গোবিন্দগঞ্জ সংবাদদাতা, গাইবান্ধা: গোবিন্দগঞ্জে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চার দিন পরও সেই দুই যুবকের পরিচয় মেলেনি। অবশেষে বেওয়ারিশ হিসেবেই বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে লাশ দুটির দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। রোববার বিকেলে গাইবান্ধা শহরের পৌর কবরস্থানে তাদের দাফন সম্পন্ন করা হয়। এর আগে, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাখালি ব্রিজ এলাকার (হাওয়াখানা) করতোয়া নদীর সিসি ব্লকের পাশের গম ক্ষেত থেকে ২০-২৫ বছরের অজ্ঞাত দুই যুবককের দগ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দুটি গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়। গোবিন্দগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল গফুর জানান, লাশ দুটির পরিচয় সনাক্তের জন্য তাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হয়। তাদের পরিচয় উদঘাটনে বিভিন্ন জেলা, থানা ও ডিবি পুলিশকে তথ্য দেয়া হয়। কিন্তু তাদের পরিচয় সনাক্ত বা আত্মীয় স্বজনদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ফলে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আদালতের অনুমতি নিয়ে রোববার দুপুরে অঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে লাশ দুটি দাফন করা হয়। লাশ দাফনের সত্যতা নিশ্চিত করে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক জানান, ধারণা করা হচ্ছে, দুই যুবক ধনী পরিবারের সন্তান বা বড় ব্যবসায়ী। দুর্বৃত্তরা তাদের জেলার বাইরে থেকে এনে শ্বাসরোধে হত্যা পর আলামত নষ্ট ও পরিচয় গোপন করার উদ্দেশ্যে লাশে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। তাদের এক জনের পরণে জিন্স আরেক জনের পরণে গ্যাবাডিং প্যান্ট ও গায়ে জ্যাকেট ছিল। এছাড়া দু’জনের গলায় পেছানো গামছা আগুনে পুড়ে শরীরের সঙ্গে মিলে গেছে। দু’জনের পায়েই দামী জুতা ছিল। ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় গোবিন্দগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল গফুর বাদী অজ্ঞাত কয়েক জনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার রাতেই একটি হত্যা মামলা করেন। হত্যার তথ্য উদঘাটন ও জড়িতদের সনাক্ত করতে তারা তৎপর রয়েছেন। লাশের ডিএনও পরীক্ষার জন্য আলামত সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হলেও চার দিনেও জড়িত কাউকে সনাক্ত বা আটক করতে পারেনি পুলিশ। ফলে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতরা এখনও অধরা রয়েছেন। এমন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় একটি পরিবার হারিয়েছে তাদের আপনজন। পাশাপাশি দিন দিন রাষ্ট্রে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকেরা।