দেশজুড়ে
বেরোবিতে মধ্যরাতে হামলা, শিক্ষকসহ আহত ১৯
বেরোবি প্রতিনিধি:
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বুধবার দিবাগত রাত ১২ টা ১০ মিনিট থেকে ১২ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ২০ মিনিটের তাণ্ডবলীলা চালিয়ে দুর্বৃত্তরা আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকদের ওপর হামলা, অনশনের মঞ্চ এবং সমন্বিত অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের মঞ্চ ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়।এই হামলায় তিনজন শিক্ষকসহ মোট ১৯ জন শিক্ষার্থী আহত হয় বলে খবর পাওয়া গেছে ।
দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত রসায়ন বিভাগের শিক্ষক এইচএম তারিকুল ইসলাম এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান রিপনসহ চার শিক্ষার্থীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন- অর্থনীতি বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র শাহজাহান আলী, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ইমরান হোসেন ও সুজন কুমার পাল এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সাজু। এদের মধ্যে শিক্ষক তারিকুল ও শিক্ষার্থী শাহজাহান আলীর অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা। তারা দুজনেই মাথায় আঘাত পেয়েছেন। হামলায় আহত অন্যরা হলেন মার্কেটিং বিভাগের মনোয়ার, আর্গন, আজিজ, আরিফুল ও ইমরান, অর্থনীতি বিভাগের শিশির দত্ত এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাদ্দাম হোসেন।
প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে অনেকে চলে আসলেও ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান রিপন, রসায়ন বিভাগের শিক্ষক এইচ এম তারিকুল ইসলাম আমরণ অনশনের মুখপাত্র শাহাজাহান আলীর অবস্থা আশঙ্কাজক বলে জানা গেছে। তারা বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩য় তলায় ৬নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চিকিৎসাধীন রসায়ন বিভাগের শিক্ষক এইচ এম তারিকুল ইসলাম বলেন, এই হামলাকারীদের অনেককেই আমি চিনি। এখন তাদের নাম প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
এদিকে আহতদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মদদে এবং পুলিশের সামনে দুর্বৃত্তরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই হামলা চালায়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দায়িত্বরত উপ-পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম শফিক বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। জানা যায়, বুধবার বিকেল ৪টা থেকে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির সামনে হল, ক্যাফেটেরিয়া চালুকরণ ও দ্রুত ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণসহ ৮ দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন কিছু শিক্ষার্থী। রাত ৯টার পর থেকেই তাদের আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকি দিতে থাকে উপাচার্যপন্থী বিভিন্ন মহল। এমনকি কিছু বহিরাগতও তাদেরকে হুমকি দিয়ে যায়। এ অবস্থায় তারা পুলিশ ও প্রক্টরের কাছে নিরাপত্তা চাইলে তারা তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। রাত ১১টার কিছু পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর শাহজামান ও সহকারী প্রক্টর সিরাজ উদ দৌলা অনশণকারীদের পাশ দিয়ে যাওয়ার পরপরই রাত সোয়া ১২টার দিকে কিছু মুখোশধারী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়।
এই খবর ছড়িয়ে পড়লে রাত ১টার দিকে কয়েকশ’ সাধারণ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে ঢুকে বিক্ষোভ করে। পরে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যান।
বর্তমানে ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ক্যাম্পাসে বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।