Connect with us

দেশজুড়ে

সিতারামপুর ব্রিজের কাজ শেষ হলেও ঠিকাদারের বিল পরিশোধ না করায় ব্যবহারে বাধা!

Published

on

Narail Photo 1নড়াইল প্রতিনিধি:
তিন মাস আগে বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ঢাকা মহাসড়কের ৭৪.০৫ মিটার ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ না করায় ব্রিজটি জনসাধারণকে ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে ঢাকা, খুলনা, বেনাপোলসহ দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের অন্তত দশটি জেলার যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে।
বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ঢাকা মহাসড়কের সিতারামপুর ব্রিজটির কাজ বিভিন্ন কারণ ও অজুহাত দেখিয়ে চার বছর পর সম্পন্ন করা হলেও ঠিকাদারের বিল বকেয়া থাকায় ব্রিজটি ব্যবহার করতে না পারায় দুর্ভোগ চরমে। চলাচলের অনুপযোগী সেতুর বিকল্প সড়ক দিয়ে শত শত যানবাহনকে প্রতিনিয়তই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে, প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। ব্রিজের সামনে একটি ব্যানারে লেখা রয়েছে, সিতারামপুর ব্রিজের সম্পাদিত কাজের কোন বিল নড়াইল সড়ক বিভাগ কর্তৃক পরিশোধ না করায় ব্রিজটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম ব্যস্ত সড়ক বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ঢাকা মহাসড়ক। শত বছরের জরাজীর্ণ সীতারামপুর ব্রিজটিকে কর্তৃপক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করার পরও সুদীর্ঘ সময় ব্যবহারের এক পর্যায়ে ২০১০ সালে ভেঙ্গে পড়ে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ব্রিজ নির্মাণ অপরিহার্য হয়ে পড়লে ২০১১-১২ অর্থবছরে ৭৪.০৫ মিটার ব্রিজ নির্মাণে ২ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা প্রাক্কলিত মূল্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়। আহবানকৃত দরপত্রের বিপরীতে ১৭% কম দর দিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা বিবেচিত হওয়ায় মো. ওআহিদুজ্জামান ও মেসার্স সিকদার কনস্ট্রাকশন যৌথভাবে ২০১২ সালের ২২ জানুয়ারি কার্যাদেশ লাভ করে। শর্ত অনুযায়ী ২০১৩ সালের ২২ জুলাই’র মধ্যে কাজ শেষ করার কথা পরে ব্রিজের প্রাক্কলিত মূল্যে মোট ৩ কোটি ৮২ লক্ষ টাকা বৃদ্ধি করে কাজের সময় সীমা ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
এ রাস্তা দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী গাড়ির চালক ও যাত্রীরা বলেন, সেতুর ১৪০ মিটার বিকল্প সড়ক কয়েক বছর ধরে ব্যবহারের ফলে ভয়ানক এবড়ো-থেবড়ো অসমতল হয়ে একেবারেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে এখানে একাধিক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। প্রতিনিয়তই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখান দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত দশটি জেলার বিভিন্ন স্তরের শত শত যানবাহনসহ হাজার হাজার যাত্রীদের।
ঠিকাদার মো. ওয়াহিদ্জ্জুামান জানান, ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে আমার কাজ শেষ করার কথা। কাজের সময়সীমা পার হওয়ার তিন মাস আগে (ডিসেম্বরের ৪ তারিখে) প্রায় সম্পূর্ণ কাজ শেষ করেছি। বর্তমানে ব্রিজের উপর দিয়ে হালকা যানবহন চলাচল করছে। বরাদ্দের মোট ৩ কোটি ৮২ লক্ষ টাকার মধ্যে আমাকে মাত্র ৭০ লক্ষ টাকা দিয়েছে। আমি ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে কাজ করেছি যে কাজ বাকি আছে সেটা মাত্র ২ দিনের কাজ, টাকা পেলে ব্রিজটি তিন চার দিনের মধ্যে বাকি কাজ করে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া সম্ভব। আমার বকেয়া বিল পাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করলেও অদ্যাবধি কোন বিল পাই নি।
নড়াইল সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাস বলেন, কাজের মেয়াদকালের মধ্যে ঠিকাদার কাজ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করার ব্যবস্থা করছি । জেলা প্রশাসক জানান, যত দ্রুত সম্ভব ব্রিজটির কাজ সম্পন্ন করার জন্য ঠিকাদার, সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সড়ক বিভাগ ও ঠিকাদারের বিবদমান সমস্যার সমাধান করে দ্রুত ব্রিজটি যান চলাচলের উপযোগী করা হবে এটাই সকলের প্রত্যাশা।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *