দেশজুড়ে
হারাগাছে পুলিশের লাঠিচার্জে যুবক নিহতের ঘটনায় দফায় দফায় সংঘর্ষ
রংপুরের হারাগাছে আইপিএল খেলার জুয়া নিয়ে পুলিশের লাঠিচার্জে আজিজুল ইসলাম নামের এক যুবক নিহত হওয়ার ঘটনায় পুরো এলাকাজুড়ে এখনও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রেখে রাস্তায় নেমে এসেছে। পুলিশ ঘটনা তদন্তে এবং ময়না তদন্তের জন্য পৃথক দুটি তদন্ত টিম গঠন করেছে। নিহতের লাশ এখনও পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেনি পুলিশ।
রোববার সকাল থেকেই ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ রেখে রাস্তায় এসে বিক্ষোভ করতে থাকে। তারা পুরো হারাগাছের অলিগলিতে গাছের গুড়ি ছড়িয়ে দেয়। পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে সেখানে বিপুল পরিমান পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে। কিন্তু বিক্ষুব্ধ জনতা হারাগাছ পৌর ভবনে অবস্থিতি পুলিশ ফাঁড়ি আবারও ঘেরাও করে দায়ি পুলিশের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করছে। পরিস্থিতির অবনতির আশংকায় রংপুর থেকে আরও পুলিশ রওয়ানা দিয়েছে হারাগাছে।
পুলিশ সুপার আব্দুর রাজ্জাক জানান, ঘটনা তদন্তে এএসপি রশিদুল ইসলামকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেউ দোষি হলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি জনগনকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানান। এছাড়াও ময়না তদন্তের রিপোর্ট যেন সঠিকভাবে হয় সেজন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেদর সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করার কথাও জানান তিনি।
শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে হারাগাছের হকবাজারের গনির গলির একটি ক্লাবঘরে আইপিএল খেলা দেখার পাশাপাশি বাজি চলাকালিন অবস্থায় হারাগাছ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মামুনের নেতৃত্বে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এনিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে লাঠিচার্জ শুরু করলে গুরুতর আহত হন আজিজুল ইসলাম নামের এক ওষুধের দোকানের কম্পিউটার। পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে তিনি মারা যান। ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে রাখা হয়েছে। এনিয়ে রাতভর সেখানে পুলিশ জনতা সংঘর্ষ হয়। জনতা বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে আর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েকশ রাউন্ড ফাকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পুলিশের দাবি অনুযায়ী ৩৫০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ও ১২০ রাউন্ড টিয়ারশেল ছুড়তে হয়েছে পরিস্থিতি সামলাতে। এ ঘটনায় শতাধিক এলাকাবাসি ও ২৫ পুলিশ আহত হয়েছে।
নিহতের মামা হারাগাছ পৌরসভার সাবেক মেয়র সাদাকাত হোসেন ঝন্টু জানান, পুলিশ আমার ভাগনেকে পিটিয়ে মেরেছে। এটা মেনে নেয়া যায় না। দায়ী পুলিশকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিতে হবে। নইলে হারাগাছ বাসির আন্দোলন চলবে।
কাউনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল কাদের জিলানী জানান, সরকারী কাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগ এনে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।