খেলাধুলা
জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে আয়ারল্যান্ডের শ্বাসরুদ্ধকর জয়
যে জয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে আইসিসির সহযোগী দেশ আয়ারল্যান্ড। আর লড়াই করে হেরে যাওয়া জিম্বাবুয়ে এখন প্লেনের টিকিট কাটতেই পারে। কারণ পরের ম্যাচে জিতলেও কোন কাজ হবে না তাদের।
জয়ের জন্য জিম্বাবুয়ের লক্ষ্য ৩৩২ রান। জিততে হলে জিম্বাবুয়েকে করতে হবে রান তাড়া করার বিশ্বরেকর্ড। বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৩২৮ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডটি আইরিশদের দখলে। বিশ্বরেকর্ডের দিকে আগানো জিম্বাবুয়েকে শুরুর দিকে ভঙ্গুর মনে হলেও শেষের দিকে তীব্র আশাই তৈরি করেছিল তারা। সেটা ব্রেন্ডন টেলর আর উইলিয়ামসনের খুনে ব্যাটিংয়ে। এই দুজনের বিদায়ের পরও আশা টিকে ছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
বড় রানের টার্গেট। চাপটা ভালোই ছিল জিম্বাবুয়ের। ৭৪ রানে তাই খোয়াতে হয় চারটি উইকেট। টপ অর্ডারের কেউই ২০ ছুঁতে পারেনি। পঞ্চম উইকেটে দায়িত্তটা কাঁধে নেন অধিনায়ক টেলর ও উইলিয়ামসন। সাবলিল ব্যাটিং দৃঢ়তায় এই জুটি থেকে আসে ১৪৯ রান। দলীয় রান তখন ২২৩। এরই মধ্যে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের নিজের সপ্তম সেঞ্চুরি তুলে নেন টেলর। সেই সঙ্গে ভাগ বসান জিম্বাবুয়ের সর্বোচ্চ ওয়ানডে সেঞ্চুরিয়ান অ্যালিস্টার ক্যাম্বেলের রেকর্ডে। তবে তাকে ফেরান অ্যালেক্স কুসাক। কেভিন ও ব্রায়ানের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে টেলর করে যান ১২১ রানের ঝলমলে ইনিংস। যেখানে ছিল ১১টি চার ও চারটি ছক্কার মার।
টেলরের বিদায়ের পর দায়িত্বটা বুঝে নেন শন উইলিয়ামসন। অপর প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও ব্যাট হাতে উইলিয়ামসন ছিলেন বেশ লড়াকু। তবে অল্পের জন্য পাননি সেঞ্চুরির দেখা। সাত চার ও দুই ছক্কায় ৯৬ রান করে তিনি বিদায় নেন কেভিন ও ব্রায়ানের বলে। দলীয় রান তখন সাত উইকেটে ৩০০। তার বিদায়ের পরই মূলত হতাশা নেমে আসে জিম্বাবুয়েন শিবিরে। শেষের দিকে মুপারিয়া দুই চার ও একটি ছক্কা হাকিয়ে আশার পালে দোলা লাগান। তবে শেষটা হয়নি মুধর। ৩২৬ রানেই থামতে হয় টেলর বাহিনীকে।
আয়ারল্যান্ডের হয়ে ৩২ রানে সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন অ্যালেক্স কুসাক। মুনি এবং কেভিন ও ব্রায়ান দুটি, ডকরেল ও ম্যাকব্রিন নেন একটি করে উইকেট। এর আগে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৬ রানেই প্রথম উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। ১০ রান করে সাজঘরে ফেরেন পল স্টার্লিং। পানিয়াঙ্গারার বলে শন উইলিয়ামসনের ক্যাচ হন তিনি। ৭৯ রানের মাথায় পোর্টারফিল্ডকে সাজঘরের পথ দেখান উইলিয়ামসন, মাসাকাদজার সহায়তায়। শুরুর সাফল্যে ভাস্বর জিম্বাবুয়ে যখন কিছুটা ফুরফুরে, ঠিক তখনই পাল্টা প্রতিঘাত শুরু হয় আইরিশদের পক্ষ থেকে। তৃতীয় উইকেট জুটিতে এড জয়েস ও অ্যান্ডি বলবার্নি নিজেদের মধ্যে গড়ে তোলেন ১৩৮ রানের দুর্দান্ত এক জুটি।
দলীয় ২১৭ রানে ফেরেন চতুর্থ আইরিশ হিসেবে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি পূরণ করা এড জয়েস। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিকে বলবার্নি কেভিন ও’ব্রায়ানকে সঙ্গে নিয়ে আরও ৫৯ রান যোগ করলে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ যেতে থাকে তিনশ’র দিকেই। বলবার্নি সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৩ রান দূরে থাকতে রান আউটের দুর্ভাগ্যের শিকার হলে শেষের দিকে কেভিন ও’ব্রায়ানের ২৪ আর গ্যারি উইলসনের ২৫ দলীয় সংগ্রহকে নিয়ে যায় বিশাল সংগ্রহের দিকে। কেভিন ২২ বলে তাঁর ইনিংসটি খেলেন। উইলসন তাঁর ২৫ রান তোলেন মাত্র ১৩টি বল খেলেই। জিম্বাবুয়ের হয়ে শন উইলিয়ামসন ও টেন্ডাই চাতারা তুলে নেন নেন তিন উইকেট। বাকি একটা উইকেট পেয়েছেন তিনাশে পানিয়াঙ্গারা। সেঞ্চুরি করার সুবাদে ম্যাচ সেরা হন আয়ারল্যান্ডের অ্যাড জয়েস।
বি পুলে চার ম্যাচে তৃতীয় জয় এটি আয়ারল্যান্ডের। মোট ছয় পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় তাদের অবস্থান চতুর্থ। তাদের ম্যাচ বাকি রয়েছে আরও দুটি। প্রতিপক্ষ ভারত ও পাকিস্তান। এই দুই ম্যাচের মধ্যে একটিতে জিততে পারলেই কোয়ার্টার ফাইনালে চলে যাবে আয়ারল্যান্ড।