Connect with us

জাতীয়

বিদ্যুৎ খাতে দেশীয় উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান অর্থমন্ত্রীর

Published

on

দেশের বিদ্যুৎ খাতে বিদেশি কোম্পানিগুলোর প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ায় এ খাতে নানারকম অনিয়ম জড়িয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী । তাই তিনি বিদ্যুৎ খাতে দেশীয় উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান করেন । গতকাল সোমবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, এসব কেলেঙ্কারির মধ্য দিয়ে দেশীয় উদ্যোক্তাদের সুযোগ খুঁজে নিতে হবে এবং পথ তৈরি করতে হবে। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সঙ্গে বৈঠকে সোমবার এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
আসন্ন বাজেট প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেটের আকার হবে ৪ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। অগ্রাধিকার দেয়া হবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সেনিটেশন। বরাদ্দ বেশি দেয়া হবে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ট্রান্সপোর্টেশন খাতে। আমি আশা করছি, আগামী বছরে বিদ্যুতের সরবরাহ ১৮ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হবে। আমাদের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে।

এর জন্য দরকার বিদ্যুতের। তাই বিদ্যুৎ খাতে দেশীয় উদ্যোক্তাদের সুযোগ খুঁজে নিতে হবে এবং পথ তৈরি করতে হবে। যেহেতু বিদ্যুৎ খাতে বিদেশি কোম্পানিগুলোর প্রতিযোগিতা চলছে এবং তারা নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছে। এর মধ্যে একটি বিদেশি কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এখানেই দেশি উদ্যোক্তাদের সুযোগ খুঁজে নিতে হবে। তিনি ব্যাংকিং খাত নিয়ে বলেন, খেলাপি ঋণ ব্যাংকিং খাতে বড় সমস্যা। ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণের ১১ শতাংশই খেলাপি। আর সরকারি ব্যাংকে এর পরিমাণ ৩০ শতাংশ।

এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংকের পরিচালককে ঋণ দেয়ার মাধ্যমে খারাপ প্র্যাকটিস করছেন। এটি ভালো নয়। তবে এ ধরনের ঋণ দেয়ার পরিমাণ আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেনি। ওই বৈঠকে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটের আকার হবে ৪ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব খাতে নতুন কিছু থাকবে না। তবে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি বাড়বে ১১ থেকে ১৫ শতাংশ।
বৈঠকে ঢাকা চেম্বারের পক্ষ থেকে আসন্ন বাজেটে প্রস্তাব তুলে ধরেন চেম্বারের প্রেসিডেন্ট আবুল কাশেম খান। এ সময় ডিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিল। ওই প্রস্তাবে কর্পোরেট কর হার হ্রাস, ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত শিক্ষা বিনিয়োগ নির্ধারণসহ কয়েকটি প্রস্তাব দেয়া হয়।

এরপর অর্থমন্ত্রী বলেন, এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংকের পরিচালককে ঋণ দিয়ে থাকেন। এটি একটি সমস্যা। তবে এটি বড় আকারে হচ্ছে না। আমরা যতটা বলি সে আকারে হচ্ছে না। তবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ একটি বড় সমস্যা। ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণ ১১ শতাংশ। সরকারি ব্যাংকগুলোয় এটি ৩০ শতাংশ। সরকারি ব্যাংকগুলোয় অনেক সমস্যাও আছে। তিনি আরও বলেন, সমস্যা থাকলেও সরকারি ব্যাংকগুলো কিছু কাজ করছে ঝুঁকি নিয়ে, যা অন্য ব্যাংক করবে না। সরকারের অনেক আর্থিক কর্মকাণ্ড সরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন প্রসঙ্গে বলেন, সরকারি চাকরিজীবীরা এখন ভালো বেতন পাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক তুলনায় ভালো অবস্থানে আছেন। ভালো বেতন প্রদান দুর্নীতি কমাবে। তবে সরকারের ভেতর দুর্নীতি যেটা আছে, এটি এ মুহূর্তে যাবে না। আমি আশা করছি, ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে দুর্নীতি থাকবে না। এটি মিনিমাইজ হবে। এরপর দেশের একটি ভালো চেহারা হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, সব সময় সঞ্চয়পত্রের সুদের হার আকর্ষণীয় রাখা হয়। তবে বর্তমান বাজারে ঋণের সুদের সঙ্গে সঞ্চয়পত্রের সুদের হারের মধ্যে পার্থক্য অনেক বেশি হয়ে গেছে। এটা রিভিউ করা উচিত।

মন্ত্রী আরও বলেন, আগামী বছরগুলোয় দারিদ্র্যবিমোচনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে। বর্তমানে ২২ দশমিক ২০ শতাংশ লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। এর মধ্যে হতদরিদ্রের সীমা হচ্ছে ১০ থেকে ১১ শতাংশ। অভিযোগ আছে, দারিদ্র্য কমেছে, পাশাপাশি বৈষম্য বেড়েছে। এটি সত্য, তবে এর জন্য আমরা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে বেশি। কারণ বিশ্বের অনেক দেশ মোট বাজেটে ২ থেকে আড়াই শতাংশ বরাদ্দ রাখছে এ খাতে। আমাদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ আছে মোট বাজেটের ৭ শতাংশ। সবচেয়ে ভালো সংবাদ হচ্ছে, এ কর্মসূচির লিকেজ নেই। এটি মনিটরিং করা হচ্ছে। আগামী বাজেটে একই হারে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হবে।

রাজস্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে নতুন কিছু নেই। রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি হবে ১১ থেকে ১৫ শতাংশ। ওই হিসাবে মোট বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয় ৪ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। বৈঠকে কর্পোরেট কর কমানোর আশ্বাস দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমান কর্পোরেট ট্যাক্স ৪০ শতাংশ, এটি অনেক বেশি। এ ট্যাক্স কমানোর বিষয়টি বিবেচনাধীন আছে।

সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, তবে এটা একধরনের সামাজিক নিরাপত্তা হিসেবে কাজ করে, তাই এতে বিনিয়োগকারী নিম্ন আয়ের মানুষের বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *