আন্তর্জাতিক
স্থিতিশীলতা না আসা পর্যন্ত ইয়েমেনে সৌদির বিমান হামলা
ইয়েমেনে স্থিতিশীলতা ফিরে না আসা পর্যন্ত হাউথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সৌদি আরব। সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের হামলায় সব ধরনের সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আরব লীগ। মিশরের রাজধানী কায়রোয় শনিবার সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনের পর মহাসচিব নাবিল এল আরাবি বিষয়টি নিশ্চিত করেন। সম্মেলনে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মানসুর হাদিও, হাউথিদের ইরানের হাতের পুতুল উল্লেখ করে বলেন, বিদ্রোহীরা আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
শনিবার দফায় দফায় বোমা হামলায় কেঁপে ওঠে ইয়েমেনের নৌবন্দর এডেনের সবচেয় বড় অস্ত্রাগার। জাবেল হাদিদ পাহাড়ের পাদদেশের এ অস্ত্রাগারে বিস্ফোরণে কতজন নিহত হয়েছে ইয়েমেন সরকার তা না জানালেও ১৫ জন নিহত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। এডেনের দখল নিতে প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মানসুর হাদিপন্থী উপজাতীয় মিলিশিয়াদের সঙ্গে গত কয়েকদিন ধরে লড়াই চালাচ্ছে হাউথি বিদ্রোহীরা। তবে কারা এ বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তা জানাতে পারেনি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
এদিনও ইয়েমেনের বিভিন্ন স্থানে হাউথি বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোট। সৌদি সামরিক বাহিনীর দাবি, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া জোটের হামলায় বিদ্রোহীদের ক্ষেপণাস্ত্রের অধিকাংশই ধ্বংস হয়ে গেছে।
একই দিন মিশরের রাজধানী কায়রোয় শীর্ষ সম্মেলনে বসেন আরব লীগের ২২ দেশের নেতারা। এতে দেয়া বক্তব্যে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট হাউথি বিদ্রোহীদের ইরানের পুতুল হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সন্ত্রাসীরা আত্মসমর্পণ করার ঘোষণা এবং দখল করা ভূখণ্ড, সেনানিবাস, সরকারি প্রতিষ্ঠান ছেড়ে না দেয়া পর্যন্ত বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদ রাব্বু মানসুর হাদি বলেন, ‘আমি ইরানের পুতুল ও তাদের মিত্রদের বলছি, আপনারা কূটচালের মাধ্যমে ইয়েমেনকে ধ্বংস করছেন এবং অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক সংকটের জন্ম দিচ্ছেন। দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে করে ও দাম্ভিকতাপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন আপনারা দেখছেন তা সফল হবে না। ইয়েমেনে বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টি করার দায় আপনাদেরই নিতে হবে।’
এ সম্মেলনেই হাউথিদের ওপর হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন সৌদি বাদশা সালমান আল সৌদ। তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ না আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণ হচ্ছে এবং ইয়েমেনের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম চলবে।’ সম্মেলনের পরপরেই সংবাদ সম্মেলন করে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলার প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন সংস্থার মহাসচিব।
আরব লীগের মহাসচিব নাবিল এল আরাবি বলেন, ‘এ অভিযানে সব ধরনের সহায়তা দেয়ার বিষয়টি আমি আবারও নিশ্চিত করছি। হাউথি যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে নির্দিষ্ট স্থানে এ অভিযান চলছে। ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু হাদির অনুরোধের পরই এ হামলা শুরু করা হয়েছে।’
এদিকে, বিদ্রোহীদের মদদদাতা হিসেবে অভিযুক্ত ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আলি আব্দুল্লাহ সালেহ বিমান হামলা বন্ধে সৌদি আরব এবং সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছার আহ্বান জানিয়েছেন। ধর্ম নিরপেক্ষ, ইসলামপন্থীদের পাশাপাশি হাউথিদের বিদ্রোহের মুখে ২০১২ সালে পদত্যাগ করেন সালেহ। সমঝোতার ভিত্তিতে উত্তরসূরি হিসেবে দায়িত্ব নেন তার সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট মানসুর হাদি।