দেশজুড়ে
শার্শার রায়হান থাই পেয়ারা চাষ করে এখন স্বাবলম্বী
শার্শা প্রতিনিধি, যশোর:
‘থাই-৩’ হাইব্রিড জাতের পেয়ারায় ভরে গেছে শার্শা উপজেলার মাঠের পর মাঠ। শার্শায় এখন বারো মাসই পাওয়া যায় পেয়ারা। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) উদ্ভাবন করা ‘থাই-৩’ হাইব্রিড জাতের পেয়ারা চাষ করে কৃষকদের ভাগ্য খুলে গেছে। শার্শার পেয়ারা চাষি রায়হান উদ্দিন এবার ৫০বিঘা জমিতে চাষ করেছেন এ জাতের পেয়ারা গাছ। ছোট ছোট পেয়ারায় ভরে গেছে গাছ। বছর শেষে সকল উৎপাদন খরচ বাদে ২০ লাখ টাকা ঘরে আনতে পারবেন বলে আশা করছেন এই কৃষক।
শার্শা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুমার সরকার বলেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবন করা ‘থাই-৩’ হাইব্রিড জাতের থাই পেয়ারা চাষ ছড়িয়ে পড়েছে যশোরের শার্শা উপজেলায়। শীতকালে পাওয়া যায় দেশি বিভিন্ন জাতের পেয়ারা। আর থাই-৩, ৫ ও ৭ জাতের পেয়ারা পাওয়া যায় বারো মাসই। গাছগুলো দেখতে আকারে ছোট হলেও পেয়ারাগুলো দেশি পেয়ারার চেয়ে বেশ বড় হয়। দেখতে গোলাকার এবং হলুদ ও সবুজ দুই রঙেরই হয়ে থাকে। ওই পেয়ারার প্রতিটির ওজন ২শ’ থেকে ৫শ’ গ্রাম। প্রতি কেজি পেয়ারা বিক্রি হয় ৮০ থেকে ১৩০ টাকায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বেনাপোল বাজার থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তরে বাহাদুরপুর বাওড়। বাওড়ের পশ্চিমে মেদের মাঠ। এই মাঠের জমিতে কখনও কৃষকরা ফসল ফলাতে পারেনি। ওই মাঠের ৩৬ বিঘা জমি দশ বছরের জন্য ইজারা নিয়ে থাই জাতের পেয়ারা চাষ করে মাঠের বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছেন পেয়ারা চাষি রায়হান উদ্দিন।
রায়হান উদ্দিন বলেন, চার বছর আগে রাজশাহী বেড়াতে গিয়ে ওখান থেকে ‘থাই থ্রি’ জাতের পেয়ারার চারা দেখতে পাই। সখের বশে ৪ বিঘা জমিতে চাষ করা যায় এমন সংখ্যক চারা কিনে আনি। পরে মেদের মাঠের পতিত জমিতে চারাগুলো লাগাই। তিন বছরে আমার লাভ হয়েছে ১৯ লাখ টাকা। এবার ওই মাঠের ৩৬ বিঘা জমিতে ৬ হাজার পেয়ারার চারা লাগিয়েছি। মেদের মাঠ ছাড়াও চৌগাছায় আরো ১৪ বিঘা জমিতে পেয়ারা গাছ লাগিয়েছি। চলতি বছর সকল খরচ খরচা বাদে ২০লাখ টাকা ঘরে আসবে বলে আশা করছেন এই কৃষক।
“পেয়ারা ক্ষেতে সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া, লাউ, ঝাল, বেগুন, টমেটো মূলা, কলা ও সবজ্বি বিক্রি করেও বছরে আয় হচ্ছে লাখ টাকার উপরে।”
পেয়ারা ক্ষেতের পাহারাদার ওমর আলী বলেন, ক্ষেত দেখভালের জন্য ৬ জন নিয়মিত শ্রমিক কুড়ে বেঁধে মাঠেয় থাকেন। অন্যান্য কাজের জন্য সপ্তায় দু’দিন ৫০ থেকে ৬০ জন শ্রমিক এই বাগানে কাজ করেন।
অসময়ে ফল হওয়ায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে পেয়ারার। অধিক লাভের আশায় থাই পেয়ারা বেনাপোল, ধান্যখোলা, কাশিপুর, ফুলসরা ও চৌগাছার বিভিন্ন এলাকার দেড়শতাধিক বিঘা জমিতে চাষ করা হয়েছে বলে হীরক কুমার জানিয়েছেন।
শার্শা উজেলার বাহাদুরপুর বাওড়সংলগ্ন মেদের মাঠে রায়হান উদ্দিনের বিস্তৃর্ণ ক্ষেতে “পেয়ারা ক্ষেতে সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া, লাউ, ঝাল, বেগুন, টমেটো ও কলা চাষও হচ্ছে।