Connect with us

বিশেষ নিবন্ধ

আমাদের এবাদত ও সামাজিক দায়িত্ব দেশকে শান্তিময় করা

Published

on

মোহাম্মদ ইয়ামিন খান
বর্তমান পৃথিবী মহাযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে যে জঙ্গিবাদকে ইস্যু করে সেই জঙ্গিবাদের উৎস কোথায়, কারা এর জন্ম দিল, কেন জন্ম দিল সেটা আমাদের জনসাধারণকে জানতে হবে। বিশ্বের পরাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলো জঙ্গিবাদের জন্ম দিয়েছে। আফগান যুদ্ধের সময়ে আমেরিকা মুসলমানদেরকে নিজেদের পক্ষে কাজে লাগানোর জন্য জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছে। ধর্মবিশ্বাসী সাধারণ মুসলমানদেরকে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা দ্বারা জঙ্গিবাদে আকৃষ্ট করে। সেখান থেকেই বর্তমান জঙ্গিবাদের উদ্ভব এবং বিস্তার লাভ। মানুষের ঈমানকে ভুল খাতে প্রবাহিত করে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটানো হলো এই ধর্মবিশ্বাসী মানুষের ইসলাম সম্পর্কে সঠিক আকিদা না থাকার কারণে। সাধারণ মানুষ যদি ইসলামের সঠিক আকিদা জানত, তারা যদি জানত তাদের ধর্ম কী, তাদের প্রকৃত ইবাদত কী এবং পৃথিবীতে মানুষের আগমনের উদ্দেশ্য কী তাহলে তাদের ধর্মবিশ্বাসকে আর কেউ ভুল খাতে প্রবাহিত করতে পারতো না।
একটি বিষয় জানা দরকার যে, ইসলামের তিনটি জিনিস রয়েছে; যেমনঃ আকিদা, ঈমান ও আমল। প্রকৃত আলেমরা সমকণ্ঠে বলে গেছেন, আকিদা যদি সঠিক না হয় তাহলে কারও ঈমান-আমলের কোনো দাম থাকে না। তিাই আকিদা বিহীন ঈমানের কোনো দাম নেই আর ঈমানবিহীন আমলের কোনো মূল্য নেই। ইসলামের সঠিক আকিদা হলো ইসলাম স¤পর্কে সঠিক ও সম্যক ধারণা। ইসলাম কেন এসেছে, এর উদ্দেশ্য কী, রাসুলুল্লাহ কেন উম্মতে মোহাম্মদী নামক জাতি গঠন করে গেলেন ইত্যাদি বিষয় আমাদের জানতে হবে।
ইসলাম শব্দের অর্থ শান্তি। সমগ্র পৃথিবী থেকে সমস্ত অন্যায়, অবিচার, অশান্তি দূর করে ন্যায়, সুবিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই ইসলামের আগমন। ইসলাম অশান্তিপূর্ণ সমাজকে শান্তিপূর্ণ করে। আর ঈমানের মূল বিষয় হলো কালেমা, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” অর্থাৎ “আল্লাহ ছাড়া আর কোনো হুকুম না মানা” এর উপর বিশ্বাস স্থাপন করা। এককথায় যাবতীয় অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে সত্য, হক্ব ও ন্যায়ের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়াই হচ্ছে কালেমার শিক্ষা। আর আমল হলো সালাহ (নামাজ), যাকাত, হজ্ব, সওম (রোজা) ইত্যাদি এককথায় সেই সমস্ত কাজ যা মানুষের কল্যাণ করে, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে তা সবই আমল। কিন্তু নিজের জীবন ও স¤পদ উৎসর্গ করে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার সর্বাত্বক প্রচেষ্টা না করলে কারও ব্যক্তিগত আমল কবুল হবে না।
আজ পৃথিবীময় আমল হচ্ছে কিন্তু ইসলাম স¤পর্কে সঠিক আকিদা না থাকার কারণে ঈমান ও আমল সব অর্থহীন হয়ে যাচ্ছে। আর ইসলাম সম্পর্কে সঠিক আকিদা না থাকার কারণে ধর্মবিশ্বাসী মানুষের ঈমানকে বারবার হাইজ্যাক করে তাকে ভুল খাতে ব্যবহার করে কেউ করছে ধর্মের নামে অর্থ উপার্জন, ধর্মের নামে অপরাজনীতি ও ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ করে অধর্ম করে চলেছে। এই আসন্ন সঙ্কট থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হলে আমাদের সকলকে উদ্যোগী হয়ে ই¯পাতকঠিন ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কারণ এটি একদিকে আমাদের ধর্মীয় ও ঈমানী দায়িত্ব এবং অন্যদিকে সামাজিক কর্তব্য। আমরা যারা ধর্মে বিশ্বাস করি তাদের বুঝতে হবে মানুষের শান্তির জন্য কাজ করা প্রকৃত ইবাদত। কাজেই মানুষ যখন কষ্টে থাকে, সমাজ যখন অন্যায়-অবিচারে পূর্ণ হয়ে যায় তখন তার ঈমানী দায়িত্ব হয়ে পড়ে মানুষের কষ্ট লাঘব ও সমাজ থেকে অন্যায়-অবিচার দূর করা।
পক্ষান্তরে এই সমাজের বসবাসকারী প্রত্যেকের সামাজিক কর্তব্য হলো সমাজের শান্তি নিশ্চিত করা, ধ্বংসের হাত থেকে সমাজকে বাঁচানো। এই কথা সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে যে, আমার সমাজ, আমার দেশ যদি ধ্বংস হয়ে যায় তবে আমিও বাঁচবো না, আমাদের কারোরই কোন অস্তিত্বই থাকবে না। যদি ১৬ কোটি বাঙ্গালির ৩২ কোটি হাতকে ঐক্যবদ্ধ করা যায় তাহলে ইনশাল্লাহ এদেশের মাটিকে ধ্বংসের কিনারা বানাতে দুঃসাহস পাবে না কোনো শয়তানী চক্র। এই সত্যটিকে অনুধাবন করে যাবতীয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে ই¯পাতকঠিন ঐকবদ্ধ জাতি গড়ে তুলতে বর্তমান সরকারকে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে।

লেখক: যামানার এমামের অনুসারী ও হেযবুত তওহীদের সদস্য।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *