Connect with us

খেলাধুলা

মাশরাফির থাবায় টাইগারদের অসাধারণ জয়

Published

on

মাশরাফি ম্যাজিকের সর্বশেষ শিকারে বাঙ্গালী ক্রিকেট প্রেমীদের প্রানের চাওয়া আজ পুরন ! ইংলিশদের বিপক্ষে হারতে বসা সিরিজে তাই ১-১ সমতা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটা এখন জিততেই পারে বাংলাদেশ!

অধিনায়ক মাশরাফি, মানুষ মাশরাফি কিংবা ব্যাটসম্যান মাশরাফি অথবা বোলার মাশরাফি। সব চরিত্রেই পরিপূর্ণ একজন মাশরাফি। অবিশ্বাস্য হারের পরও বিশ্বাস ফেরাতে তাই মনোবিদ লাগে না। একজন মাশরাফি সামনে থেকে নিজ হাতে একের পর এক কাজ করে পথ দেখান। বুঝিয়ে দেন, এভাবেই ঘুরে দাঁড়াতে হয়। লড়তে হয় বাঘের মতো। বিশ্বাস হারানো পাপ। আর বিশ্বাস থাকলে সবই সম্ভব। এই তো ৩১০ রানের টার্গেট তাড়া করে ৪ উইকেটে ২৭১ রান করেও অবিশ্বাস্য হার প্রথম ম্যাচে। মনোবলে তাতে প্রবল ধাক্কা লাগার কথা। বাঁচা-মরার ম্যাচে তারপর ব্যাটিংয়ে ঝুঁজতে থাকা। সেখানেও ব্যাট হাতে ঝড়। ২৯ বলে ৪৪ রানের ওই ইনিংসই তো ৮ উইকেটে ২৩৮ রানের ইনিংসের মূল অক্সিজেন। যাকে লড়াইয়ের পুঁজি করে জয়ের মধ্যে থাকা ইংলিশদের কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে আনা।

একবার মনে হয়েছিল ২০০ রানও হবে না। ৭৫ রান করে ফেরার পর মাহমুদ উল্লাহর হতাশাটা তাই খুব যৌক্তিক ছিল। কিন্তু গেল কয়েক ম্যাচে শেষে ধসে পড়া বাংলাদেশকে নিজের হাতে বদলালেন মাশরাফি। তিনি লিস ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরিয়ান। হালে না থাকলেও ব্যাট হাতে এক সময় জেতানোর ইতিহাস আছে মাশরাফির। ফিরে আসা নাসির হোসেনকে (২৭ বলে অপরাজিত ২৭) নিয়ে ৪৯ বলে ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৯ রানের জুটি মাশরাফির। ২৯ বলে তিন ছক্কা ২ চারে তার ৪৪ রানের গল্প অনেক দিন মুখে মুখে ঘুরবে।

বোলাররা তাতে অধিনায়কের কাছ থেকে নির্ভরতা পেলেন। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে আউট হয়েছিলেন। ফিরে প্যাড-ট্যাড বদলে আবার ঝাঁপিয়ে পড়া বোলিং শ্যু পরে। এরপর দ্রুতই বোলার-ফিল্ডার-সমর্থকদের মাঝে জয়ের বিশ্বাসটা ছড়িয়ে দেওয়া। দেখতে না দেখতে ২৬ রানে শীর্ষ ৪ ব্যাটসম্যান নেই ইংল্যান্ডের। মাশরাফি চার ওভারের মধ্যে তিন উইকেট নেন মহা দাপটে। জ্যাসন রয়ই (১৩) কেবল দুই অঙ্কে যান। নতুন বলে ইনিংস ওপেন করা সহ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান অসাধারণ স্পিনে বেন ডাকেটকে শূণ্য হাতে ফেরালেন। ইংলিশরা কাঁপতে থাকে।

কিন্তু বৃটিশ ইগো বলে কথা! দশ ওভারে ৪ উইকেট হারানোর পর ২৩.৩ ওভার পর্যন্ত বাংলাদেশের হতাশা। অধিনায়ক জস বাটলার (৫৭) জনি বেয়ারস্টোকে (৩৫) নিয়ে রুখে দাঁড়ান। স্টেডিয়ামে ব্যাটিংয়ের সময়ের নিস্তব্ধতা আবার। বদলী তাসকিন আহমেদও প্রথম স্পেলের দুই ওভারের শেষটায় তিনটা বাউন্ডারির মার খেয়ে যান বাটলারের কাছ থেকে। কিন্তু ৬ ওভার পরই আবার মাশরাফি বল তুলে দেন ভক্তদের ‘ম্যাশকিন’ এর হাতে।

এবার একা হাতেই যেন ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার পণ নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে তখনো উল্লেখযোগ্য কিছু করত না পারা তরুণ হার্টথ্রব বোলার। বেয়ারস্টো লাফিয়ে ওঠা এক ফনায় ব্যাট লাগান। জুটি ভাঙার উল্লাসে মাতে দল। যার অফ স্পিনের ওপর ভরসা করা হয়েছিল সেই নাসির হোসেনের বলে সাকিব অসাধারণ ক্যাচ নেন দৌড়ে। ফিল্ডাররাও জান বাজি রাখেন এদিন। মঈন আলি (৪) নেই। তাসকিন এবার পথের সবচেয়ে বড় কাঁটা বাটলারকে তুলে নেন। আপিলে সাড়া দেন না আম্পায়ার। মাশরাফি রিভিউ নেন। আম্পায়ার সিদ্ধান্ত বদলান। এলবিডাব্লিউ। উল্লসিত মাহমুদ উল্লাহর দিকে তেড়ে যান বাটলার! বাংলাদেশ আসলে এখানেই জিতে গেল বড় দলীয় মানসিকতায়। যখন তখন মোড় ঘুরাতে জানে তারা।

তাসকিনই ৩০তম ওভারে ক্রিস ওকসকে তৃতীয় শিকার বানিয়ে ফেলেন। ২৭ রানে ৪ উইকেট পড়লো। ১৩২ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের ফেরার পথ রুদ্ধ! ইংল্যান্ড দলে শেষ পর্যন্ত অল-রাউন্ডার। কিন্তু অতিমানব তো তারা নন! শেষ দুই উইকেটে ১০৭ রান!

কিন্তু শেষ জুটিতে ম্যাচের টানটান ম্যাচের উত্তেজনা অনেকটাই ফিরিয়ে আনেন আদিল রশিদ (অপরাজিত ৩৩) ও জেক বলের (২৮) শেষ উইকেট জুটি। ৩৭ বলে ৪৫ এল। কিন্তু মাশরাফির হাতেই গল্পের শেষটা লেখার ছিল ক্রিকেট বিধাতার! সাথে তার ব্যাটিং পার্টনার নাসিরও থাকলেন। মাশরাফির কাটারে মেরে বলের হাতে গিয়ে ধরা পড়লেন বেল। ৪ উইকেট শিকারী ক্যাপ্টেনের বলেই টাইগারদের মধুর সমাপয়ে।
বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৩৮
ইংল্যান্ড : ৪৪.৪ ওভারে ২০৪
ফল : বাংলাদেশ ৩৪ রানে জয়ী। বিডিপত্র/আমিরুল

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *