Connect with us

জাতীয়

এক সোয়াত কর্মকর্তার স্ট্যাটাস ”কইলজাডা ফাইট্টা যায় কিছু কইতে পারি না”

Published

on

swat-sanowar

অনলাইন ডেস্ক: পুলিশের বিশেষ বাহিনী সোয়াত কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছেন, আবেগি লোকজন যুদ্ধ করে, আর বুদ্ধিমানরা তর্ক করে। আবেগ হচ্ছে বিসর্জনের পিতা, আর বুদ্ধি হচ্ছে সৃষ্টিশীলতার পিতামহ। এখনও এদেশে লক্ষ-কোটি উজ্জীবিত তরুণ রয়েছে যারা দেশের জন্য ঘাম এবং রক্ত বিসর্জন দিতে মুখিয়ে আছে। শুধু ডাকের অপেক্ষায়। আমার ইনবক্স থেকে কয়েকটা স্ক্রিণশট দিলে হয়তো বুঝবেন এরা বিসর্জনের জন্য কেমনে লাফাচ্ছে। আবেগের ডিব্বা এমনভাবে ঢেলে দিয়েছে যে, মনে হচ্ছে এরা ’৭১ থেকে এসেছে।

কয়েক জনের আবেগের ভাষা শুনুন-
‘ভাই, প্রয়োজন হলে শুধু নাম ধরে ডাক দিবেন, স্বামী-সংসার সব ফেলে যুদ্ধে সামিল হয়ে যাব।’
‘স্যার, খালি আওয়াজ দিবেন, বিয়ের পিড়িতে বউকে ফেলেও উড়ে চলে আসবো।’
‘আমি আপনাদের সাথে কাজ করতে চাই। কিন্তু আমাকে কি নেয়া যাবে? আমি অনেক ছোট। ক্লাস সিক্সে পড়ি আমি।’
.. ইত্যাদি।
.. বুঝেছেন তো অবস্থা?.এগুলো শুনলে সিনা টান টান হয়ে যায় না, বলেন?
বিপরীত দিকে, যাদের বুদ্ধি আছে তাদের যুক্তিতে যথেষ্ট পরিমাণ গঠনমূলক(!!!) ঢং রয়েছে। শুনতে বিরক্ত লাগে, গোসসা লাগেৃ. কিন্তু কথাগুলো ফাটা বাশের মত শক্ত(মানে কম শক্ত)। ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলে এদের ন্যাকামিগুলোও যথেষ্ট পরিমাণ বিনোদনমূলকও বটে।

যেমন,
– সব মরলো কেন? গডফাদার পর্যন্ত যাবেন কিভাবে?
– কি ট্রেনিং করেছেন যে, সবাইকে মারতে হলো
– এটা পুলিশের ক্রসফায়ার নাটক
– ৪টি অস্ত্র দিয়ে মুহুর্মুহু গুলি বের হল কেমনে?
– পুলিশের কেউ হাতাহত হলো না কেন?
– অভিযান সকালের আলোতে হল কেন?
– আবার রাতে করলে: তরিঘরি করে রাতের অন্ধকারে অভিযান করার অর্থ কি?
.. ইত্যাদি ইত্যাদি। এরা কিন্তু ’৭১-এ বেঁচে থাকলে যুদ্ধের বারটা বাজিয়ে দিত।

সত্য কথা হচ্ছে,
‘কইলজাডা ফাইট্টা যায় কিছু কইতে পারিনা বইল্যা।’
শুধু এতটুকুই ফরিয়াদ করি -‘হে আল্লাহ, এইগুলানরে তুমি পুলিশ বানাইয়া দাও। আর আমাদের হাতে একটা করে এ্যানরয়েড মোবাইল ফোন দিয়ে অখন্ড অবসর দিয়া দাও। তার সাথে দাও ১০০ এমবিপিএস স্পিডের আজীবন ফ্রি ডাটা(ইন্টারনেট) সুবিধা।’
‘কথা দিচ্ছি এদের মত গল্প লিখমু না, খালি সেল্ফি তুলে পোস্ট দিমু।’
ধরেন, গুলশানের আর্টিসানের ঘটনা ঘটেনি। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সাফল্যের সাথে বসুন্ধরার একটি ফ্ল্যাটে পুলিশের সাথে গোলাগুলিতে ঐ পাঁচ ছ্যামরা মারা গেল । তাহলে এই তাথাকথিত জঙ্গি, তদন্ত এবং নিরাপত্তা বিশারদরা কি বলতেন?

– এরা কি আসলেই জঙ্গি ছিল?
– উচ্চ শিক্ষিত ইংরেজী মিডিয়ামের আধুনিকমনা ছাত্রদের পুলিশ জঙ্গি সাজিয়ে গুলি করে মারবে, আর আমরা আঙ্গুল চুষবো? আল্লাহ তো আমাদেরও কিছু বুদ্ধিশুদ্ধি দিয়েছে নাকি?
– ছোট ছোট দুধের শিশুরা না-কি বিদেশিদের জিম্মি করে মারবে? সেই তথ্যের ভিত্তিতে নাকি পুলিশ অভিযান করেছে। আচ্ছা, এদেশের পুলিশেকে আল্লাহ জ্ঞান দান কবে করবে?
আর এই পাঁচটা বাচ্চার পাঁচ জোড়া বাবা-মা প্রেস ব্রিফিং করে তখন কি ভূমিকা নিতেন সেটাতে না হয় না-ই গেলাম।
এবার পুলিশের ইন্টেলিজেন্স দুর্বলতায় গুলশান অ্যাটাক হয়ে গেল! এ নিয়ে এই পাকনাগুলা কি কি বললো সেটা সবারই জানা।
তাই বলছি কি, পুলিশ ইন্টেল পেয়ে ঘটনা ঘটার আগেই অভিযান চালাতে গিয়ে জঙ্গি মারলেও এরা গোসসা করে, জঙ্গিদের হাতে অস্ত্র এত কম ছিল কেন? এটা বলে। আবার, জঙ্গিদের হাতে অস্ত্র বেশি থাকায় পুলিশ মরলেও ব্লেইম দেয় যে, এসব কাজের জন্য পুলিশের কোন সক্ষমতা নেই।
আসলে, লক্ষ-কোটি আবেগি মানুষের বিসর্জনের মিছিল কয়েক শত নির্বোধের কারণে থেমে থাকে না। কারণ এদের ধান্ধা অন্য জায়গায়-

– রাজনীতি
– ব্যক্তিগত কিংবা প্রতিষ্ঠানিক হিংসা-বিদ্বেষ-প্রতিযোগিতা
– পাকনামুটাই অভ্যাস
– বেশি বেশি লাইক-শেয়ার
– কারও এজেন্ট হয়ে ধান্দা বাস্তবায়ন

কেউ এদের একটু থামান।
আর না হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কেউ একজন এদেরকে একটু বলেন- ‘তোরা বুদ্ধিজীবী না, তোরা আসলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধি।’
এই প্রতিবন্ধিদের পরিবারের নিষ্পাপ সদস্যদের নিরাপদ রাখতে আমাদের একটু কাজ করতে দিন, প্লিজ।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *