Connect with us

দেশজুড়ে

অপরাধ সংবাদ ও বসকো চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উদ্যোগে ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা

Published

on

RAju Vai জেলা প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম:
বাংলাদেশ অনলাইন সাংবাদিক কল্যাণ ইউনিয়ন (বসকো) ও অপরাদ সংবাদ ডট কম চট্টগ্রাম বিভাগীয় শাখার উদ্যোগে ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ অনলাইন সাংবাদিক কল্যাণ ইউনিয়ন (বসকো) ও অপরাধ সংবাদ এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় শাখার প্রধান উপদেষ্টা ফজলুর রহমান এর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অনলাইন সাংবাদিক কল্যাণ ইউনিয়ন (বসকো) এর চেয়ারম্যান এবং অপরাধ সংবাদ ডট কম এর সম্মানিত চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রফিক। প্রধান অতিথি তার সংক্ষিপ্ত মূলবান বক্তব্যে বলেন, আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে অনলাইনের বিকল্প নেই। প্রাথমিকভাবে এদেশের মানুষ অনলাইন মিডিয়া সর্ম্পকে প্রকৃত জ্ঞান না রাখলেও এখন সময় তা পাল্টে দিয়েছে। সময় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে যাচ্ছে ভবিষ্যতে প্রতিটি নাগরিককে প্রযুক্তি নির্ভর হতে হবে।
অপরাধ সংবাদ চট্টগ্রাম প্রতিনিধি রুমেন চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দৈনিক বজ্রশক্তির চট্টগ্রাম ব্যুরো চিফ মো. রাজু আহমেদ বলেন, বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে সাংবাদিকদের আরও দায়িত্বশীলতার পরিচয় প্রদান করতে হবে বলে তিনি বলেন, গণমাধ্যমই হচ্ছে জনগণের কাছে তথ্য পৌঁছানোর আধুনিকতম পদ্ধতি। একটি জনগোষ্ঠীর জীবনধারা কোন দিকে ধাবিত হবে, মানুষ কী চিন্তা করবে, কী খাবে, কী পরবে সেটিও বর্তমান যুগে গণমাধ্যমের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। তাই জাতির উন্নয়নে সাংবাদিকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাদের এ অবস্থানের কারণে তারা যেমন জাতির কাছে দায়বদ্ধ, তেমনি নিজের বিবেক এবং স্রষ্টার নিকটও দায়বদ্ধ। সত্যনিষ্ঠ সংবাদকর্মীদের দ্বারা সঠিক পথে চালিত হয়ে জাতি উন্নতির শীর্ষে আরোহণ করতে পারে, আবার হলুদ সাংবাদিকদের দ্বারা ভুল পথে চালিতে হয়ে জাতি নিদারুণ পতনের শিকার হতে পারে। কাজেই জাতির উন্নতির স্বার্থে গণমাধ্যমের সুষ্ঠু ব্যবহার অপরিহার্য।
তিনি আরও বলেন, দুর্ভাগ্যবশত বর্তমানে আমরা গণমাধ্যমকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হচ্ছি, যার ফলে জাতি মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। আজকের গণমাধ্যম সম্পর্কে বলতে গেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন এর একটি উক্তিই যথেষ্ট। তিনি ‘যুদ্ধবাজ সাংবাদিকতা বনাম মুক্ত-মিডিয়া মিথ’ প্রবন্ধে লিখেছেন, “মূলধারার গণমাধ্যম মূলত কর্পোরেট গণমাধ্যম, বিশাল সংস্থাগুলো তাদের নিয়ন্ত্রণ করে এবং তাদের এজেন্ডা প্রসারের কাজেই গণমাধ্যম ব্যবহৃত হয়। কর্পোরেট এলিটকুল গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে মস্তিষ্ক ধোলাইয়ের জন্য, মানুষকে তথ্য দান বা সচেতন করে তোলার জন্য নয়।” যারা মিডিয়াতে কাজ করতে আসছেন তাদের অধিকাংশই আসছেন সাংবাদিকতা পেশার সুবিধা হাসিল করে অর্থ ও ক্ষমতা অর্জনের জন্য। তাদের স্বার্থপরায়ণতা ও পক্ষপাতিত্বসুলভ মনোবৃত্তির দরুণ তাদের পরিবেশিত সংবাদের বিশ্বাসযোগ্যতাও হারিয়ে যাচ্ছে। বিবিসি কিংবা রয়টার্সের মতো সংবাদসংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতাও বার বার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। তাদের প্রতিবেদকগণ বহুবার তাদের নির্ধারিত সীমানা পেরিয়েছেন, কখনও ভুল তথ্য পরিবেশন করেছেন, কখনও সেটা রাজনৈতিক শুদ্ধতাকে লঙ্ঘন করেছে। আমাদের দেশীয় সংবাদমাধ্যম ও তাদের সাংবাদিকতার ধরনও অনেকটা সেরকম।
নীতিহীন সাংবাদিকতার সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, আজ গণমাধ্যমের কাজের পদ্ধতিগত ত্র“টির কারণে অনেক মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, যেমন- কাউকে কোনো অভিযোগে গ্রেফতার করার পরই বুকে নাম লেখা কাগজ সেঁটে তার ছবি প্রকাশ করা হয়। হয়তো লোকটি আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হলো কিন্তু মিডিয়া ও প্রশাসনের হঠকারিতায় তার মান-সম্মান ধূলায় মিশে গেল। অথবা ধরা যাক, একজন কর্মকর্তা দুর্নীতি করে ধরা পড়লেন। ঘটনাটির অবশ্যই সংবাদমূল্য আছে। কিন্তু তিনি ধরা পড়ে অনুতপ্ত হলেন এবং ক্ষমা চাইলেন। সেক্ষেত্রেও কিন্তু মানবিক বিবেচনায় এ সংবাদ গোপন করা হয় না। যদি অপরাধীর অপরাধ প্রকাশযোগ্য হয় তবে তার অনুতাপও কেন প্রকাশিত হবে না? তার ঘুষ খাওয়ার পেছনে যে উপরমহলের চাপ ছিল তা কেন প্রকাশিত হবে না? অপরাধের সংবাদপ্রকাশে কি অপরাধ বন্ধ হয়? না। বরং একচেটিয়াভাবে অপরাধের চিত্র গণমাধ্যমে প্রকাশ অপরাধের বিস্তার ঘটায় এটা সকল মনোবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী স্বীকার করবেন। বাস্তবতা হলো, জাতির সবচেয়ে অসহায় ও ব্যক্তিপর্যায়ের দুর্বল অংশটাই সংবাদরোষের শিকার হয়ে থাকে। একজন ঘুষখোর সংবাদকর্মীদের হাত থেকে রেহাই পায় না, কিন্তু পশ্চিমা পরশক্তিগুলোর গণহত্যার বিরুদ্ধে মিডিয়া মনোমুগ্ধকরভাবে নীরব থাকে।
সুতরাং এখন সময় এসেছে গণমাধ্যমে প্রচলিত ধারার বাইরে ন্যায়-নীতি ও কল্যাণভিত্তিক একটি ধারার প্রবর্তন করার। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে যে, যেই সমাজে আমরা বড় হয়েছি, সেই সমাজের মানুষের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে। ছোটবেলায় আমরা সবাই পড়েছি,
আপনাকে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী পরে;
সকলের তরে সকলে মোরা, প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।
বইয়ের এ নীতিবাক্য বইয়ের পাতাতেই রয়ে গেছে, বাস্তবে আমরা স্বার্থ ছাড়া এক পা-ও ফেলি না। বস্তুবাদী শিক্ষা-সংস্কৃতির প্রভাবে আমাদের আত্মিক গুণাবলি দিনদিন নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, বাড়ছে অপরাধমনস্কতা। এ থেকে মানবজাতিকে উদ্ধার করার জন্য গণমাধ্যমকর্মীদেরকেই সবার আগে আজ মনুষ্যত্বের ধর্ম কী তা উপলব্ধি করতে হবে। তাদের মাধ্যমেই সমাজ ও জাতি সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাভিশন এর কাতার প্রতিনিধি শরিফ উদ্দিন সন্দ্বীপি, সিটিজি রিপোর্ট ডট কমের সম্পাদক অধ্যাপক মুজাহিদুল ইসলাম বাতেন, হোটেল দুবাই এর ম্যানেজিং পার্টনার নিজাম উদ্দীন, ৭১ অনলাইন নিউজ এর সম্পাদক ইসলাম রবি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক জানে আলম জিয়া, এস টিভি ডট নেটের সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, দি ক্রাইম ডায়রি (বিটিভি) এর চট্টগ্রাম ব্যুরো এম হাসান ইমাম, দৈনিক সরেজমিন বার্তা এর চট্টগ্রাম ব্যুরো মুক্তার হোসেন বাবু, বাংলাপোস্টবিডি ডট কমের সম্পাদক এম আলী হোসেন, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সহ সভাপতি এম শাহিন, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ নেতা ইউচুপ খান হাসান, সামসাদ সাত্তার সদস্য সচিব অনলাইন প্রেসক্লাব চট্টগ্রাম, অপরাধ সংবাদ নির্বাহী সম্পাদক মজিবুর রহমান, চট্টগ্রাম নগরীর ২৪নং ওয়ার্ড যুবলীগের প্রচার সম্পাদক মো. ইউচুপসহ অন্যান্যরা।
আয়োজনে বিশেষ কৃতিত্ব রাখেন অপরাধ সংবাদ ডট কম এর আঞ্চলিক অফিসার (প্রশাসন) হাফেজ মো. সালাউদ্দিন, স্টাফ রিপোর্টার সাইফুল মাহমুদ। এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাচ্চু বড়–য়া, এম আর মিলনসহ আগত সাংবাদিকরা অনলাইন সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধতার প্রয়োজনীয়তা সর্ম্পকে আলোকপাত করেন।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *