Connect with us

বিনোদন

ক্ষুদিরামকে নিয়ে বায়োপিক বলিউডে

Published

on

image (1)বিনোদন ডেস্ক: বলিউডের রুপোলি পর্দায় আনাগোনা করেছেন অনেক ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীই! মহাত্মা গাঁধী আর ভগৎ সিংহকে হিসেবের বাইরে রাখাই ভাল— তাঁরা নানা রূপে দেখা দিয়েছেন সেলুলেয়েডে। এর ঠিক পরেই আসে বাঙালির কথা। সুভাষচন্দ্র বসু থেকে শুরু করে মাস্টারদা সূর্য সেন— তালিকা নেহাত কম নয়। কিন্তু, শহিদ ক্ষুদিরাম? মনে করে দেখুন তো! ১৮ বছরের তরুণটিকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন কি? এ বার পাবেন। অনেক দিন পরে হলেও এতদিনে বলিউডে প্রাপ্য সম্মান আদায় করেছেন অমর শহিদ। খুব তাড়াতাড়িই শহিদ ক্ষুদিরামের বায়োপিক তৈরিতে হাত দিচ্ছে বলিউড। বিজ্ঞাপনের ছবি বানিয়ে বলিউডের বাজারে নাম কিনেছেন যে ভানু প্রতাপ, তিনি এ বার শুরু করতে চলেছেন পূর্ণ দৈর্ঘের ছবি নিয়ে তাঁর সফর। আর, সেই ছবির বিষয় হিসেবেই ভানু বেছে নিয়েছেন ১৮ বছরের অমর শহিদকে।

ভুল কিছু করেননি পরিচালক। বাংলার বাইরে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রথম এই শহিদকে নিয়ে প্রায় কিছুই জানে না ভারত। জানে না ডানপিটে, বাউন্ডুলে এই তরুণটির মনে বিপ্লবের বীজ বপন করে দেন শ্রী অরবিন্দ। জানার অবশ্য কথাও নয়। হেমচন্দ্র কানুনগোর বই ছাড়া সে রকম ভাবে ক্ষুদিরামকে নিয়ে লেখাই বা কই?

তাহলে, পরিচালকের মনে কী ভাবে রেখাপাত করলেন ক্ষুদিরাম? এই ফাঁকে জানিয়ে রাখা ভাল, শুরু থেকেই ক্ষুদিরামকে নিয়ে ছবি করার বাসনা পরিচালকের ছিল না। ক্ষুদিরামকে নিয়ে তার মনে আগ্রহ জানিয়ে তোলেন চিত্রনাট্যকার দীনেশ তিওয়ারি। “চাপেকর ভাইদের নিয়ে একটা ছবির কাজ শুরু করেছিলাম। তখন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অনেককে নিয়েই পড়াশোনা করতে হচ্ছিল। সেই সময়ে একটা পত্রিকায় ক্ষুদিরামকে নিয়ে লেখা একটা আশ্চর্য তথ্য আমার মনে গেঁথে যায়। ক্ষুদিরামই বিগত শতকের প্রথম সেই শহিদ, যাঁকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল।”

ব্যস, আর কী! সেই যে শহিদকে নিয়ে পড়াশোনা শুরু করলেন চিত্রনাট্যকার, সেটাই ক্রমে জন্ম দিল মুগ্ধতার। দ্রুত গতিতে ক্ষুদিরামকে নিয়ে চিত্রনাট্য লেখা শুরু করে দিলেন তিনি। “প্রায় ৮০ ভাগ মতো লেখা নামিয়ে ফেলেছি। তাড়াতাড়ি বাকিটাও শেষ করে ফেলব”, জানাচ্ছেন দীনেশ।

তবে, চিত্রনাট্য শেষ হয়ে গেলে ঠিক পরের ধাপে একটা সমস্যা অপেক্ষা করে রয়েছে ছবি নির্মাতাদের জন্য— ক্ষুদিরামের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য কাকে বেছে নেবেন তাঁরা? ভারতের অনেকগুলো শহরে ঘুরে ঘুরে অডিশন হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই, তবু পরিচালক মনের মতো শহিদ খুঁজে পাননি। তাহলে?

ক্ষুদিরামের চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন যাঁরা:

‘স্লামডগ মিলিওনেয়ার’ খ্যাত দেব পটেল                             ‘উড়ান’ খ্যাত রজত বরমেচা                                                ‘লাইফ অব পাই’ খ্যাত সূর্য শর্মা

“বুঝতে পারছি আর কিছু করার নেই! পুরোপুরি পছন্দ কাউকেই হচ্ছে না। এ বার যা হোক করে কোঁকড়া চুল, বড় বড় চোখের কোনও একজনকে বেছে নিতে হবে”, কিছুটা নিরুপায় হয়েই বলছেন ভানু প্রতাপ। হতে পারে, ‘লাইফ অব পাই’ খ্যাত সূর্য শর্মা, ‘উড়ান’ খ্যাত রজত বরমেচা বা ‘স্লামডগ মিলিওনেয়ার’ খ্যাত দেব পটেল অভিনয় করবেন শহিদের ভূমিকায়।

আর শহিদের দিদির চরিত্রে বলিউডের রুপোলি পর্দা দেখবে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে। এটা কি নায়িকার বলিউড বিজয়ের আর একটা স্বীকৃতি? না কি, বলিউডের প্রাদেশিক ছবি কারখানার বাংলা ছবি নিয়ে বাড়তে থাকা আগ্রহের নতুন এক ধাপ?

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত

সে সব কূটকচালি তোলা থাক নিন্দুকদের জন্য। তাঁরা বলেই চলেছেন, নায়ক বাছাইয়ের আগেই কী ভাবে তাঁকে নির্বাচন করা হল? আর, নায়িকাই বা কেন রাজি হয়ে গেলেন এমন একটা পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের জন্য?

সত্যি বললে, ক্ষুদিরামের জীবনে তাঁর বড় দিদির ভূমিকা কিছু কম নয়। তিনিই তিন মুঠো খুদের বিনিময়ে রুগ্ণ মায়ের কাছ থেকে কিনে নিয়েছিলেন শহিদকে। ক্ষুদিরামের বড় হওয়া, তার মনের লালন— সব কিছুই তো এই দিদির হাত ধরে! তাই চরিত্রটি মোটেও ফেলনা নয়। পরিচালকের মনে হয়েছিল, এই চরিত্রে কোনও বাঙালি নায়িকাই একমাত্র মানানসই হতে পারে! সব দিক দেখে তাঁর মনে হয়েছে, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তই চরিত্রটির জন্য জুতসই। মনে হওয়া মাত্র তিনি কথা বলেছেন নায়িকার সঙ্গে, নায়িকাও রাজি হয়েছেন অভিনয়ে। এ বার শুধু চুক্তিপত্রে সই করানোটাই যা বাকি!

সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে ছবির শুটিং শুরু হবে। তখনই জানা যাবে, ছবির জন্য কী নাম ঠিক করলেন পরিচালক। কথা আছে, কলকাতায় ছবিটি প্রথম দেখানো হবে আন্তর্জাতিক কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে।

বাংলাদেশেরপত্র.কম/এডি/আর

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *