দিনাজপুর
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবস আজ
দিবসটি উপলক্ষে ফুলবাড়ীবাসী এবং তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ বিদ্যুৎ-বন্দর জাতীয় রক্ষা কমিটি ব্যাপক কর্মসূচী পালন করছে। অন্যদিকে বইছে ফুলবাড়ীতে স্বজন হারানোর কাঁন্না। বইছে শোকের মাতম।আহতরা বেঁচে আছে দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে।
উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলণের প্রতিবাদে গণবিদ্রোহে ফুলবাড়ীতে বিপ্লব সাধিত হলেও আজও উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আর স্বজন হারানোর কাঁন্না। এখনও বইছে শোকের মাতম।
এশিয়া এনার্জির পরিকল্পনা ছিলো ফুলবাড়ী কয়লা খনি প্রকল্প থেকে ৩০ বছরে ৫’শ ৭২ মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলণের।কিন্তু উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলণের বিষয়টি ছিলো বিপত্তি’র। পরিবেশ বিপর্যয় ও ভিটে মাটি রক্ষায় ক্রমান্বয়ে ফুঁসে উঠে ফুলবাড়ী আশপাশ এলাকার মানুষ। জাতীয় সম্পদ রক্ষা ও এশিয়া এনার্জীকে ফুলবাড়ী থেকে প্রত্যাহার এবং কয়লা উত্তোলণের প্রতিবাদে মিটিং-মিছিল-সমাবেশ অব্যাহত রাখে।এমনি একটি দিন ছিলো ২০০৬ সালের ২৬ আগষ্ট। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি প্রকল্প বাতিল, জাতীয় সম্পদ রক্ষা এবং বিদেশী কোম্পানী এশিয়া এনার্জীকে ফুলবাড়ী থেকে প্রত্যাহারের দাবীতে সকাল থেকেই ফুলবাড়ীর ঢাকা মোড়ে ফুলবাড়ী, বিরামপুর, নবাবগঞ্জ ও পার্বতীপুর উপজেলার হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হতে থাকে। দুপুর ২টার দিকে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ও ফুলবাড়ী রক্ষা কমিটির নেতৃত্বে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল নিমতলা মোড়ের দিকে এগুতে থাকলে প্রথমে পুলিশ বাধা প্রদান করে। পুলিশের বাধা পেয়ে বিশাল মিছিলটি জঙ্গী রূপ নেয়। পুলিশ-বিডিআর-এর বেড়িকেট ভেঙ্গে মিছিলটি এগুতে থাকলে আন্দোলনকারীদের উপর টিয়ার সেল, রাবার বুলেট ও নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করা হয়। বিডিআরের গুলিতে এসময় নিহত হয় আল আমিন, সালেকীন ও তরিকুল। আহত হয় ২ শতাধিক আন্দোলনকারী জনতা।
আহতদের মধ্যে অনেকেই পঙ্গুত্ব বরন করেছে। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ বাবুল রায়ের শরীরের অধিকাংশই অবশ হয়ে বর্তমানে পঙ্গুত্ব বরণ করে মানবেতর জীবন যাপন করছে। দেশের সম্পদ রক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে বিছানাই এখন তার একমাত্র সঙ্গী। তারপরও দেশের সম্পদ রক্ষায় পঙ্গুত্ব বরণ করে দুঃখ নেই তার। কিন্তু তার দুঃখ ফুলবাড়ীর সাথে তৎকালীন সরকারের সেই চুক্তি আজও বাস্তবায়ন হয়নি।
পরিবেশের ক্ষতি করে এবং জমি নষ্ট করে কয়লা খনি চায়না ফুলবাড়ীবাসী। তারা থাকতে চায়,বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় ।
আজকের দিনটিকে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ‘জাতীয় সম্পদ রক্ষা দিবস’ এবং ফুলবাড়ী বাসী ‘ফুলবাড়ী শোক দিবস” হিসেবে পালন করছে। উপলক্ষে গ্রহন করেছে বিভিন্ন কর্মসূচী ।কালো পতাকা উত্তোলন,কালো ব্যাচ ধারণ, শোক র্যালী,৩ শহীদের স্মৃতি স্তম্ভে পুস্প অর্পণ,শপথ গ্রহণ ও আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছে তল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি এবং ফুলবাড়ীবাসী।
বাংলাদেশেরপত্র/এডি/আর