সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়। আলুর জমি গুলোতে এখন অনেকেই একই সাথে উচ্ছে, চিচিঙ্গা, মরিচসহ নানা ধরনের মিশ্র ফসল চাষ শুরু করেছে । প্রায় একই খরচে এই কায়দায় চাষ করে এই অঞ্চলের অনেক কৃষকরাই এখন স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে। গেল কয়েক বছর ধরে আলুর দাম না পেয়ে মুন্সীগঞ্জের আলু চাষিরা প্রায় দেউলিয়া হয়ে পড়েছিলো, এর পর থেকেই আলু চাষের পাশাপাশি প্রায় একই খরচে মিশ্র ফসলের দিকে ঝুঁকে পরতে থাকে এখানকার আলু চাষিরা। মুন্সীগঞ্জ ঘুরে দেখা যায় বর্তমানে এই অঞ্চলে চলছে আলু উত্তোলনের মহা উৎসব। বেশির ভাগ জমি থেকেই আলু উঠিয়ে তা সংরক্ষণ কাজেও ব্যাস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে এখানকার কৃষকদের। তবে আলু ঘরে তোলার আগে কৃষকদের বাড়তি খরচের ফাঁদে ফেলে দিয়েছে ফাল্পুনের আগাম বৃষ্টি। এবার আলু ঘরে তোলার আগেই ফাল্পুন মাসের কয়েক দফা আগাম বা অকাল বৃষ্টির কারণে কোন কোন জমির আলুতে যেমন পঁচন দেখা দিয়েছে, তে¤িœ জমির মাটি নীচের দিকে দেবে যাওয়ায় আলু উত্তোলনে বেড়েছে বদলি খরচ। এই বাড়তি খরচ গুনার সাথে সাথে কৃষকদের দুশ্চিন্তায় রেখেছে আলুর ন্যায্য দামের বিষয়টির উপরও। তবে এবার আলুর দাম আশানুরুপ না পেলেও মিশ্র ফসলী কৃষকরা নেই তেমন দুশ্চিন্তায়। মিশ্র ফসলী জমি গুলোতে দেখা যায় আলু তোলার পরের সপ্তাহ থেকেই উচ্ছে, চিচিঙ্গা তোলে বাজারে বেচঁতে শুরু করেছে কৃষকরা। এর পর মরিচ আর কোমড়াতো আছেই। জেলা কৃষি কর্মকর্তা , হুমায়ূন কবীর জানান, এবার অধিক লাভের আশায় মুন্সীগঞ্জে আড়াই হাজার হেক্ট্রর আলুর জমিতে হয় মিশ্র ফসল চাষ। তাঁর আশা দিনে দিনে এই কায়দায় চাষাবাদের দিকে পুরোপুরি ঝুঁকে পরবে এই জেলার কৃষকরা। তিনি আরো জানান, মিশ্র চাষের ফলে অতি দ্রæত স্ববলম্বী হয়ে উঠবে এখানকার কৃষি পরিবারগুলো। সিরাজদিখান উপজেলার বালুর চর ইউনিয়নের কৃষক আরিফ হোসেন জানান, আলু চাষ করে বেশ কয়েক বছর ধরে তারা লোকসানে পরে, এর পর থেকে পাশের জমির মালিক আনোয়ার হোসেনের মিশ্র চাষের বিষয়টি লক্ষ্য করে সেই দিকে ঝুঁকে পরে তাঁরা, আরিফ আরো জানান আলুর জমিতে একই বদলি খরচে আমরা একসাথে কয়েকটি ফসল চাষ করতে পারছি , শুধু এতে আনুসাঙ্গিক সামান্য খরচ বাড়ে। কৃষক আরিফের জমির মতো বালুর চরের প্রায় সব আলুর জমিতেই দেখা যায় মিশ্র ফসলী চাষ। তবে মুন্সীগঞ্জের অন্যান্য উপজেলাগুলোতে এই কায়দার চাষ তেমন একটা চোখে পরেনি। মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী এবার ৩৮,৫৫০ হেক্ট্রর জমিতে আলুর চাষ হলেও মিশ্র ফসলী চাষ হয় আড়াই হাজার হেক্ট্রর জমিতে। অধিক সম্ভবনাময় এই কায়দার চাষের দিকে কৃষকদের উৎসাহিত করে তোলতে কৃষি অধিদপ্তর প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান, জেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ূন কবীর।