Connect with us

দেশজুড়ে

ডাক্তারের অভাবে সন্তান সম্ভবা মা ফিরে গেলেন হাসপাতাল থেকে

Published

on

download (19)কামরুজ্জামান লিটন, গঙ্গাচড়া:  সন্তান সম্ভবা মা হাসপাতালে ভর্তি হয়েও ডাক্তারের অভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ২ দিন পর ফিরে গেলেন। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৬ মার্চ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। স্বাস্থ্য সেবার এ হাল দেখে ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগী।

সূত্র জানায়, গত ১৪ মার্চ দুপুরে বড়বিল গ্রামের আলমগীরের স্ত্রী মোবাশ্বেরা বেগম (৩০) প্রসব ব্যাথা নিয়ে ভর্তি হন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আন্তঃ বিভাগে। রাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীকে আশ্বস্ত করেন যে, পর দিন (১৫ মার্চ) সকালে গাইনী কনসালটেন ডা. খোদেজা খাতুন ওরফে তমা’র ডিউটি আছে। সে সময়ে বাচ্চা প্রসব করালে ভাল হবে। গাইনী কনসালটেনের আশায় পরদিন ১৫ মার্চ দিনভর প্রবস বেদনা নিয়েই অপেক্ষায় থাকেন। সারা দিন পেরিয়ে গেলেও আয়া-নার্সরা কেবলমাত্র সান্তনার বাণী শোনান। এমনি ভাবেই আরো ১টি দিন কাটে প্রসব বেদনা নিয়ে। ১৬ মার্চ দুপুরে ডা. খোদেজা খাতুন ওরফে তমা হাসপাতালে আসেন। রোগীর স্বজনরা দ্রুত চিকিৎসা নিতে তাকে অনুরোধ জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ডা. তমা। তিনি রোগীর লোকদের রাগান্বিত হয়ে বিভিন্ন গালিগালাজ করেন এবং এক পর্যায়ে গর্ভবতীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র প্রদান করেন। সন্তান সম্ভবা মোবাশ্বেরাকে নিয়ে তার লোকেরা সন্ধ্যার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে রাত ৮টার দিকে স্বাভাবিকভাবে মোবাশ্বেরা ১টি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, প্রসব করানোয় অনেক বিলম্ব হয়েছে। আর কিছুটা বিলম্ব হলে মা ও সন্তানকে বাঁচানো কঠিন হয়ে যেত।
এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই অত্র হাসপাতালে হয়ে আসছে বলে গঙ্গাচড়া হাসপাতাল এলাকার অনেকে জানান। স্থানীয়রা বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে মাত্র ৭ কি.মিটার দূরেই অবস্থান গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের। তাই গঙ্গাচড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তাররা বিভাগীয় শহর রংপুরে বসবাস করেন পার্সোনাল প্রাক্টিসের বাড়তি সুবিধা নিতে। এতে গঙ্গাচড়া স্বাস্থ্য কমপ্লের আয়া-নার্সরাই ডাক্তারের দায়িত্ব পালন করেন। ফলে সর্বদাই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগীদের।
দুর্ভোগের শিকার রোগীদের অভিযোগ, গুরুতর অসুস্থ্য রোগীরা হাসপাতালের আন্তঃ বিভাগে চিকিৎসাধীন থাকলেও অনেক সময়ই কোন ডাক্তার থাকেন না। এতে করে রোগীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। বিশেষ করে সন্তান সম্ভবা গর্ভবতীরা প্রসব বেদনায় ছটফট করতে থাকলেও দেখার কেউ থাকে না। অনেক সময় রোগীর স্বজনদের অনুরোধে আয়া-নার্স এসে সান্তনা দেন মাত্র। ডাক্তারদের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে গত ৩ বছরে মারা গেছেন ৩জন প্রসূতি। এ ছাড়াও চিকিৎসা বঞ্চিত হয়ে হাসপাতালের খোলা চত্তরে প্রায় ৮ মাস পূর্বে সন্তান প্রসব করেন এক প্রসূতি।
১৫ মার্চ দায়িত্ব পালনের বিষয়ে গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. খোদেজা খাতুন মোবাইল ফোনে জানান, তিনি ওই দিন মৌখিক আবেদনে ছুটিতে ছিলেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মমর্তা ডা. আবু মোঃ জাকিরুল ইসলাম অনুপস্থিতের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মানুষ অসুবিধার কারণে মৌখিক ছুটি নিতেই পারেন। এমন ছুটির নিয়ম সম্পর্কে জানার জন্য রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোজাম্মেল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *