Connect with us

আন্তর্জাতিক

সীমান্তে এখন মাইক যুদ্ধে ব্যস্ত দুই কোরিয়া

Published

on

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হাইড্রোজেন বোমার আওয়াজ শোনাতে চেয়েছিল উত্তর কোরিয়া। পাল্টা আওয়াজে এ বার উত্তর কোরিয়ার কানে তালা লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় দক্ষিণ কোরিয়া। সীমান্তে দৈত্যাকার লাউড স্পিকার লাগিয়ে দিয়েছে দক্ষিণের সরকার। উত্তর কোরিয়ায় নিষিদ্ধ যে সব গান, দক্ষিণের লাউডস্পিকার তারস্বরে বাজিয়ে চলেছে সে সবই। সঙ্গে চালানো হচ্ছে এমন সব প্রচার, যা উত্তরের সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দিতে যথেষ্ট।image (2)উত্তর কোরিয়া প্রবল অসন্তোষ প্রকাশ করেছে দক্ষিণের লাউড স্পিকার হামলায়। পিয়ংইয়ং-এর কমিউনিস্ট সরকার বলেছে, দক্ষিণ কোরিয়া যা করছে, তা যুদ্ধের নামান্তর। দক্ষিণের লাউড স্পিকারগুলি উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। তাতে অবশ্য দমছে না সোলের কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু সোলের লাগানো লাউড স্পিকারে কী এমন শোনানো হচ্ছে যে পিয়ংইয়ং এত বিব্রত? কোরীয় পপ গান উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট সরকার নিষিদ্ধ করেছে। তবে সে দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে ওই সব গানের জনপ্রিয়তা খুব। দক্ষিণে সেই গান রমরমিয়ে চলে। সীমান্তের কাছেই লাগানো প্রবল শক্তিশালী লাউড স্পিকার থেকে সেই গান শোনানো হচ্ছে। ফলে উত্তর কোরিয়ার লোকজনও সেই গান উৎসাহ নিয়ে শুনছেন।
লাউড স্পিকারে শুধু গান হয় না। হয় খবর এবং আলোচনা সভাও। দুই কোরিয়া এবং বিদেশের খবর শোনাচ্ছে দক্ষিণের লাউড স্পিকার। এমন অনেক খবর শোনানো হচ্ছে, যা উত্তরের কমিউনিস্ট সরকার কখনও প্রচারিত হতে দেয় না। ফলে সীমান্তে কর্মরত উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীও ওই সব খবর উৎসাহ নিয়ে শুনছে। শুনছেন সাধারণ নাগরিকরাও। গণতান্ত্রিক দক্ষিণ কোরিয়ায় মানুষের জীবন কমিউনিস্ট উত্তরের জীবনের চেয়ে কত ভাল, তা শোনানো হচ্ছে লাউড স্পিকারে প্রচারিত আলোচনা সভায়। উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে এমন সব তথ্য শোনানো হচ্ছে, যাতে সে দেশের সেনাবাহিনীর মনোবলও তলানিতে পৌঁছয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার সেনা আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, রোজ সর্বোচ্চ ৬ ঘণ্টা এই লাউড স্পিকার সম্প্রচার চলছে। দিনের বেলা এর আওয়াজ উত্তর কোরিয়ার ১০ কিলোমিটার ভিতর পর্যন্ত শোনা যাচ্ছে। রাতে উত্তর কোরিয়ার ২৪ কিলোমিটার ভিতর থেকেও এই আওয়াজ শোনা যাচ্ছে বলে দক্ষিণের সেনাবাহিনীর দাবি।
পিয়ংইয়ং-ও চুপচাপ বসে নেই। পাল্টা লাউড স্পিকার সম্প্রচার শুরু করেছে তারাও। কিন্তু সে দেশের কমিউনিস্ট সরকারের প্রচারের ধরন সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করার মতো নয়। দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা শোনা যাচ্ছে উত্তরের মাইকে। কিন্তু গান, নাটক, খবর, আলোচনা সভা- এত কিছু দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া যে জমজমাট প্রচার শুরু করেছে, উত্তর কোরিয়ার ম্যাড়মেড়ে তাত্ত্বিক প্রচার তেমন দাগ কাটছে না।
উত্তর কোরিয়ার লাউড স্পিকারগুলির আওয়াজও কিছুটা কম। দক্ষিণ কোরিয়ার স্পিকারগুলির মতো প্রবল শক্তিশালী সেগুলি নয়। তাই নিজেদের স্পিকার চালিয়ে দক্ষিণ দিক থেকে ভেসে আসা প্রচার উত্তর কোরিয়া কিছুটা অস্পষ্ট করতে পারলেও, নিজেদের কথা দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষকে খুব একটা শোনাতে পারছে না। পিয়ংইয়ং আশঙ্কা করছে সেনার মনোবলে ভাঁটা পড়ার। আশঙ্কা করছে সাধারণ নাগরিকদের মনে কমিউনিস্ট সরকার বিরোধী মনোভাব তৈরি হওয়ার। তাই পিয়ংইয়ং-এর হুমকি-উড়িয়ে দেওয়া হবে সোলের লাগানো লাউড স্পিকার। তবে এই লাউড স্পিকার সম্প্রচার নতুন নয়। কোরীয় যুদ্ধের পর থেকেই সীমান্তে লাউড স্পিকারের লড়াই শুরু করেছিল দুই কোরিয়া। পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। উত্তর কোরিয়া সম্প্রতি হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটানোর পর দক্ষিণ আবার পুরনো পন্থায় ফিরেছে। ১১ বছর পর ফের গমগম করে উঠেছে সীমান্তের লাউড স্পিকারগুলি।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *