Connect with us

দেশজুড়ে

হাতীবান্ধায় ইউপি সদস্যের নিদের্শে গৃহবধুকে সুপারি গাছে বেঁধে নির্যাতন

Published

on

লালমনিরহাটে

হাতীবান্ধা(লালমনিরহাট)সংবাদদাতা: লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোলাপাড়া গ্রামে পরকীয়া প্রেমের অভিযোগ এনে ইউপি সদস্যের নির্দেশে গৃহবধু মনিজা বেগম (২৫) সুপারি গাছে বেঁধে নির্যাতন করে তালাক নামায় জোর পূর্বক স্বাক্ষর করার অভিযোগে শশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় মামলা হয়েছে। এ অভিযোগে হাতীবান্ধা থানা পুলিশ হামিদুল ইসলাম (২৫) নামে একজনকে আটক করেছে বলে জানাগেছে। আটক ব্যক্তি উপজেলার দোলাপাড়া গ্রামের ইউপি সদস্য আঃ গফুরের পুত্র। নির্যাতিত গৃহবধু মনিজা বেগম বর্তমানে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। তার রেজি. নং-৭১৯১/৩১, তারিখ-২৭-০৬-১৬। বর্তমানে তার অবস্থা আশংকাজনক।
জানাগেছে, ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার রসুলগঞ্জ গ্রামের জমির উদ্দিনের কন্যা মনিজা খাতুনের বিয়ে হয় একই জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দোলাপাড়া গ্রামের মৃত. ছপর আলীর পূত্র ছপিয়ার রহমানে সঙ্গে। তাদের সংসারে রয়েছে মনিরুল ইসলাম (৮) ও মুজাহিদ নামের দুই সন্তান রয়েছে। অভাবেব সংসারে সুখে দু:খে দিন যায় তাদের । মনিজার স্বামী সফিয়ার রহমান স্বভাবজাতভাবে একটু সহজ-সরল। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তার পরিবারে লোকজন কারনে অকারনে বিভিন্ন সময় মনিজার ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালান। ওই স্ত্রীকে নিয়ে আর কোনভাবে সংসার চালানো যাবেনা এই অভিমত পরিবারের লোকজনের। বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে মনিজা একপর্যায়ে চলে যায় পিত্রালয়ে। কিন্তু স্বামী সফিয়ার রহমান পরিবারের লোকজনের কথা অবাধ্য হয়ে বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা জামাল সোহেলের সহযোগিতায় এ বছরের ২৬ জুনে স্ত্রী মনিজাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। আসার সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের রোষানলে পড়েন দুই স্বামী স্ত্রী। দোলাপাড়া গ্রামের ইউপি সদস্য আ. গফুরের হুকুমে মনিজার শাশুড়ি বজিরন, লাকু, লোকমান, মনছুর উদ্দিন তাদের উপর নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের একপর্যায়ে বাড়ির আঙ্গীনার সুপারি গাছে বেধে মনিজা বেগমকে বেদম পিটুনী দেয়া হয়। এ পিটুনীতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে গোপনীয় স্থানের বিভিন্ন অংশে ক্ষতের অসংখ্য চি‎হ্ন দেখা গেছে।
মামলা সূত্রে আরও জানাগেছে, নির্যাতন করা অবস্থায় কাজী আবুল হাশেমকে ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়ে এসে তালাকের কাবিন নামায় স্বাক্ষর করার পর মনিজাকে ছেড়ে দেন। স্থানীয় লোকের সহযোগিতায় মনিজা বর্তমানে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৫নং মহিলা বেডে চিকিৎসারত অবস্থায় রয়েছে। তার অবস্থা আশংকাজনক। এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
উক্ত মামলায় ইউপি সদস্য আ. গফুরকে প্রধান আসামী করে ৪ জনের নাম এজাহারে উলে­খ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আ. গফুর বলেন, আমার ফুফাতো ভাইয়ের স্ত্রী মনিজা বেগম একজন দুষচরিত্রা মহিলা। আমি আমার ফুফাতো ভাই সফিয়ারকে শাসন করেছি মাত্র। মনিজাকে নির্যাতনের প্রশ্নেই আসে না। মনিজার শাশুড়ি বজিরন নেছা দাম্ভিকতার সহিত বলেন, সুপারির গাছে বেধে নির্যাতন আমিই করেছি, অন্য কেউ নয়। ওই ধরনের বউকে এর চেয়ে উপযুক্ত শাস্তি আর কোন হতে পারেনা।
কাজী আবুল হাশেম বলেন, উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে সফিয়ার রহমানের বাড়িতে তার স্ত্রী মনিজা বেগমের তালাক নামায় স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়েছে। নির্যাতন করে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন ্ওই কাজী। হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ নাঈম হাসান নয়ন এ প্রসঙ্গে বলেন, হাসপাতালে ভর্তি গৃহবধু মনিজার আঘাত গুরুত্বর। তার শরীরের গোপন অংশের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চি‎হ্ন রয়েছে। বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা জামান সোহেল গৃহবধু মনিজার উপর নির্যাতনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তার চিকিৎসার দেখভাল করার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলাম।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনিছুর রহমান আনিছ বলেন, এ ঘটনায় হামিদুল ইসলাম (২৫) নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের আটকে অভিযান চলছে।

জাহাঙ্গীর আলম রিকো
হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট) সংবাদাতা ঃ
০১৭৩৯৫২০১৭৪/২৮.৬.১৬

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *