খেলাধুলা
বাংলাদেশের কাল স্বপ্নপূরণের ম্যাচ-প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রেরণা নেবার অনেক কিছুই আছে বাংলাদেশের। ২০১০ সালের ব্রিস্টলের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১১ বিশ্বকাপের প্রসঙ্গ আসে। ব্রিস্টলে জিতেছিলো বাংলাদেশ। এরপর্ যতোবার ইংল্যান্ডের নাম আসে ততবারই সামনে চলে আসে ২০১১ বিশ্বকাপ। চট্টগ্রামে সেই ম্যাচে আগে ব্যাট করা ইংল্যান্ডকে মাত্র ২২৫ রানে গুটিয়ে দিয়েছিলো বাংলাদেশ। জিতেছিলো ২ উইকেটে। আর তাতে স্পিনারদের ছিল মূল ভূমিকা। চার স্পিনার মিলে তুলে নিয়েছিলেন সাত ইংলিশ ব্যাটসম্যানকে।
শুরুতেই চলে আসে তাই স্পিন প্রসঙ্গ। তার আগে একটি হিসেব। কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে হলে ইংল্যান্ডকে তাদের বাকি দুই ম্যাচেই জিততে হবে। বাংলাদেশের পর হারাতে হবে আফগানিস্তানকে। আর বাংলাদেশের দুই ম্যাচের একটিতেই জিতলে চলে। নিউজিল্যান্ড ৫ ম্যাচের ৫টিতে জিতে অন্য উচ্চতায়। তাদের কথা ভুলে বেসামাল অবস্থায় থাকা ইংল্যান্ডকেই বাংলাদেশ টার্গেট করে ফেলেছে। সেটাই সুবিধাজনক।
আর সেই প্রসঙ্গেও চলে আসে স্পিনারদের কথা। ইংল্যান্ড স্পিনে দূর্বল। সেটা তো গেল বিশ্বকাপে বাংলাদেশ আরেকবার প্রমাণ করেছে। এবং শেষ তিন দেখায় যে ইংল্যান্ডকে দুবার হারালো বাংলাদেশ, সেখানেও সেই স্পিনারদের বড় ভুমিকা। তাই বাংলাদেশের এই ম্যাচে বাড়তি এক জন স্পিনার খেলানোর দাবি উঠেছে। বলা যেতে পারে এটা সময়ের দাবি।
তাহলে কি হবে বাংলাদেশ একাদশ? এনামুল হকের ইনজুরির কারণে উড়ে এসেছেন ইমরুল কায়েস। ইংল্যান্ডকে হারানো দুই ম্যাচে যার অসম্ভব ভালো স্মৃতি। দুটি ম্যাচেই ফিফটি করেছিলেন। বিশ্বকাপের ম্যাচটিতে ৬০ রান করে ম্যান অফ ত্য ম্যাচও হয়েছিলেন। দলের সাথে মানিয়ে নেয়ার সময় তেমন পান নি। সরাসরি একাদশে ঢুকে পড়বেন? হতে পারে। নাও হতে পারে। যদি হয় তাহলে সৌম্য সরকার মিডিয়াম পেসে দলের বাড়তি একজন বোলারের ভূমিকা পালন করবেন। দ্বিতীয় আরেকটি অপশন হলো তাইজুল ও আরাফাত সানির মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নেয়া। অভিজ্ঞতার বিচারে এগিয়ে থাকেন আরাফাত। আর তিনি সুযোগ পেলে সৌম্য সরকারকে দেখা যাবে ওপেনারের ভূমিকায়।
বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা এই ম্যাচের আবেদন, চাপ সবই টের পাচ্ছেন। সবার মুখে মুখে ফিরছে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার স্বপ্ন আর সাধের কথা। কিন্তু দলকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এটা আর দশটা ম্যাচের মতো সাধারণ এক ম্যাচ ভেবে নিলেই ভালো। মনের ভেতর যদি থাকে কোয়ার্টার ফাইনালের কথা তাহলে চাপটা বেড়ে যেতে পারে। আর সেই চাপে নিজেরাই নেজেদের সর্বনাশ না করে ফেলে বাংলাদেশ!
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১১ বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে তামিম ইকবাল ২৬ বলে করেছিলেন ৩৮ রান। আর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান তিনি। ২০১০ সালে ঢাকায় এক ওয়ানডেতে ১২০ বলে ১২৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তামিম। আর আগের ম্যাচেই ফর্মে ফিরেছেন। নিজেকে খুঁজে পেয়েছেন তামিম। ৯৫ রান করে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোরার হয়েছেন। তার ব্যাটের দিকেও তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের চারিপাশে এর মধ্যে একটা জয়ের আবহ তৈরি হয়েছে। ষোলো কোটি মানুষের সমর্থনের দলটাও ভাবছে, জানে এটা অনন্য এক সুযোগ। শেষ তিন ম্যাচে দুই জয় বাংলাদেশের ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। সেই সংখ্যাটা তিন করে কোয়ার্টার ফাইনালে চলে যাবার স্বপ্ন পূরণের ম্যাচ সামনে।
বাংলার অধিনায়ক মাশরাফি বলেছেন, “এই ম্যাচটা আমরা জিততে পারলে দল সংশ্লিষ্ট সবার জন্য তা হবে অনন্য সাধারণ স্মৃতি।” সেই স্মৃতিটা মনের মণিকোঠায় বাধিয়ে রাখার স্বপ্ন এখন বাংলাদেশের। সামনে সেই স্বপ্নপূরণের ম্যাচ।