রাজ্যবাদীরা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। অন্যান্য মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর মতই এখানেও তারা জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চায়। কিন্তু আমাদের সেই সতর্কবার্তা কয়জন উপলব্ধি করতে পেরেছেন আমরা জানি না। অতঃপর আজ আমরা সবাই স্বচক্ষেই দেখতে পাচ্ছি বাস্তবতা। এখন আর যুক্তি-তর্ক করে কোনো কিছু প্রমাণের দরকার নাই, ভবিষ্যদ্বাণীরও দরকার নাই। চারদিন ধরে যুদ্ধ হয়েছে সিলেটে। সেখানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাসহ ছয়জন জীবন দিয়েছেন। শত শত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে চারদিন ধরে লড়াই করতে হয়েছে। অর্থাৎ আগুনের তাপ আমাদের শরীরেও লাগতে শুরু করেছে। যে সঙ্কট আপতিত হয়েছে আমাদের দেশের মাটিতে, সেই একই সঙ্কট পৃথিবীর বিভিন্ন মুসলিমপ্রধান দেশে কী পরিণতি ডেকে এনেছে তা তো সবারই জানা। কাজেই হে বাংলার মানুষ, তোমরা সতর্ক থাকো, সজাগ থাকো, ইরাক-সিরিয়ার মত পরিস্থিতি যেন আমাদের এখানে না হয়।
মনে রাখতে হবে এই সঙ্কট কেবল সরকারের সঙ্কট নয়। এটা জাতির সঙ্কট। এই সঙ্কটকে উপলব্ধি করতে হবে স্পষ্টভাবে। আমরা কেবল উপস্থাপন করতে পারি, সিদ্ধান্ত আপনারাই নিবেন। আমরা কেবল বলতে পারি ডান দিকে যান, বাম দিকে যাবেন না। ডান দিকে নিরাপদ, বাম দিকে অশান্তি। তারপর কোনদিকে যাবেন সেটা আপনারাই নির্বাচন করবেন। হেযবুত তওহীদ শুধু গত দুই বছরেই অন্ততপক্ষে ৮০ হাজার আলোচনা সভা, জনসভা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠান ইত্যাদি আয়োজন করেছে। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, আলেম ওলামা, সাধারণ মানুষ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে। তাতে কী ফল হচ্ছে তার নমুনাস্বরূপ গতকালের একটি পত্রিকার রিপোর্ট পড়ে শোনাই। প্রতিবেদনটিতে পুলিশের সদর দফতরের এআইজি মো. মনিরুজ্জামান বলেছেন, ‘‘জঙ্গিদের কর্মকা- নিয়ে প্রথম দিকে ব্যাপক প্রচারণা না থাকার কারণেই সাধারণ মানুষ হয়তো সহযোগিতা করতে পারেনি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিভিন্ন ধর্মীয় সামাজিক সংগঠনের জঙ্গি বিরোধী প্রচারণার কারণে সাধারণ মানুষ এগিয়ে আসতে শুরু করেছে।’’ সেই ধর্মীয় সামাজিক সংগঠন যে হেযবুত তওহীদ সেটা বলেন নাই দেখে আমাদের কোনো অভিযোগ নাই। কারণ রাজধানীতে হাজার হাজার মানুষের সামনে বলেছিলাম, জাতির প্রয়োজনে আমরা এই আদর্শিক লড়াই চালাচ্ছি। আমাদের বক্তব্য যদি যৌক্তিক মনে হয় তাহলে সেটা প্রচার করুন, নাম বলার দরকার নাই। আমরা নিঃস্বার্থভাবে কাজ করি। যাই হোক বোঝা যাচ্ছে যে, আমাদের এই প্রচেষ্টা বৃথা যাচ্ছে না, প্রচারণায় ফল হচ্ছে। আর সেটা আইনÑশৃঙ্খলা বাহিনীও স্বীকার করছে।
অন্যান্য সন্ত্রাসবাদ থেকে জঙ্গিবাদ কেন মুসলিমদের জন্য বিপদজনক?
একটি বিষয়ে আপনাদের পরিষ্কার ধারণা থাকা দরকার যে, অন্যান্য সন্ত্রাসের চাইতে জঙ্গিবাদ কেন বেশি বিপদজনক। আদর্শের ভিত্তিতে এমন উগ্রবাদী কর্মকা- কিন্তু অতীতেও ঘটতে দেখেছি। ভারতের কয়েকটি রাজ্যে মাওবাদী গেরিলারা অনেক বছর ধরে সশস্ত্র হামলা, পাল্টা হামলা ইত্যাদি চালিয়ে আসছে। আমাদের এখানেও স্বাধীনতার পরে বামপন্থী কিছু দলের চরমপন্থী বা সন্ত্রাসবাদী কর্মকা- আমরা দেখেছি। অর্থাৎ কোনো আদর্শকে প্রতিষ্ঠার জন্য সন্ত্রাসে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা কেবল এটাই প্রথম নয়। কিন্তু এই জঙ্গিবাদ অন্য যে কোনো কিছুর চাইতে বেশি ভয়াবহ ও বিপদজনক হবার কারণ- জঙ্গিবাদের প্যাটার্ন অন্যান্য সকল সন্ত্রাসবাদের থেকে আলাদা। একে ইসলাম ধর্মের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীতে ১৬০ কোটি মানুষ মুসলিম। তারা আল্লাহ-রসুলকে নিজেদের প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসে। কোর’আন-হাদীসের হুকুম-আহকাম মেনে চলাকে তারা ঈমানী দায়িত্ব মনে করে। কিন্তু এই ধর্মবিশ্বাসী ঈমানদার মানুষদেরকে কোর’আন-হাদীসের বিকৃত ব্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গিবাদের দীক্ষা দেওয়া হচ্ছে। কাজেই এটাকে অন্য যে কোনো সন্ত্রাস-সহিংসতার মত মনে করলে হবে না।
আমাদের এমামুয্যামান ২০০৯ সালে লিখিতভাবে সরকারকে প্রস্তাব দিয়ে বলেছিলেন, বিশ্বের পরাশক্তিগুলো ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন অর্থ ব্যয় করেও, আধুনিক সব যন্ত্রপাতি, প্রযুক্তি ব্যবহার করেও, অপ্রতিরোধ্য ও সুপ্রশিক্ষিত সব বাহিনী গঠন করেও এই জঙ্গিবাদকে নির্মূল করতে পারে নাই। কয়েক যুগ ধরে চেষ্টা চালিয়ে এসে এখন তারাই বলছে, জঙ্গিবাদ দিন দিন আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাজেই কেবল শক্তি প্রয়োগ করে জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে চাইলে আমরাও ব্যর্থ হব। আমাদেরকে জঙ্গিবাদের মোকাবেলা করতে হবে আদর্শিকভাবে। কিন্তু এমামুয্যামানের এই প্রস্তাবনাটি, এই মহামূল্যবান কথাগুলোর গুরুত্ব অনেকেই তখন বুঝতে পারেন নি। আজ আমাদের সরকারপ্রধান যখন সংসদে দাঁড়িয়ে এই কথাটিই বলেন তখন আমরা আনন্দিত হই এই ভেবে যে, সরকার দেরীতে হলেও বিষয়টি উপলব্ধি করতে শুরু করেছে। আমার কথা তো নিবেন না, কারণ আমি সাধারণ ঘরের সন্তান। আপনাদেরকে প্রথম আলোর একটি রিপোর্ট পড়ে শোনাই। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘ সরকার জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। কিন্তু কেবল অস্ত্র দিয়ে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা যাবে না। সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে মানুষের মনোজগতে পরিবর্তন আনতে হবে।’’ এদিকে গত দুইদিন আগে মক্কা-মদীনার ইমামদেরকে নিয়ে আলেম সম্মেলন করা হলো ঢাকায়। সেখানেও বারবার বলা হয়েছে, ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা তুলে ধরার কথা। এই সম্মেলনে সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে লাভবান হয় অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। তারা অস্ত্র তৈরি করে, বিক্রি করে। সেই অস্ত্রে রঞ্জিত হয় মুসলমানের রক্ত। মুসলমানের রক্তের বিনিময়ে লাভবান হয় অস্ত্র ব্যবসায়ীরা।’’
কিন্তু আমার কথা হচ্ছে- এইটুকুই যথেষ্ট নয়। সঙ্কটটা অনেক ভয়াবহ, তাই সাধারণ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়ে এই সঙ্কটের সমাধান হবে না। এখন সবাইকে সম্মিলিতভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হবে। আমাদের দেশের গোয়েন্দা প্রধান, সামরিক বিশেষজ্ঞগণ, সমাজবিজ্ঞানী, নিরাপত্তাবিশ্লেষক সকলেই বলছেন, শুধু ট্যাকটিক্যালি বা পুলিশি কায়দায় বুলেট বোমা দিয়ে জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। একে মোকাবেলা করতে হলে একটি পাল্টা আদর্শ বা কাউন্টার ন্যারেটিভ লাগবে যা দিয়ে জঙ্গিবাদীদেরকে ডি-র‌্যাডিকালাইজ, ডি-মোটিভেইট করতে হবে, তাদেরকে সমাজের মূল ধারার সাথে রি-ইন্টিগ্রেট করতে হবে। পরিভাষা যাই ব্যবহার করা হোক, আমরা ইসলামের পরিভাষায় এটাকেই বলছি, জনগণের সামনে ইসলামের পূর্ণ রূপ, কমপ্রিহেনসিভ কনসেপ্ট বা আকিদা তুলে ধরতে হবে। ইসলাম সম্পর্কে সঠিক আকীদা অর্থাৎ সামগ্রিক ধারণা পেলে তারা বুঝতে পারবে তাদের ভুলটা কোথায় হচ্ছে, কেন তাদের পথ জান্নাতের পথ নয়। যেমন ধরুন, আমার হাতে এটি একটি পানির গ্লাস। এটা কী উদ্দেশ্যে বানানো হয়েছে? পানি খাবার জন্য। এটা যদি আপনি জানেন তাহলে গ্লাস সম্পর্কে আপনার আকীদা সঠিক হলো। ফলে গ্লাসের ব্যবহারও সঠিক হবে। কিন্তু যদি কেউ আপনাকে বোঝাতে সক্ষম হয় যে, এইটা একটা অস্ত্র। এটা দিয়ে মানুষের মাথায় আঘাত করতে হয়। তাহলে আপনার আকীদা ভুল হয়ে গেল। এখন আপনি এই গ্লাস দিয়ে আর পানি খাবেন না, মানুষের মাথায় আঘাত করে বেড়াবেন অর্থাৎ আমল ভুল হবে, গ্লাসের অপব্যবহার হবে। এই কাজটাই করা হচ্ছে। ইসলাম সম্পর্কে সামগ্রিক ধারণা না থাকায় ইসলামের নাম করে মানুষকে দিয়ে যা ইচ্ছা তা করানো যাচ্ছে। হেযবুত তওহীদ মানুষকে ইসলামের প্রকৃত আকীদা শিক্ষা দিচ্ছে।
আল্লাহ একজন, আখেরী নবী একজন, তিনি কিতাব এনেছেন একটি, তিনি যে জাতি তৈয়ার করে গেলেন সেটাও এক অখ- জাতি, সেই জাতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যও ছিল একটি। অথচ আজ ইসলামের রূপ কয়টা হয়েছে? মুসলিম বিশ্বের দিকে তাকিয়ে দেখেন, লক্ষ লক্ষ শুধু পীরই আছে, একেক পীরের একেক তরিকা, হাজার হাজার রাজনৈতিক দল, তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচিও আলাদা। সন্ত্রাসবাদী দল আছে, তাদেরও একেক দলের মতামত, একেক ভাগের কর্মপন্থা একেকরকম। এত মত, এত পথ কোথা থেকে এল? আল্লাহ মানুষকে মাত্র দুইভাগ করেছেন। মু’মিন ও কাফের। তাদের পরিণতিও দুইটি। জান্নাত ও জাহান্নাম। সুরা ফাতিহাতে দুইটি পথের কথা বলা আছে। একটা হচ্ছে, সেরাতুল মোস্তাকীম অর্থাৎ সোজা পথ, আরেকটা পথ আছে, আমরা পড়ি ‘গায়রিল মাকদুবি আলাইহিম ওয়াল-আদ-দোয়াল্লীন’, অর্থাৎ আরেকটা পথ হচ্ছে দালালাত। এই দুইটি পথের ভিত্তিতে মানুষের অবস্থাও হবে দুইটি, যথা শান্তি ও অশান্তি। আর চূড়ান্ত ফলাফলও দুইটি- জান্নাত ও জাহান্নাম। এখন আপনি কোন পথে থাকবেন সেটা আপনার সিদ্ধান্ত। তাহলে বোঝা গেল জান্নাতে যাওয়ার, শান্তিতে থাকার পথ হাজারটা নয়, একটা। সেটা হচ্ছে হেদায়াহ, সেরাতুল মোস্তাকীম। সেই পথে যারা আছে একমাত্র তারাই হবে জান্নাতী, মো’মেন। প্রশ্ন হচ্ছে আমরা সেই পথের উপর আছি কিনা? যদি থাকি তাহলে আমার প্রশ্নের জবাব দিন – পৃথিবীতে এই জাতির আজ এই হাল কেন? জাতি আজ হালবিহীন নৌকার মত মাঝনদীতে ভেসে বেড়াচ্ছে কেন?
আজকে যারা এখান থেকে কোর’আনের একটি আয়াত, ওখান থেকে হাদীসের একটি বাণী বিক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরে নিজেদের জঙ্গিবাদী কর্মকা-কে সঠিক প্রমাণ করতে চাইছেন তাদেরকে আগে বুঝতে হবে ‘কোরআন কী’। কোর’আন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা দরকার সবার। আমরা জানি অন্য সমস্ত নবী-রসুলগণ এসেছেন নির্দিষ্ট স্থান-কাল-পাত্রের জন্য, কিন্তু আল্লাহ শেষ রসুলকে পাঠিয়েছেন সমস্ত মানবজাতির জন্য। তিনি মক্কায় এসে দেখলেন অন্যায়, অবিচার, দারিদ্র, যুদ্ধ, রক্তপাত, নারী নির্যাতন। তিনি দেখলেন, মানুষের চিন্তার অপব্যবহার, অন্ধত্ব। মানুষ মদ খেয়ে মাতাল হয়ে পড়ে থাকত। সুদ খেত। ব্যাভিচার করত। ধর্মের নামে চলত ধর্মব্যবসা। কিন্তু ঐসব দিকে তিনি কোনো মনোযোগ দিলেন না। তিনি আগে তাদেরকে একটি কথার উপর ঐক্যবদ্ধ করলেন- বলো, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। এই কথার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হও। তাহলেই তোমরা সফল হয়ে যাবে। এর অর্থ হচ্ছে আল্লাহর হুকুম ছাড়া কারো হুকুম মানব না। আল্লাহর হুকুম মানে হচ্ছে ন্যায় ও সত্য। যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় ও সত্যের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়াই কলেমা। এই কলেমায় আসার পর আপনার জীবন-সম্পদকে মানুষের কল্যাণে উৎসর্গ করবেন যখন তখন আপনি হবেন মো’মেন। একটি সময় আসল কিছু মানুষ কলেমার তাৎপর্য বুঝতে পারল। তারা রসুলের আহ্বান মেনে নিল। কলেমার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হলো। তারা একটি স্বতন্ত্র জাতিসত্তা গঠন করল। এখানে বুঝতে হবে একটি কথা যে, ব্যক্তি ও জাতি কিন্তু আলাদা ব্যাপার। যখন একটি জাতি গঠিত হলো কলেমার ভিত্তিতে এবং আল্লাহর রসুল সেই জাতির নেতা হলেন, তারপর স্বভাবতই সেই জাতির সদস্যদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, বিচারিক ইত্যাদি সকল সমস্যার সমাধান করার দায়িত্ব পড়ল বিশ্বনবীর উপর। এইবার জাতির সেই সমাধান দেওয়ার পালা এল। কেউ এসে বলল, ইয়া রসুলাল্লাহ বিয়ে করব কীভাবে। কেউ বলল, সম্পত্তির উত্তরাধিকার বণ্টন করব কীভাবে। কেউ বলল ব্যবসা-বাণিজ্য করব কীভাবে। কেউ বলল শত্রু এসেছে মোকাবেলা করব কীভাবে। কেউ বলল অমুক অপরাধ করেছে তার শাস্তি হবে কীভাবে। এইসব সমস্যার সমাধান আল্লাহ তাঁর রসুলের মাধ্যমে পাঠাতে লাগলেন। দেখা গেল জাতির সমষ্টিগত জীবনের এমন কোনো দিক বাদ রইল না যে ব্যাপারে আল্লাহর পক্ষ থেকে দিক-নির্দেশনা আসে নাই। যখন যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে আল্লাহ তার সমাধান দিয়েছেন আর রসুল তা বাস্তবায়িত করেছেন। এইভাবে রসুলের ২৩ বছরের নব্যুয়তি জিন্দেগীতে ঐ জাতিটিকে বিভিন্ন সময় আল্লাহ একের পর এক যে দিক-নির্দেশনা দান করেছেন সেটারই সঙ্কলিত রূপ হচ্ছে আজকের পবিত্র কোর’আন। আর সেই দিক-নির্দেশনার প্রয়োগ ঘটাতে গিয়ে আল্লাহর রসুল যা বলেছেন, যা করেছেন ও যা সমর্থন দিয়েছেন সেগুলোই হাদীস।
আজকে জঙ্গিবাদী কর্মকা- করে তাকে জিহাদ আখ্যা দিয়ে তার স্বপক্ষে কোর’আনের আয়াত দেখানো হয়। যেমন আল্লাহ কোর’আনে বলেছেন, ‘তোমাদের জন্য কেতাল ফরদ করে দেওয়া হলো (বাকারা ২১৬)।’ ‘কেতাল চালাও ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ না ফেতনা দূরীভূত হয়ে যায় (বাকারা ১৯৩)। আমি মো’মেনদের জান-মাল কিনে নিয়েছি জান্নাতের বিনিময়ে (তওবা ১১১)। আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব। কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাট জোড়ায় জোড়ায় (সুরা আনফাল ১২)। তোমরা বের হয়ে পড় স্বল্প বা প্রচুর সরঞ্জামের সাথে এবং জেহাদ কর আল্লাহর পথে নিজেদের মাল ও জান দিয়ে, এটি তোমাদের জন্যে অতি উত্তম, যদি তোমরা বুঝতে পার (সুরা তওবা ৪১)। এই ধরনের শত শত আয়াত কোর’আনে আছে। কারণ জিহাদ করা তো অন্যায় নয়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামের নামই জিহাদ। কিন্তু এই জঙ্গিবাদীদেরকে কে বলে দিবে যে, এই আয়াত কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর জন্য প্রযোজ্য নয়। এই আয়াতগুলো নাজেল হয়েছিল উম্মতে মোহাম্মদী জাতি গঠিত হবার পর। কাজেই একটি জাতি থাকবে, সেই জাতির নেতা থাকবে, সেই জাতির নেতা ঠিক করবেন কখন কোন পরিস্থিতিতে কোন আয়াতের কী প্রয়োগ ঘটবে। এই কাজের দায়িত্ব তোমাদেরকে কে দিয়েছে? কে তোমাদেরকে অথরিটি বানাল? মনে রাখতে হবে আল্লাহর রসুল কেবল একজন নবীই ছিলেন না, তিনি বিচারক ছিলেন, রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন, আবার সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলেন। সুতরাং তিনি একজন রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে রাষ্ট্রীয় বিষয়ে যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছেন সেই সুন্নাহ কেবল আরেকজন রাষ্ট্রনায়কই পালন করতে পারেন। তিনি একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনী পরিচালনা করেছেন, নিজেও যুদ্ধ করেছেন। তাঁর এই পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করার অধিকার রাখে অপর একজন সেনাবাহিনীর প্রধান। তিনি বিচারক হিসেবে অনেক অপরাধীকে দ- প্রদান করেছেন। এই কাজে সমগ্র জাতির সমর্থন পেয়েছেন। সেটাও কেবল আজকের বিচারকদের জন্যই উত্তম আদর্শ হতে পারে। যে কারো অধিকার থাকে না যাকে তাকে দ- দিয়ে দেওয়ার।
এখন আমাদের কার কী করণীয়?
সরকার:
বৃটিশ প্রবর্তিত শিক্ষা, সমাজ, রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে ভাবতে হবে। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করাটাই এখন মূল চ্যালেঞ্জ। আর তা করতে গিয়ে যে কোনো ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। সরকারকে সাদাকে সাদা কালোকে কালো বলতে হবে। ন্যায়ের দ- ধারণ করতে হবে। আল্লাহ বলেছেন, কেন এমন কথা বলো যা নিজেরা কর না। কাজেই বলতে হবে সেটাই যেটা আত্মায় বিশ্বাস করি। তবেই গণমানুষের আস্থা অর্জিত হবে এবং জঙ্গিরা যেমনভাবে সরকারকে কাফের সরকার, যালেম সরকার ইত্যাদি বলে প্রচার চালিয়ে জঙ্গিবাদের দীক্ষা দেয় সেটা সম্ভব হবে না।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী:
আমাদেরকে আত্মোৎসর্গকারী হতে হবে। পৃথিবীর যে সব দেশেই আত্মঘাতী হামলা হয়েছে কোথাও সেই দেশগুলোকে রক্ষা করা সম্ভব হয় নি। কারণ যারা নিজেদের উড়িয়ে দিয়ে শত্রুর ক্ষতি করতে চায় তাদেরকে জেল-ফাঁসির ভয় দেখিয়ে প্রতিহত করা সম্ভব না। তাদেরকে প্রতিহত করতে হলে প্রতিরোধকারীদেরকেও আত্মোৎসর্গকারী হতে হবে। তারা হবে দেশের মানুষের জীবন রক্ষার জন্য আত্মত্যাগী, মৃত্যুভয়হীন দুর্ধর্ষ যোদ্ধা। শহীদের তামান্না থাকতে হবে তাদের মধ্যেও।
সাধারণ মানুষ: প্রচলিত রাষ্ট্রব্যবস্থায় জনগণের অংশগ্রহণের জায়গা খুব সীমিত। কেবল ভোট প্রদান করা। কিন্তু দেশের সামনে কোনো বিরাট সংকট যখন এসে পড়ে, তখন তাদেরকে আর ব্যক্তিগত জীবনের প্রাত্যহিক কাজ নিয়ে পড়ে থাকলে চলে না, কারণ দেশ যদি আক্রান্ত হয়, দেশ যখন বিপন্ন হয় সবচেয়ে ক্ষতির শিকার হয় জনগণ। তখন আর সরকারের উপর সব দায় দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়ে বেখবর থাকার সুযোগ থাকে না। যারা সরকার চালাচ্ছেন তারা প্রতিনিয়ত বলে যাচ্ছেন, জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতাকে রুখে দিতে হবে। এই কথাগুলোকে আপনারা গুরুত্ব দিন। নয়তো সিরিয়া ইরাকের জনগণের যে দশা হয়েছে আপনাদেরও সেই একই দশাই হবে। সরকার আপনাদের বাঁচাতে পারবে না। কারণ এই ষড়যন্ত্র বৈশ্বিক ষড়যন্ত্র, যুদ্ধক্ষেত্র দখলের ষড়যন্ত্র, অস্ত্রব্যবসা তাদের অর্থনীতির চালিকা শক্তি।
আলেম: আপনারা ক্ষুদ্র স্বার্থে এই মহাসত্যের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন না। দেশ যদি যুদ্ধে আক্রান্ত হয় তাহলে আপনাদের এই ধর্মজীবিকা, ধর্মব্যবসা বেশিদিন থাকবে না। আজকের ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তানে মসজিদের ইমামতি কে করছে, কে ওয়াজ করছে, কে মাদ্রাসায় পড়ছে? সব তো বিরান, ধ্বংসস্তূপ হয়ে গেছে। আসুন দেশটাকে রক্ষা করি। আপনাদের কথা মানুষ বিশ্বাস করে, যা বলেন সেটাই ইসলাম বলে মনে করে। তাই আপনাদের এখন উচিত জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ইসলামের প্রকৃত সত্য তুলে ধরা, ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা মানুষের সামনে প্রকাশ করা। আর ধর্মব্যবসা থেকে মুক্ত হওয়া।’’

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *