Connect with us

জাতীয়

কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ কারো ওপর নির্ভরশীল নয়

Published

on

প্রধানমন্ত্রী আজ দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে ঘোষণা করেছেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে কখনই কোন বিদেশী রাষ্ট্র বা দাতাগোষ্ঠীর কাছে মাথা নত করবে না। কারণ বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের জন্য কারো ওপর নির্ভরশীল নয়।

বিশ্ব ব্যাংকের পদ্মাসেতু নিয়ে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে আর অবহেলা করা যায় না। এসব আন্তর্জাতিক সংস্থা- যারা কথায় কথায় মিথ্যা দোষারোপ করে তাদের কাছে নতজানু করে রাখতে চায়, তারা সে শিক্ষাটা পেয়ে গেছে। আর কেউ এভাবে মাথা নিচু করে চলার জন্য বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে পারবে না।’

‘আমাদের বাৎসরিক উন্নয়ন কর্মসূচির ৯০ ভাগই এখন আমরা নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করতে পারি’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা জানেন পদ্মাসেতু নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে একটা মিথ্যা অভিযোগ এনেছিল ওয়ার্ল্ড ব্যাংক। কানাডার ফেডারেল কোর্ট যার রায়েও বলেছে- এসব মিথ্যা, ভুয়া, বানোয়াট। এখানে অভিযোগের কোন সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০১৭’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ সব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রথমেই ঘোষণা দিয়েছিলাম আমরা নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণ করবো। আমরা আল্লাহর রহমতে নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণ শুরু করেছি। আমি অন্তত এইটুকু বলতে পারি, এই সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পর দিনবদলের সনদ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার কাজ শুরু করে। ২০২১ সালে দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনকালে দেশে কোন দরিদ্র থাকবে না, সেলক্ষ্য পূরণেই সরকার দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।

এ বছর ১৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে স্বাধীনতা পদক ২০১৭তে ভূষিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ, সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং উন্নয়নসহ জাতীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য এই পদক প্রদান করা হয়। পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেকে ৩ লাখ টাকার চেক, ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের একটি পদক ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এবছর স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হয়েছেন- গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব:) শামসুল আলম-বীরউত্তম, স্বাধীন বাংলা বেতারের কর্মকর্তা আশরাফুল আলম, শহীদ মো. নাজমুল হক, প্রয়াত মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী (মরণোত্তর), শহীদ এন এম নাজমুল আহসান (মরণোত্তর), শহীদ ফয়জুর রহমান আহমেদ (মরণোত্তর), চিকিৎসা শাস্ত্রে অধ্যাপক ডা. এএইচএম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী, সাহিত্যে রাবেয়া খাতুন ও মরহুম গোলাম সামদানী কোরায়শী (মরণোত্তর), সংস্কৃতি ক্ষেত্রে প্রফেসর ড. এনামুল হক ও নৃত্যকলায় ওস্তাদ বজলুর রহমান বাদল, সমাজকল্যাণে খলিল কাজী (ওবিই), গবেষণা ও প্রশিক্ষণে বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান এবং প্রয়াত অধ্যাপক ড. ললিত মোহন নাথ (মরণোত্তর) এবং জনপ্রশাসনে প্রফেসর মো. আসাদুজ্জামান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম স্বাধীনতা পদক প্রদান অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন এবং স্বাধীনতা পদক বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন। স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্তদের পক্ষে অধ্যাপক ড. এনামুল হক নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন। পদকপ্রাপ্তরা প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে পদক গ্রহণ করেন। আর বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বাধীনতা পদক প্রহণ করেন।

মরণোত্তর পদকের ক্ষেত্রে শহীদ মো. নাজমুল হকের পক্ষে ছেলে ইঞ্জিনিয়ার শহীদুল ইসলাম হক, সৈয়দ মহসিন আলীর পক্ষে স্ত্রী সৈয়দা সায়রা মহসিন এমপি, শহীদ এন এম নাজমুল আহসানের পক্ষে ছোট ভাই এম এন সদরুল আহসান, শহীদ ফয়জুর রহমান আহমেদের পক্ষে কন্যা মিসেস সুফিয়া খাতুন, মরহুম গোলাম সামদানী কোরায়শীর পক্ষে পুত্র গোলাম ইয়াজদানী কোরায়শী এবং প্রয়াত অধ্যাপক ড. ললিত মোহন নাথের পক্ষে স্ত্রী আরতি নাথ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক প্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদক বিজয়ীদের সঙ্গে ফটোসেশনেও অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত, চিফ হুইপ ও হুইপবৃন্দ, সুর্প্রীমকোর্টের বিচারকগণ, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ, তিন বাহিনী প্রধানগণ, ডিপ্লোমেটিক কোরের ডিন, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনিতিকবৃন্দ, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *