Connect with us

আন্তর্জাতিক

পরমাণু চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ ইরানের

Published

on

10997286_654736867965941_1402839298105800162_nআন্তর্জাতিক ডেস্ক:

পরমাণু কর্মসূচি বিষয়ে আলোচনায় ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে সমঝোতার ঘোষণা আসার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই হোয়াইট হাউসের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ এনেছে তেহরান। সমঝোতার ভিত্তিতে ইরানের ওপর বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়ার বিষয়ে হোয়াইট হাউস ‘বিভ্রান্তিমূলক’ তথ্য দিচ্ছে উল্লেখ করে এ অভিযোগ তোলা হচ্ছে তেহরানের পক্ষ থেকে। আলোচনার সময়সীমা পার হওয়ার দু’দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) সবগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এক মত হওয়ার ঘোষণা আসে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ওই বৈঠক থেকে। ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত চুক্তিতে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার শর্ত হিসেবে আগামী পনের বছরের জন্য ইরান ইউরেনিয়ামের মজুদ তিন দশমিক ৬৭ শতাংশের বেশি করতে পারবে না বলে সীমাবদ্ধতা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে দেশটিকে তার শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র নতুন করে সাজাতে হবে, যাতে প্লুটোনিয়াম ব্যবহারে কোনো অস্ত্র তৈরি করা না যায়। এছাড়া, ইউরেনিয়াম পরিশোধন ও পারমাণবিক বোমা তৈরিতে ব্যবহৃত সেন্ট্রিফিউজের সংখ্যাও দুই-তৃতীয়াংশ কমিয়ে ফেলতে হবে। সমঝোতার খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি জানান, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ হয়েছে এমন নিশ্চয়তার পরই কেবল বিশ্বসম্প্রদায়ের নিষেধাজ্ঞা উঠে যেতে পারে। কেরির এই বক্তব্যের সূরেই সমঝোতার ব্যাপারে বিবৃতি দেয় হোয়াইট হাউসসহ মার্কিন প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো। ওবামা প্রশাসন সংশ্লিষ্টদের এ ধরনের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ অভিযোগ করেন, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসন মিথ্যা তথ্য দিয়ে মার্কিন জনগণ ও কংগ্রেসকে বিভ্রান্ত করছে। জাভেদের অভিযোগ, সমঝোতায় আসা মাত্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘ইরান/৫+১ বিবৃতি: পারমাণবিক কর্মসূচি সংক্রান্ত অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র’ এটা কি ঠিক? পরে তিনি এর সংশোধনী দিয়ে লেখেন, ‘ইরান/পি৫+১ বিবৃতি: পারমাণবিক কর্মসূচি সংক্রান্ত অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন’ এটার বিষয়ে কী হবে? অবশ্য, এর আগে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জাভেদ জানিয়েছিলেন, তার দেশের ইউরেনিয়াম মজুদের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ‘খুব সম্ভবত’ রাজি আছে। সেসময় তিনি আরও বলেন, ইরানের ওপর থেকে যাবতীয় পরমাণু সংশ্লিষ্ট নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে ও তার দেশের চলমান পারমাণবিক কর্মসূচিও চালিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সম্মতি আসতে পারে। তবে সবার আগে ইরানের ওপর ‘নিষেধাজ্ঞা‘ তুলে নেওয়ার বিষয়টিই গুরুত্ব পাচ্ছে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে। জাভেদ বলেন, সমাধানটা সবার জন্যই মঙ্গলজনক। কাজেই এতো তাড়াতাড়ি ‘ফ্যাক্ট শিট’ ব্যবহার করে চরকা কাটার কোনো দরকার নেই। সমঝোতার খবর আসার পর বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় জাভেদ সাংবাদিকদের জানান, ইরান তার চলমান পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। সেসময় তিনি বলেন, চলমান কর্মসূচি ধর্তব্যের মধ্যে নেই। আমরা আমাদের ইউরেনিয়াম মজুদসহ গবেষণা ও উন্নয়ন চালিয়ে যাবো। তিনি আরও জানান, ইরানের ভারী পানি পারমাণবিক চুল্লি আধুনিকায়ন করা হবে। সেই সঙ্গে কোম শহরের কাছে ভূগর্ভস্থ ফরডো পারমাণবিক চুল্লিও চালিয়ে নেওয়া হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে সেসময় বলেন, আমরা সেন্ট্রিফিউজ মজুদ করবো না, তবে নতুন সেন্ট্রিফিউজ সংযুক্ত করার সুযোগ পাবো। এর আগে, গত সোমবার (৩০ মার্চ) সুইজারল্যান্ডের লুসান শহরে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির প্রাথমিক ধাপের শেষ পর্যায়ে জ
াভেদ জারিফের সঙ্গে আলোচনায় বসেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি, ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড, ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরেন্ট ফ্যাবিয়াস, জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক-ওয়াল্টার স্টেইনমেয়ার, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্জেই ল্যাভরভ ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) আলোচনার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরবর্তী সময়ে তা আরও কিছু সময় চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু বুধবারও (০১ এপ্রিল) কোনো ফলাফল না এলে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে আলোচনা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) পর্যন্ত অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবারই চূড়ান্ত সমঝোতার খবর আসে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *