জাতীয়
ধর্ম মানুষকে শুদ্ধ করে অধর্ম মানুষকে নষ্ট করে -এটিএম শামসুজ্জামান
ধর্ম মানুষকে শুদ্ধ করে, অধর্ম মানুষকে নষ্ট করে। ধর্ম মানুষকে সঠিক পথ দেখায় আবার ধর্মের নামেই মানুষকে বিপথগামী করা হয়। যদি ধর্মের সঠিক শিক্ষা সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয় তবে মানুষ শান্তিতে থাকবে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ পাব আমরা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় অরাজনীতিক আন্দোলন হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে ঢাকার তেজগাঁও কলেজ মিলনায়তনে ‘মানবতার কল্যাণে ধর্ম – শান্তির জন্য সংস্কৃতি’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের প্রখ্যাত অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান এ কথা বলেন।
তিনি বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, ধর্মব্যবসার বিরুদ্ধে সোচ্চার কিছু মানুষের সাথে এখানে একত্রিত হতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মানুষ আজ সচেতন হয়ে উঠছে। এটা আশার কথা। যা ইচ্ছা তা আর এখন জনগণকে বুঝাতে পারবেন না। ধর্ম মানে খুর দিয়ে পায়ের রগ কাটা নয়। ধর্ম মানে ককটেল মারা নয়। ধর্ম মানে পেট্রোল বোমা মেরে মানুষকে পোড়ানো নয়। বিশ্বের কোনো ধর্ম এর স্বীকৃতি দেয় না। পবিত্র কোর’আনে ফেতনা সৃষ্টি করতে নিষেধ করা হয়েছে। কোর’আনে বহুবার বলা হয়েছে, “তোমরা সীমা লঙ্ঘন করো না। সীমা লঙ্ঘনকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন না।” শুধু আমাদের কোর’আনে নয় বেদ, গীতা, বাইবেল থেকে আরাম্ভ করে যত ধর্ম গ্রন্থ আছে সবগুলির মূলবাণী একই – “একমেবাদ্বিতিয়ম” যার আরবি হচ্ছে, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”।
তিনি ধর্মব্যবসায়ীদের সম্পর্কে আরও বলেন, ধর্মব্যবসায়ীরা সীমা লঙ্ঘন করছেন আর নিশ্চয় সীমালঙ্ঘনকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন না। সুতরাং তাদের শাস্তি হচ্ছে এবং হবে। অতএব যারা ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করছে তাদের পুলোকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। আজ হোক, কাল হোক বাংলার মাটিতে তাদের ঠাই হবে না। যতদিন জননেত্রী শেখ হাসিনা জীবিত আছেন বাংলার মাটিতে কোনো জঙ্গির স্থান হবে না। বাংলার মানুষ এখন আর এত বোকা নয়। তারা এখন বুঝতে শিখেছে। আজ তারা বুঝতে শিখেছে মাওলানা নামধারী কিছু ধর্মব্যবসায়ী লোক ধর্মের নামে যে সমস্ত কর্মকাণ্ড করছে এগুলি ধর্মের সঙ্গে যুক্ত নয়।
হযরত মোহাম্মদ (সা.) যখন মে’রাজে গেলেন তখন আল্লাহ বললেন, আমার উম্মতের মধ্যে সব চেয়ে বেশি জাহান্নামি হবে নারী, তার পরে হবে আলেম, যাদের আমি এলেম দিয়েছিলাম, তাদের আমল ছিলো না। এই সমস্ত ধর্মজীবী আলেম হচ্ছে সেই লোকসকল যাদের আল্লাহ এলম্ দান করেছে তারা আমল করে না । আমি এদের বলি এখনো সময় আছে আমল করুন।
তিনি একজন ধর্মজীবী আলেমকে ইঙ্গিত করে বলেন, দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, তিনি বললেন নারী জাতি তেতুলের মতো। দেখে জিহ্বায় জল আসে। তবে কি আপনার পরিবারে কোনো মেয়ে নেই, তাদের ব্যাপারে যদি কেউ এমন নোংরা কথা বলে! কেমন লাগবে আপনার? আপনার স্ত্রীকে তেতুল গাছ বললে কি অশ্লীল শোনাবে না? এই বিদ্বান মানুষ এটি উচ্চারণ করতে পারেন ভাবলে আমি অবাক হয়ে যাই। আখেরাতের ময়দানে কিন্তু সকলকেই জবাব দিতে হবে।
তিনি সকল ধর্মের প্রতি সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অন্য ধর্মের ব্যাপারে কটাক্ষ করা ইসলামের নীতি বিরুদ্ধ। মুসলিম হয়ে যদি আমরা অন্য ধর্মের দেব-দেবীদের নিয়ে গালাগালি করি তবে অজ্ঞতা বসত সে আল্লাকে গালাগাল করতে পারে। আমার নবীকে গালাগাল করতে পারে আর সে জন্যে দায়ী হবে কে? সব ধর্মকে ভালোবেসে নিজের ধর্মের প্রতি নিষ্ঠাবান হতে হবে।
তিনি রসুলাল্লাহ সম্পর্কে বলেন, হযরত মোহাম্মদ (সা.) পৃথিবীর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। কারণ তাঁর উত্তম চরিত্র।
তিনি এমন একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে, কিছু কথা বলতে পেরে অত্যন্ত আবেগ আপ্লুত হয়ে সন্তষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি শেষ নবীর উম্মত হতে পেরে গৌরব প্রকাশ করেন এবং অন্য ধর্মের অবতার, মহামানবদের প্রতিও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।