Connect with us

আন্তর্জাতিক

শর্তসাপেক্ষে স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যেতে রাজি ইয়েমেন সরকার

Published

on

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:   হাউথিদের দখলে থাকা সরকারি কার্যালয় ছেড়ে দিলেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে যেতে সম্মত হবে সরকার, এমনটাই জানালেন ইয়েমেনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ ইয়েসিন। জেনেভায় জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় চলা আলোচনায় মহাসচিব বান কি মুন অন্তত দুই সপ্তাহ যুদ্ধবিরতির জন্য আহ্বান জানানোর পর এমন কথা বলেন তিনি।

তবে পরিস্থিতির চাপেই সরকারি কার্যালয় দখল করতে হয়েছে উল্লেখ করে হাউথি নেতারা জানায় জেনেভা আলোচনা থেকে কোন ইতিবাচক পরিবর্তন আশা করছে না তারা।

এদিকে জেনেভা শান্তি আলোচনার মধ্যেই ইয়েমেনে হাউথি নেতাদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট।

সোমবার বিকেলে ইয়েমেনের রাজধানী সানায় হাউথি কমান্ডার ফুয়াদ আল এমাদের বাসভবন লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট। দফায় দফায় গোলা বর্ষণে গুড়িয়ে যায় এই জ্যেষ্ঠ হাউথি নেতার ঘরবাড়ি। তবে হামলার সময় তিনি বাড়িতে না থাকায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানায় গণমাধ্যম।

এই অবস্থায় ইয়েমেনে চলমান সংঘাতের একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে সোমবার থেকে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় শুরু হওয়া বৈঠক নিয়ে আশায় বুক বেধেছে দেশটির যুদ্ধ-বিধ্বস্ত মানুষ।

এক ইয়েমেনি বলেন, আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি যেন এই আলোচনা সফল হয়। ইয়েমেনিরা একসঙ্গে একই টেবিলে বসে খালি হাতে ফিরবে না।

আরেক ইয়েমেনি বলেন, দুই পক্ষ যদি আমাদের মঙ্গলের কথা চিন্তা করে নিজেদের ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থগুলো বিসর্জন দিতে পারে তবে আলোচনা সফল হবেই।

যুদ্ধের কবলে পড়া হত-দরিদ্র এই মানুষগুলোর কথা বিবেচনা করে আসন্ন রমজানকে কেন্দ্র করে অন্তত দুই সপ্তাহের একটি যুদ্ধবিরতির জন্য সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। বিশ্বসংস্থার মধ্যস্থতায় জেনেভায় চলমান বৈঠকে যুদ্ধরত সব পক্ষকেই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ছাড় দিতে হবে বলে উল্লেখ করেন মুন।

জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেন, আমি চাই এই আলোচনায় যারা অংশ নিয়েছে তারা সবাই শান্তি প্রতিষ্ঠাকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে। রমজানে শান্তির জন্য প্রার্থনা করে গোটা মুসলিম বিশ্ব। ইয়েমেনি জনগণের অধিকার আছে সেই প্রার্থনা করার। এজন্য ঠিক এই সময়টাতে অন্তত দুই সপ্তাহ মানবিক যুদ্ধবিরতি খুবই দরকার।

জাতিসংঘের এই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে শর্ত সাপেক্ষে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় হাদি সমর্থকরা। তবে তার আগে হাউথিদের অধিকৃত সকল সরকারি কার্যালয় ছেড়ে দিতে হবে বলে দাবি তাদের।

ইয়েমেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ ইয়েসিন বলেন, ইয়েমেনের প্রতিটি অফিস, স্কুল কলেজসহ নাগরিক অবকাঠামোগুলো যতদিন হাউথিদের দখলে রয়েছে, ততদিন যুদ্ধবিরতির বিষয়টি অর্থহীন। আমরা সত্যিকার যুদ্ধবিরতি চাই।

এদিকে জেনেভা আলোচনায় একদিন পর যোগ দেয় হাউথিরা। যে ফ্লাইটে তাদের জেনেভায় যাওয়ার কথা ছিল, সেটির সৌদি আরবে যাত্রা বিরতির কথা থাকায় সেটি বাতিল করে পরদিন জেনেভা পৌঁছে তারা। সৌদিতে যাত্রা বিরতির বিষয়টি সরকারের চক্রান্ত বলে অভিযোগ করেছে হাউথিরা।

হাউথি প্রতিনিধি সাইফ আল ওয়াশলি বলেন, সরকারি কার্যালয় থেকে অস্ত্র ও সেনা প্রত্যাহার আমাদের দেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়। এক্ষেত্রে বিদেশি শক্তিদের সাহায্য নেয়ার কোন দরকার ছিলো না। আমাদের প্রশাসন শুরু থেকেই বিদেশীদের হাতের পুতুল।

জেনেভা আলোচনার মধ্য দিয়ে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে যাবার কথা থাকলেও সৌদি জোট বা ইয়েমেনি প্রেসিডেন্ট কেউই তা মেনে না নিয়ে শর্ত জুড়ে দিয়েছেন বলে জানান হাউথি মুখপাত্র। তাই এই বৈঠক থেকে সাধারণ ইয়েমেনিদের আশা করার কিছু নেই বলেও মন্তব্য হাউথিদের।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *