Connect with us

কুড়িগ্রাম

ধানের মণ ৪শ থেকে ৫শ টাকা, হতাশ কৃষকরা

Published

on

Kurigram Boro farmer photo 29.04.16শাহ্ আলম, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রাম জেলার সর্বত্রই ইরি বোরো মৌসুমে ধান কাটামাড়াই শুরু হয়েছে। চলতি মৌসুমে রোগবালাই কম হওয়ায় প্রতি বিঘা জমিতে ১৬ থেকে ১৭মণ করে ধানের ফলন হয়েছে। কিন্তু উৎপাদন খরচ ও বাজার দরের মধ্যে ব্যবধান থাকায় কৃষকরা দারুন ভাবে হতাশ হয়ে পড়েছেন।
কৃষকরা জানান, প্রতিবিঘা জমির ধান কাটা ও মাড়াই করতে তাদের ২হাজার ৫শ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত গুণতে হচ্ছে। এছাড়া জমি তৈরি, চারা রোপন, সেচ, সার ও কীটনাশকের ব্যবহার করতে অগুনিত টাকা গুনতে হয়েছে। অথচ বাজারে প্রতিমণ ধানের দাম ৪শ৫০ থেকে ৫শ টাকা। সব মিলে হিসাব করলে ধানের উৎপাদন খরচই উঠছে না। এ অবস্থায় আমরা সাধারণ কৃষকরা মরনদশায় পড়ে গেছি।
জেলার বড় হাট নাগেশ্বরী, যাত্রাপুর, দুর্গাপুর, রায়গঞ্জ ও ভিতরবন্দ হাট ঘুরে দেখা গেছে কৃষকরা ঠেলাগাড়ী, রিকসা ও ভ্যানগাড়ী বোঝাই করে ব্রি-২৮জাতের ধান বিক্রী করতে নিয়ে এসে ক্রেতা না পেয়ে ফেরৎ নিয়ে যাচ্ছেন এবং অনেকে প্রয়োজন মেটাতে উপায়হীন হয়ে পানির দরে ৪শ৫০ থেকে ৫শ টাকা দরে বিক্রী করতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে হাট বাজার গুলোতে ধান ব্যবসায়ীরা নিজে কেনাকাটা না করে ছোটছোট ফরিয়া ও পাইকাদের মাধ্যমে অল্প মুল্যে ধান কিনে গুদামজাত করছেন বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
ভিতরবন্দ এলাকার কৃষক বাচ্চু মিয়া জানান, যেখানে এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন করতে খরচ হয় ৭/৮হাজার টাকা, সেখানে বাজারে প্রতিমণ ভেজা ধান বেচা কেনা হচ্ছে ৪শ৫০ টাকা ও শুকনো ধান বিক্রি হচ্ছে ৫শ টাকা দরে। তিনি বলেন, গ্রামীন ব্যাংক থেকে ১০হাজার টাকা ঋন নিয়ে দেড় বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ জাতের ধান আবাদ করেছি। ধান কেটেছি শুনে ব্যাংকের লোক বাড়ীতে এসে টাকা চাওয়ায় ৫-মণ ধান নিয়ে ভিতরবন্দ বাজারে এসে দেখি ধানের ক্রেতা নেই। তাই ফেরৎ নিয়ে যাচ্ছি।
নাগেশ্বরীর কৃষক মাহতাব উদ্দিন জানান, ৩০বিঘা জমিতে ইরিবোরো ধান আবাদ করেছি। বিজতলা থেকে কাটামারি পর্যন্ত প্রতি বিঘায় যে খরচ হয়েছে তা ধান বিক্রী করে পোষাচ্ছে না। কৃষক ধানের ন্যায্য মুল্য না পেলে ধান চাষ ছেড়ে দিতে পারে। ভিতরবন্দ এলাকার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোকছেদ আলী জানান, ফলন মোটামুটি ভাল হয়েছে। বাজার দরের ক্ষেত্রে আমাদের করার কিছু নেই।
নাগেশ্বরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাছুদুর রহমান জানান, টিভির সংবাদে শুনেছি সরকার প্রতি কেজি ধান ২৩টাকা মুল্য নির্ধারন করেছেন । কৃষকের নিকট থেকে ধান ক্রয়ের জন্য এখনও উপজেলা ভিত্তিক বরাদ্ধ পাইনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মকবুল হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ১লাখ ৮হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হলেও আবাদ হয়েছে ১লাখ ৯হাজার ৬০হেক্টর জমিতে। বর্তমানে ধানের দাম একটু কম হলেও সরকারী ভাবে ক্রয় শুরু হলে ধানের দাম বৃদ্ধি পাবে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *