Connect with us

বিবিধ

সব কাজ গুছিয়ে দেবে রোবট!

Published

on

রকমারি ডেস্ক:
মেয়েটির গুণের শেষ নেই। সে ব্যক্তিগত সহকারীর কাজ করে। পাশাপাশি আলোকচিত্রী, পরিচারিকা ও বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীর দায়িত্বগুলোও সামলাতে পারে। আসলে সে একটি রোবট। মানুষের ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের জন্য অনন্য এই যন্ত্রমানবী। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিভিত্তিক রোবট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রোবটবেস তৈরি করছে ব্যক্তিগত ব্যবহারোপযোগী এই বিশেষ যন্ত্র। এই রোবট বাড়ি এবং কর্মক্ষেত্রে হরেক রকমের নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজকর্ম করে দিতে পারবে, বাতি জ্বালানো থেকে সামাজিকতা রক্ষার মতো কাজেও মানুষের সহায়ক হবে। এমনকি ঘুমানোর সময় শিশুদের গল্পও পড়ে শোনাতে পারবে এই রোবট। পাশাপাশি গল্পের ধরন অনুযায়ী শয়নকক্ষের আলোকসজ্জাও পাল্টে দিতে পারবে বলে জানিয়েছেন নির্মাতারা। নেভাদা অঙ্গরাজ্যের লাস ভেগাসে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল কনজিউমার ইলেক্ট্রনিকস শো ২০১৫ নামের প্রদর্শনীতে সম্প্রতি ওই বিশেষ রোবটের প্রথম নমুনা উপস্থাপন করা হয়েছে। রোবটবেসের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ডুই হুইন বলেন, ২০ বছর আগে ব্যক্তিগত কম্পিউটার এসে সবকিছু বদলে দিয়েছিল। আর স্মার্টফোন আসার পর পেরিয়েছে ১০ বছর। জীবনধারায় এসেছে অনেক পরিবর্তন। কম্পিউটার ও স্মার্টফোনের পরবর্তী যুগান্তকারী ইলেকট্রনিক পণ্য হিসেবে ব্যক্তিগত রোবটটিকে সহজ ব্যবহারোপযোগী রূপ দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
বাজারে এখন নানা ধরনের রোবট পাওয়া যায়। তবে সেগুলো মূলত দুই শ্রেণির: খেলনা রোবট এবং কলকারখানায় কাজে লাগানোর উপযোগী রোবট। রোবটবেস এমন একধরনের রোবট বানাতে চায়, যা ব্যবহার করে সাধারণ লোকজন আনন্দ পাবে। পাশাপাশি মানুষের দৈনন্দিন নিত্যকর্মে সেগুলো সহজে মানিয়ে নিতে পারবে।
ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কেমন হবে রোবটগুলো। এরা নানা রকমের সামর্থ্যের প্রমাণ দেবে। মানুষের মুখভঙ্গি বা অভিব্যক্তি বুঝতে পারবে। চারপাশের জিনিসপত্র চিনতে পারবে এবং সেগুলোর চারপাশে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিচরণ করতে পারবে। যদি আপনি বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন, এসব রোবট অতিথিদের ছবি তুলে দেওয়ার মতো কাজ করে দেওয়াসহ নানাভাবে সাহায্য করতে পারবে।
ব্যক্তিগত রোবট মানুষের কথাবার্তা বুঝতে পারবে এবং বিভিন্ন অনুরোধে সাড়া দেবে। এরা আপনাকে বিভিন্ন সংবাদ ও আবহাওয়া বার্তা জানিয়ে দেবে, গান বাজিয়ে শোনাবে এবং সভার মতো জরুরি কাজকর্মের কথা মনে করিয়ে দেবে। মানুষের কথাবার্তার অর্থ বোঝার জন্য রোবটগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। রোবটবেসের নমুনা রোবট-নারীর নাম দেওয়া হয়েছে মায়া। নির্মাতারা এটির জন্য আরও অন্তরঙ্গ চেহারা, নাম ও কণ্ঠস্বর তৈরি করার চেষ্টা করছেন। ডুই হুইন বলেন, প্রদর্শনীর আগে তারা ভেবেছিলেন, রোবটটির কারিগরি বিষয় নিয়ে অনেক প্রশ্ন করা হবে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি যে প্রশ্নটি শুনতে হয়েছে তা হলো, ‘আমি কি রোবটটির চেহারা পাল্টে পুরুষের মুখ জুড়ে নিতে পারব?’
রোবটটির সফটওয়্যার তৈরির জন্য রোবটবেস এক সেট সমাধান পদ্ধতি ব্যবহার করেছে, যেগুলো তথ্যের ধরন শনাক্ত করে সেগুলোকে পরিচিত অন্য তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে অর্থ খুঁজে নিতে পারে। মানুষের মস্তিষ্কও অনেকটা একই পদ্ধতিতে কাজ করে। ব্যক্তিগত ব্যবহারোপযোগী রোবটটি অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলে। এতে বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করা সম্ভব। চলতি বছরের শেষ নাগাদ রোবটটির বাণিজ্যিক নমুনা বাজারে সরবরাহ করার ব্যাপারে আশাবাদী নির্মাতারা।
এ ধরনের রোবটের প্রচলন হলে মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কাও করেছে কেউ কেউ। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন হুইন। ব্যক্তিগত রোবট যাতে কারও তথ্য অন্যের সঙ্গে বিনিময় না করে, তা নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করলে মানুষ হুমকির মুখে পড়তে পারে’ এমন আশঙ্কাও প্রত্যাখ্যান করেছেন হুইন। তিনি বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধাগুলো এত ব্যাপক যে কিছু অসুবিধা থাকলেও সেগুলো আড়ালে চলে যাচ্ছে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *