আন্তর্জাতিক
ভারতে লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার পি এ সাংমা পরলোকে
মেঘালয়ের পশ্চিম গারো জেলার চাপাথি গ্রামে তার জন্ম। প্রান্তিক এই গ্রামের ছাপোষা পরিবারের ছেলেটি শৈশবেই উপলব্ধি করেছিলেন যে, শিক্ষাই একমাত্র ঘুরে দাঁড়ানোর পথ। তাই শিলংয়ের সেন্ট অ্যান্টনিজ কলেজ থেকে স্নাতক হয়েই থেমে থাকেননি, আসামের ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর হন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে। এই অসামান্য প্রতিভাবান ব্যক্তি আইন নিয়েও পড়াশোনা করেন।
ছাত্রাবস্থায় কংগ্রেসের মতাদর্শে আকৃষ্ট হন। ১৯৭৩ সালে তিনি মেঘালয়ের যুব কংগ্রেস সভাপতি হন। এর পরের বছরেই প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের পদ পান।
১৯৭৭ সালে তিনি তুরা কেন্দ্র থেকে প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হন। এরপর ওই কেন্দ্র থেকেই বেশ কয়েকবার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ১৯৮৮ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ৯১ সালে তিনি ফের সাংসদ নির্বাচিত হন।
পি এ সাংমা লোকসভার স্পিকার নির্বাচিত হন ১৯৯৬ সালে। দু বছর ওই পদে ছিলেন।১৯৯৯ সালে তিনি সোনিয়া গান্ধীর নেতৃত্বের বিরোধিতা করে কংগ্রেস ছাড়েন । এ সময় সাংমা অন্য দুই বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতা শারদ পাওয়ার এবং তারিক আনোয়ারের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি’।
এরপর ২০০৪-এ শারদ পাওয়ার সঙ্গে সোনিয়া গান্ধীর ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠায় অনুগামীদের নিয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন সাংমা। তবে ‘এন সি পি’-র প্রতীক দাবির লড়াইয়ে পাওয়ারের কাছে হেরে অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাতে তৈরি করেন ‘ন্যাশনালিস্ট তৃণমূল কংগ্রেস’। তবে সেই আঁতাত ছিল ক্ষণস্থায়ী ।
২০০৫-এর ১০ অক্টোবর ‘এ আই টি এম সি’-র সদস্য হিসেবে পদত্যাগ করে আবার তিনি ‘এন সি পি’-তেই ফিরে যান। ২০০৮ সালে সাংমা মেঘালয় বিধানসভা নির্বাচনে সময় দেয়ার জন্য চতুর্দশ লোকসভা থেকে ইস্তফা দেন । ২০১২ সালে নিজেকে রাষ্ট্রপতি পদের দাবিদার হিসেবে পেশ করেন পি এ সাংমা। তবে তখন সাংমার দল ‘এন সি পি’-ই তাতে অনুমোদন দেয়নি। ফলে, আবারও দলত্যাগী হন তিনি। তিনি রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে প্রণব মুখার্জির কাছে হেরে যান।
২০১৩ সালের ৫ জানুয়ারি পি এ সাংমা ‘ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টি’ নামে আরও একটি দল গঠন করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেই দলেই ছিলেন।