Connect with us

দেশজুড়ে

রাবি সংলগ্ন এলাকা এখন আতঙ্কের জনপদ

Published

on

রাজশাহী প্রতিনিধি:
সংঘর্ষ, ভাঙচুর, বোমাবাজি ও ককটেল বিস্ফোরণসহ পুলিশের গণগ্রেফতারে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকাগুলো এখন আতঙ্কের জনপদে পরিণত হয়েছে। দিনের বেলায় এসব এলাকা কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই ভূতুড়ে অবস্থা বিরাজ করে। একদিকে যেমন দেশের চলমান হরতাল-অবরোধের প্রভাবে এলাকাগুলোতে সংঘর্ষ, বোমাবাজি ও ককটেল বিস্ফোরণের মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে অপরদিকে সহিংসতা বন্ধের নামে পুলিশের গণগ্রেফতার আর ব্যাপক ধর-পাকড়ে আতঙ্কে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। গ্রেফতার এড়াতে রাতের বেলা পুরুষ শূন্য থাকে বিশ^বিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর, কাজলা, তালাইমারী, মেহেরচন্ডী ও বুধপাড়া এলাকাগুলো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকাগুলোতে প্রায় তিন শতাধিক ছাত্রাবাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী অবস্থান করে থাকেন। বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল কর্মীরা এসব ছাত্রাবাসে অবস্থান করে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে গত ৫ জানুয়ারি থেকে ২০ দলীয় জোটের ডাকা অনির্দিষ্টকালের অবরোধ-হরতাল কর্মসূচিতে এসব এলাকায় প্রতিনিয়ত ব্যাপক সংঘর্ষ, হাতবোমা ও ককটেল বিস্ফোরণের মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে। অবরোধ চলাকালীন গাড়িগুলোতে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে গাড়িতে ককটেল নিক্ষেপ, ভাঙচুর ও আগুন দিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। অবরোধের এ কয়দিনে এসব এলাকায় প্রায় শতাধিক হাতবোমা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাসহ প্রায় দুই শতাধিক যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের সাথে ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াও চলছে প্রতিনিয়তই। এসব ঘটনায় দুর্বৃত্তদের ধরতে এলাকাগুলোতে চলছে পুলিশের অভিযান। এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের আটক করা হয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। এদিকে এসব এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি আর গণগ্রেফতারে আতঙ্কে রয়েছে ছাত্রাবাসগুলোর শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকি যে কোন সময় দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হতে পারেন এমন ভয়ে বাইরে বের হচ্ছে না তারা। এছাড়া কোন ধরনের বোমাবাজি, ককটেল বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলে ছাত্রাবাসে থাকা শিক্ষার্থীদের চরম হয়রানির শিকার হতে হয়। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে দুর্বৃত্তরা ককটেল বিস্ফোরণ-গাড়ি ভাঙচুর করে পালিয়ে গেলেও পুলিশ দুর্বৃত্তদের ধরতে না পেরে আশপাশের ছাত্রাবাসগুলোতে অভিযান চালিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আটক করে থানায় নেয়াসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করে থাকে। পুলিশের এমন হয়রানির কারণে এসব মেসগুলো এখন অনেকটাই শিক্ষার্থীশূন্য।
একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, ক্যাম্পাস খোলার পর আমাদের অনেকের পরীক্ষা ছিল, কিন্তু অবরোধের কারণে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বিভাগ বলেছে অবরোধ তুলে নিলেই পরীক্ষা শুরু করা হবে। যে কোন সময় অবরোধ তুলে নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই আমরা বাড়ি যেতে পারছি না। ফলে বাধ্য হয়েই মেসে থাকতে হচ্ছে। দুর্বৃত্তরা বোমাবাজি, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়, কিন্তু পুলিশ তাদের ধরতে না পেরে ছাত্রাবাসগুলোতে অভিযান চালিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আটক করে এবং বিভিন্নভাবে হয়রানি করে। পুলিশি হয়রানির থেকে বাঁচতে অনেকসময় বাইরে বের হতে ভয় পান বলে জানান শিক্ষার্থীরা। একই অভিযোগ করেন স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দাও। এ ব্যাপারে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, অবরোধের নামে নাশকতাকারীদের ধরতেই পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। অনেক সময় দুর্বৃত্তরা নাশকতা করে আশপাশের ছাত্রাবাসগুলোতে পালিয়ে থাকে, তাই আমরা বিভিন্ন ছাত্রাবাসে অভিযান চালিয়ে অনেককে আটক করে থাকি। শিক্ষার্থীদের হয়রানির ব্যাপারে ওসি বলেন, আমরা কখনই সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি করি নি। কেবল যারা বিভিন্ন নাশকতার সাথে জড়িত তাদেরকেই আটক করা হয় বলে জানান তিনি।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *