Connect with us

কুড়িগ্রাম

ছিটমহল গুলোতে শুরু হয়েছে ২য় দিনের মুক্তির উল্লাস

Published

on

Kurigram Sitmohol Utsob 2nd day photo-(3) 01.08.15

শাহ্ আলম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :

নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার দাসিয়ার ছড়া ছিটমহলে শুরু হয়েছে ছিটমহলবাসীদের মুক্তির উৎসব। শুক্রবার রাত ১২ টা ১ মিনিয়ে ছিটমহলের ভুখন্ড বাংলাদেশের সাথে একিভুত হওয়ায় এবং ৬৮ বছর পর নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়ায় আনন্দে উৎসব পালন করছে ছিটবাসীরা।

শনিবার সকাল ৫টা ২০ মিনিটে দাসিয়ার ছড়া ছিটমহলের কালির হাট বাজারে রাষ্ট্রিয় ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন মাহমুদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) বদরুদ্দোজা।

পরে কুড়িগ্রাম-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাফর আলী সকাল ১১ টায় দাসিয়ার ছড়া ছিটমহলের কালির হাটে পৌছিলে আবারো পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে ২য় দিনের মুক্তির উৎসব শুরু করে বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি। তারপর একে একে বিজয়ের কেক কেটে ছিটবাসীদের মাঝে মিষ্টি বিতরন করা হয়। দুপুর ২ টায় শুরু হয় আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুড়িগ্রাম-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ জাফর আলী। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটি বাংলাদেশ ইউনিটের সভাপতি মঈনুল হক, সাধারন সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ও দাসিয়ার ছড়া ছিটমহলের সভাপতি আলতাফ হোসেন। বক্তারা দীর্ঘ ৬৮ বছরের বন্দী জীবন থেকে মুক্তি পাওয়ার অনুভুতি প্রকাশ করেন।

আলোচনা সভা শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং তা চলবে সন্ধা পর্যন্ত। সাংস্কৃতির অনুষ্ঠানে ছিটবাসীদের পরিবেশিত সংগীত, নাটক, নৃত্য ও জারি-সারি গান পরিবেশিত হবে। শনিবার সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছিটমহলের মানুষেরা এসব আনুষ্ঠানিকতা উপভোগ করেন।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিলুপ্ত ১১১টি ছিটমহলে একযোগে এ কর্মসূচী পালন করে। এসময় শত শত কণ্ঠে বেজে ওঠে জাতীয় সঙ্গীত-“আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি”। পতাকা উত্তোলনের সময় বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ যোগ দেন। ঐতিহাসিক এ বিজয়ে উল্লসিত উচ্ছ্বসিত ছিটমহলের বাসিন্দারা। দীর্ঘ ৬৮বছর প্রতীক্ষার পর তাদের এ শুভ দিনের সুচনা ঘটে। এর আগে শনিবার মধ্যরাতে রাত ১২টা ১ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে দাসিয়ার ছড়ায় ৬৮টি মোমবাতি জ্বালিয়ে দীর্ঘ ৬৮বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটান ছিটের বাসিন্দাগণ। ৬৮টি মোমবাতি প্রজ্জলন করে এ দিনটিকে স্মরনীয় করে রাখেন ছিটবাসীরা। এসময় আনন্দ উল্লাস ও নাচে গানে হৈহুল্লোর করে উদ্বেলিত হতে দেখা গেছে ছিটের বাসিন্দাদের। মশাল হাতে আনন্দ মিছিলসহ রাত ভর চলে নানা অনুষ্ঠান।

বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমি্িটর সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা জানান, আমরা এখন থেকে বাংলাদেশের নাগরিক। শনিবার সকালে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে আমরা আমাদের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে এটিকে সম্মান প্রদর্শন করে পেয়েছি পূর্ণ মর্যাদা।

বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির বাংলাদেশ ইউনিটের সভাপতি মঈনুল হক জানান, আমরা শনিবার মধ্যরাত থেকেই বাংলাদেশী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছি। এখন থেকে আমাদের আর কেউ ছিটের লোক বলবেনা। এখন সরকারের কাছে আমাদের দাবি অতি দ্রুত সব ধরনের সুযোগ সুবিধা ছিটের মানুষের জন্য নিশ্চিত করা।

 বাংলাদেশেরপত্র/এডি/এ

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *