জাতীয়
টাঙ্গাইলের ঘটনার তদন্ত শুরু, পুলিশের ৭ জন প্রত্যাহার
টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতীতে বিক্ষুব্ধ জনতার সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষে ৩ জন নিহত হওয়ার পর, সেখানকার সাতজন পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মাহফুজুল হক নূরুজ্জামান জানান, এর মধ্যে তিন জন সাব ইন্সপেক্টর এবং চারজন কনস্টেবল রয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার ঘাটাইল এলাকায় এক মহিলা ও তার ছেলের ওপর যৌন নির্যাতন চালানোর এক ঘটনার বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকজনের বিক্ষোভের সময় পুলিশের গুলি করলে তিনজন নিহত হয়। স্থানীয় লোকজনের ব্যাপক বিক্ষোভ প্রতিবাদের পর আজ কালিহাতীতে বাসস্ট্যান্ড ও বাজার সহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ফলে আজ এলাকাবাসীকে প্রতিবাদ বিক্ষোভে রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি। তবে স্থানীয় লোকজনের মাঝে চাপা আতঙ্ক রয়েছে।
ঘটনার ষূত্রপাত হয় গত মঙ্গলবার জেলার ঘাটাইল এলাকার বাসিন্দা আল-আমীন এবং তার মা-কে কালিহাতীতে ডেকে এনে শারিরীক ও যৌন নির্যাতনের এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে। অষ্টম শ্রেণী পাশ করা ১৬-১৭ বছরের কিশোর আল আমিন জানান, কালিহাতী উপজেলার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম রোমার স্ত্রীর সাথে তার সম্পর্ককে কেন্দ্র করে আলোচনার জন্য রফিকুল ইসলামের বাড়িতে গেলে তাদের নির্যাতনের মুখে পড়তে ঞয়।
আল আমীন বলেন, সেসময় তার মাকে তারই সামনে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয় এবং তাকে বিবস্ত্র করা হয়। একইসঙ্গে মা ও ছেলের মাঝে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করার চেষ্টাও হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আল আমীন।
“মায়ের সামনে আমাকে উলঙ্গ করে। মারধোর করে । আমার মাকেও মারধোর করে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। আমার যৌনাঙ্গ তারা আমার মায়ের মুখে ঢোকাতে বাধ্য করে।”
এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে দ্রুত ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয়দের মাঝে। তাদের অভিযোগ এখানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও পুলিশ ধর্ষনের মামলা নেয়নি। ঘটনার পর থেকেই বিক্ষোভ প্রতিবাদ চলতে থাকলেও গতকাল তা প্রকট আকার ধারণ করে এবং বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মহাসড়ক অবরোধ করেন।
পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় ওই দিনই রফিকুল ইসলামা রোমা, তার বোনের জামাই হাফেজুর রহমানমহ ৩ জনকে অভিযুকা্ত করে মামলা করেন আল আমীনের মা। সেদিনই অভিযুক্ত একজনকে আটক করে পুলিশ। এখন গুলি ছোঁড়ার ঘটনায় পুলিশের কর্মকর্তাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এদিকে নিহত ৩ জনের ময়নাতদন্ত শনিবার টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে এবং তিনজনই বুলেটবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
কালিহাতী থানার ওসি শহীদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সকাল থেকেই বাসস্ট্যান্ড ও হামিদপুর বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
স্থানীয় সাংবাদিক কামনাশীষ শেখর জানিয়েছেন বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ঘটনার পর এখন সেই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর