জাতীয়
সুন্দরবনের দস্যু বাহিনির আত্মসমর্পণ
মংলা বন্দর সংলগ্ন সুন্দরবনে আজই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের উপস্থিতিতে র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণের কথা ছিল মাস্টার বাহিনী দলটি। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে মন্ত্রী আজ সেখানে পৌঁছাতে না পারায় স্থগিত করা হয় আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান।
তবে বেসরকারি যমুনা টেলিভিশনের খবরে দেখানো হয়, ডাকাত দলটির সাত সদস্যকে হেফাজতে নিয়েছে র্যাব এবং তারা প্রায় ৫ হাজার রাউন্ডের মতো গোলাবারুদসহ ৫১টি আগ্নেয়াস্ত্রও জমা দিয়েছে।
এই যমুনা টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি মহসিন উল হাকিমের মধ্যস্থতায় এই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
পরে সুন্দরবনের ভেতর থেকে র্যাবের একজন কর্মকর্তা মেজর আদনান কবির বিবিসিকে বলেন, তাদের অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে।
জানা যাচ্ছে, সাংবাদিক মি. হাকিম ২০১০ সালে সুন্দরবনের জেলেদের জীবন ও জীবিকা নিয়ে একটি ধারাবাহিক প্রতিবেদন করতে গিয়ে এই মাস্টার বাহিনীর প্রধান কাদের মাস্টারের সংস্পর্শে আসেন।
মি. হাকিম তার সাক্ষাৎকার নেন এবং পরবর্তী বছরগুলোতে তার সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখেন। এরই মধ্যে কয়েকবার কাদের মাস্টার তার দলবল নিয়ে দস্যুতা ত্যাগ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার আগ্রহ প্রকাশ করে মিস্টার হাকিমের কাছে, কিন্তু জীবনের নিরাপত্তার আশ্বাস না পেয়ে তিনি আত্মসমর্পণ করতে পারছিলেন না। তিন মাস আগে মি. হাকিমের মাধ্যমেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও র্যাব মহাপরিচালকের বরাবর আবেদন করেন দস্যু সর্দার। মি. হাকিম নিজেও এই মুহূর্তে সুন্দরবনে অবস্থান করছেন।
তিনি জানাচ্ছেন, মংলা থেকে অন্তত চল্লিশ কিলোমিটার দূরবর্তী শরণখোলা রেঞ্জে মাস্টার বাহিনীর সাত সদস্য র্যাবের কাছে অস্ত্র ও গোলাবারুদ তুলে দেয়ার মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে। কিন্তু এই কাজটা তো তারা থানায় গিয়ে করতে পারতো? কিংবা আদালতে গিয়েও করতে পারতো? এজন্য তাদেরকে সরকারের কাছে আবেদন করতে হল কেন?
মি. হাকিম বলছেন, তারা মূলত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কথিত ‘ক্রসফায়ারের’ ভয়ে এটা করেছে। “তারা মনে করে লোকালয়ে এলেই তাদের গুলি করে মেরে ফেলা হবে,” বলেন তিনি। স্থানীয় এক হিসেবে জানা যাচ্ছে গত কয়েক বছরে সুন্দরবনে একশোরও বেশী বন-দস্যু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কথিত ক্রসফায়ারে মারা গেছে। ক্রসফায়ারের সবচাইতে বড় ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৪ সালের ৫ই অক্টোবর, ওইদিন ক্রসফায়ারে অন্তত ১১ জন দস্যু প্রাণ হারায়।