কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রাম উলিপুরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে ধ্বস – খোলা আকাশের নীচে পাঠদান
সোমবার সরেজমিনে উমানন্দ মধ্যপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে গেলে দেখা যায় কোমল মতি শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নীচে পাঠদান দেয়া হচ্ছে। বিদ্যালয় ভবনের বিভিন্ন জায়গায় ছাদ ও বীমের প্লাষ্টর খসে পড়ে আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উমানন্দ মধ্যপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠা হয়ে বে-সরকারী রেজিঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। সরকারী ঘোষনা মোতাবেক ১জানুয়ারী ২০১৩ সাল থেকে তা সরকারী হয়। এলজিইডির অর্থায়নে ১৯৯৪ সালে বিদ্যালয়ের এই ভবনটি নির্মিত হয়। কিন্তু নির্মান কাজ শেষ হওয়ার কয়েক বছরের মাথায় ভবনটির ছাদে ও বীমে ফাটল দেখা দেয়। ফলে দীর্ঘ দিন থেকে একটু বৃষ্টি হলেই ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে আসছিল।
২বৎসর থেকে নিয়মিতভাবে প্রতিদিনই ছাদ ও বীমের ইট-সিমেন্ট ধসে পড়তে থাকা এবং বিকল্প ঘর না থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে আমরা ৪জন শিক্ষক শিশুদের নিয়ে খোলা আকাশের নীচে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
স্কুলটির প্রধান শিক্ষক রুহুল আমীনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, গত ২০১৩ সালের মে মাসে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত স্কুলটির বেহালদশার পেপার কাটিংসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হলেও অদ্যাবধি কর্তৃপক্ষের কোন সাড়া পাওয়া যায়নি, এমনকি পরিত্যক্ত ভবনটি কর্তৃপক্ষ পরিদর্শনও করেনি। নিরুপায় হয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আবারও বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছি এবং বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে ২শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে চলমান এই বিদ্যালয়টির ছাদ এবং বীমে ধস দেখা দেয়ায় অনেক অবিভাবক তার সন্তানদের স্কুলে আসতে দিচ্ছে না ফলে স্কুলটিতে শিক্ষার্থী অনুপস্থিতির হার বেড়ে পাচ্ছে।
বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফজলার রহমান জানান, উপজেলা শহর থেকে ৯কিলোমিটার দুরে এই স্কুলটির অবস্থান হওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট যোগাযোগ করা সত্বেও কোন সাড়া মেলেনি। কর্তৃপক্ষের একটু অবহেলায় যেকোন মুহুর্তে প্রাণ হারাতে পারে কোমলমতি নিস্পাপ এই শিশুরা। তাই বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নীচে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছি।
এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ মোসলেম উদ্দিন শাহ্ সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার জানান, বিদ্যালয়টিতে ভবনে ধ্বস দেখা দেয়ার এবং খোলা আকাশের নীচ পাঠদানের বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলেও জানান তিনি।