ঢাকা বিভাগ
সালথায় কাগদি মাদ্রাসার আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম কাগদি হাফেজিয়া মাদ্রাসা মাঠে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রকল্পের অধীনে ২য় পর্যায় ১,২২,২৫,৮০১ (এক কোটি বাইশ লক্ষ পঁচিশ হাজার এক) টাকা ব্যায়ে নির্মাণ হচ্ছে এ কাজ। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার যোগসাজসে নির্মান কাজে অনিয়ম হয়েছে।
জানা যায়, বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে ২০১৫ ইং সালের ৩০ আগষ্ট তারিখে দরপত্র বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ৭ ও ৮ নভেম্বার দরপত্র মুল্যায়ন কমিটির ১১ ও ১২তম সভায় ফরিদপুরের ঝিলটুলী “মেসার্স নিশাত ট্রেডার্স” উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুমতি পান। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার তত্বাবধানে কাজের ওয়ার্ক প্লান অনুযায়ী ২৭ ডিসেম্বার ২০১৫ থেকে ১৩ মে ২০১৬ ইং তারিখের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও অদ্যবধি তা শেষ হয়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কাজী লিয়াকত হোসেনের যোগসাজসে উক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণাধীন আশ্রয়কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ভিত্তি, কলাম, ছাদ ইত্যাদি কাজে ব্যাবহার করেছে নিম্ন মানের সামগ্রী। প্রকল্পের কাজ শুরু করার আগে ল্যাবরেটরি থেকে প্রতিটি নির্মাণ সামগ্রীর গুনাগুণ পরীক্ষা করবার কথা থাকলেও তা সম্পূর্ণ পরীক্ষা করা হয়নি। কাজ শুরু করার আগে অবশ্যই সাইট অফিস ও গার্ডশেড নির্মাণ এবং কিউরিং ও ইট-খোয়া, পাথর ভিজানোর জন্য চৌবাচ্চাসহ সুপেয় মিঠা পানির ব্যবস্থার করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি বলে চাউর আছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাইলিংয়ে ৪২ফুট লম্বা ৪২টি বল্লিতে নিম্নমানের কাটা পাথরের সাথে বেশির ভাগ কুচি পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ কাজে নিম্নমানের বালু, ইট ও ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। এছাড়াও আশ্রয়কেন্দ্রে নির্মাণ কাজ তদারকির জন্য সার্বক্ষণিকভাবে অন্ততঃ পক্ষে ১জন দক্ষ প্রকৌশলী নিয়োজিত থাকার কথা থাকলেও একাধিকবার সরেজমিনে গিয়ে কাউকে খুজে পাওয়া যায়নি। পিআইও নিজেই প্রকৌশলীর তদারকির দায়িত্বভার গ্রহন করেছেন। তবে নির্মাণাধীন প্রকল্প কাজের সাইডে তাকে কখনও পাওয়া যায়নি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অত্র প্রকল্পের কাজের অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য প্রকল্প বিল উত্তোলনের ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কোন স্বাক্ষর গ্রহন করেনি। তাহার অনুমোদন ছাড়াই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ১ম ও ২য় কিস্তিতে মোট ৭৩ লক্ষ টাকা বিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পরিশোধ করেছেন। উক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে আতাত করে পিআইও কমিশন মানি হিসাবে ৩ (তিন) লক্ষ টাকা ও নির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আরো ৩ (তিন)লক্ষ টাকা উৎকোচ গ্রহন করেছেন বলে গোপন সুত্রে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নিশাত ট্রেডার্সের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কাজী লিয়াকত হোসেন বলেন, আপনারা যে অনিয়মের কথা বলছেন তা সঠিক নয়। তবে মাঝে নিম্নমানের কিছু ইট-খোয়া ও পাথর এনেছিলো, তা ফেরত দেওয়া হয়েছে। আমি এখন ট্রেনিংয়ে আছি আপনাদের সাথে পরে কথা বলবো।