দেশজুড়ে
সুনাামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান পাওয়া গেছে
দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার ৯নং সুরমা ইউনিয়নের অন্তর্গত আলীপুর গ্রামের সম্প্রতি টিলা খননকালে প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান পাওয়া যায়। গত কয়েক মাস আগে আলীপুরের উত্তর পাড়ার বাসিন্দা মো. আ. মোতালিব মিয়ার বাড়ির টিলা খনন করা অবস্থায় টিলার প্রায় ৭/৮ ফুট গভীরে বিপুল পরিমাণ মৃৎপাত্রের সন্ধান পাওয়া যায়। এরই মধ্যে কিছু মৃৎপাত্র অবিকৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে এগুলো এখন আর অবশিষ্ট নেই। সমগ্র টিলা জুড়ে পোড়া মাটির মৃৎপাত্রের কারুকাজ খচিত অসংখ্য ভগ্ন অংশ বিশেষ বিক্ষিপ্ত অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ইতোমধ্যে উক্ত স্থান থেকে কারুকাজ করা অবিকৃত একটি পাথুরে প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে যা বর্তমানে স্থানীয় সাংবাদিক আশিস রহমানের সংরক্ষণে রয়েছে। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে দেখা যায়, টিলার মাটি কোদাল দিয়ে আলগা করার সাথে সাথেই মাটির নিচ থেকে মৃৎপাত্রের ভগ্ন অংশ বিশেষ বেরিয়ে আসছে। উক্ত বিষয় নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে কৌতূহল বিরাজ করছে।
ধারণা করা যাচ্ছে সুষ্ঠুভাবে মাটির খনন কাজ চালানো গেলে সম্ভাবনাময় আরও অনেক প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া যেতে পারে। উল্লেখ্য যে, ঐতিহাসিক তথ্যানুযায়ী প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনপ্রাপ্ত আলীপুর গ্রামটি এক সময় প্রাচীন লাউড় রাজ্য এবং কালিদহ সাগরের অংশ বিশেষ ছিল। ৫০ এর দশকে এ গ্রামে জনবসতি সৃষ্টি হয়। এর পূর্বে অত্র এলাকায় গভীর অরণ্য ও বন্য প্রাণীতে পরিপূর্ণ ছিল। ’৬২ সনের আগে অত্র এলাকায় হিন্দু কপালী সম্প্রদায় এবং উপজাতীয়দের বসবাস ছিল। পরবর্তীতে তারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় বিতাড়িত হয়। এর পূর্বে এই এলাকায় কোন ধরণের লোক বসতি ছিল বলে জানা যায় নি।
এ ব্যাপারে দোয়ারাবাজারের বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্ব টেংরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ বলেন, এখানে প্রাচীন জনবসতি ছিল বলে মনে হচ্ছে, তাই সঠিক ইতিহাস উদঘাটনের লক্ষ্যে প্রতœতত্ত্ববিদদের দ্রুত এগিয়ে আসা দরকার।
জাতীয় প্রতœতত্ত্ববিদ ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দেশের বেশ কিছু জায়গায় এ ধরণের আরও অনেক প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান মিলেছে, শীঘ্রই এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হবে।