দেশজুড়ে
লামায় ডেসটিনির বাগান উজাড়, থানায় মামলা
লামা প্রতিনিধি, বান্দরবান:
জানা যায়, ডেসটিনি গ্র“পের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন নামে শুরু করে দেশের একমাত্র বাণিজ্য বনায়ন।
সেই উপলক্ষ্যে ২০০৬ সাল থেকে সারা দেশে প্রায় ৬ কোটি গাছ লাগানোর চিন্তা মাথায় রেখে শুরু করে বৃক্ষরোপণ অভিযান। সেই লক্ষ্যে শুধুমাত্র বান্দরবানে প্রায় ৫ হাজার একর জায়গায় রোপণ করা হয় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। যেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সেগুন, আকাশমনি, বেলজিয়াম, হাইব্রিড, রাবারসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। আর জমিগুলো সংগ্রহ করা ক্রয় ভিত্তিক, লিজ ভিত্তিক এবং অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে। কিন্তু বিভিন্ন সময় মামলা জটিলতার কারণে সম্পূর্ণ গাছ লাগাতে পারে নি ডেসটিনি গ্র“প। কোম্পানির হিসাব মোতাবেক ২০০৬ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ৮৬ লক্ষ গাছ রোপণ করা হয়। বর্তমানে বাগানগুলো হুমকির মুখে।
আরও জানা যায়, ২০১২ সালে ডেসটিনির কর্তাব্যক্তিরা মামলার বেড়াজালে পড়ে কোর্টে আত্মসমর্পণ করেন এবং পরবর্তীতে তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু প্রায় তিন বছর হয়ে গেলে এখনও জামিনে মুক্ত হতে পারেন নি তারা। সাথে সাথে সেই সময় কোম্পানির সমস্ত ব্যাংক হিসাবও জব্দ করা হয়। যার কারণে বনায়নে দায়িত্বে থাকা হাজার হাজার কর্মকর্তা, কর্মচারী বেতন ভাতা না পেয়ে চাকুরি ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অসাধু চক্র বন ও ভূমিদস্যু রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দিনের পর দিন উজাড় করে চলছে ডেসটিনির বাগান।
ডেসটিনির একজন কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, আদালতের নির্দেশ মোতাবেক ডেসটিনির সমস্ত মালামাল জব্দ করা হয় এবং সেই সম্পদগুলো হেফাজতের দায়িত্ব দেয়া হয় বাংলাদেশ পুলিশকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সারাদেশে গড়ে উঠা ডেসটিনির হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ লুটপাট হয়ে চলছে।
এদিকে গত ১লা জুলাই তারিখে ডেসটিনির বাগানের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় একজন কেয়ারটেকার খোদা বক্স বাদী হয়ে লামা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ২৭১/১৫, এদিকে ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশনে দায়িত্বে থাকা সাবেক কর্মকর্তা ও পরিবেশ বিজ্ঞানী শাহানাজ পারভীন মনে করেন, ডেসটিনির বনায়ন দেশের সম্পদ, জনগনের সম্পদ। তাই এগুলো রক্ষা করার দায়িত্ব সকলের রয়েছে। কারণ এইভাবে বন উজাড় হতে থাকলে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য বিলুপ্ত হবে, তেমনি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা লক্ষ লক্ষ গ্রাহকের আমানত বিনষ্ট হবে।