জাতীয়
মন্ত্রী পরিষদ সচিবসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে রুল
রোববার সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষে এএজি সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ও বাদীপক্ষে মো. আমিমুল এহসান জুবায়ের শুনানিতে অংশ নেন।
এর আগে গত ৭ এপ্রিল একনেকের সিদ্ধান্তের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন আলীগঞ্জ ক্লাব ও আলীগঞ্জ হাইস্কুলের সভাপতি কাওসার আহমেদ পলাশ।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আমিমুল এহসান জুবায়ের জানান, গত ২২ মার্চ একনেকের বৈঠকে নারায়ণগঞ্জের আলীগঞ্জ খেলার মাঠে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ১৫তলা আটটি আবাসিক ভবন নির্মাণের যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় সেই সিদ্ধান্তের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে গত ৭ এপ্রিল আলীগঞ্জ ক্লাব ও আলীগঞ্জ হাইস্কুলের সভাপতি কাওসার আহমেদ পলাশ একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন।
রোববার শুনানি শেষে আদালত গত ২২ মার্চ একনেকের বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, সে মর্মে মন্ত্রীপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব, অর্থসচিব, পরিকল্পনা সচিব, গণপূর্ত নারায়ণগঞ্জ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ আট কর্মকর্তার উপর রুল নিশি জারি করেছেন এবং আগামী ৪ (চার) সপ্তাহের মধ্যে তাদের রুলের জবাব দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আলীগঞ্জ ক্লাব ও আলীগঞ্জ হাইস্কুলের সভাপতি কাওসার আহমেদ পলাশ জানান, ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন আলীগঞ্জ মাঠটিতে দীর্ঘদিন ধরেই খেলাধুলা হয়ে আসছে। গত চার বছর ধরেই সেখানে শেখ রাসেল স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টসহ প্রতি বছরই টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হচ্ছে।
আমরা কিছুদিন আগে ২৫ হাজার এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষর সম্বলিত একটি আবেদন জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে পাঠিয়েছি। তবে এক শ্রেণির স্বার্থন্বেষী মহল নিজেদের স্বার্থে সেই স্মারক লিপিটি প্রধানমন্ত্রী বরাবরে পৌঁছায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গিকার রয়েছে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে খেলার মাঠ করার। সে হিসেবে ফতুল্লায় আলীগঞ্জ মাঠ ব্যতীত অন্য কোনো মাঠ নেই। ষড়যন্ত্রকারীরা চাইছে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গিকার যাতে বাস্তবায়ন না হয়।
অন্যদিকে, গণপূর্ত বিভাগ মাঠটি নিজেদের দখলে দাবি করে এবং সেখানে কোনো খেলার মাঠ নেই দাবি করে মিথ্যাচার করছে।
ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন আলীগঞ্জ মাঠটি রক্ষার দাবিতে একত্র হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা, শিক্ষার্থী ও নারায়ণগঞ্জের ক্রীড়া সংগঠকরা। মাঠটি রক্ষার ৩০ মার্চ সকালে মাঠ প্রাঙ্গনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও আলীগঞ্জ ক্লাবসহ বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠকরা। এতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ব্যানার ও বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ বলেন, আশির দশকের শেষ দিকে আমি নিজেও এ মাঠে খেলেছি। মাঠ রক্ষা করা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব। সে দায়িত্ববোধ থেকেই আজ এখানে এসেছি। শৈশবে এই মাঠে খেলেছেন আশরাফউদ্দিন চুন্নু, সম্রাট হোসেন এমিলির মতো ফুটবলাররা।
খেলেছেন সাবেক ক্রিকেট তারকা ফারুক আহমেদ, শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎসহ অনেক ক্রিকেটার। কিন্তু এ মাঠটিও হারিয়ে যেতে বসেছে। এখানে পিডাব্লিউডির অফিসার্স কোয়ার্টার্স করার উদ্যোগ চলছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আলীগঞ্জ মাঠে প্রায় চারশ কোটি টাকা ব্যয়ে আটটি ১৫ তলা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এসব ভবনে ৬৭২টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে।