Connect with us

আন্তর্জাতিক

পশ্চিম এশিয়ার আকাশে মুখোমুখি চীন ও ভারত বিমানবাহিনী

Published

on

image (1)

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিদেশের আকাশে এ বার মুখোমুখি ভারত আর চিনের বিমানবাহিনী। ভারতের ‘তেজস’ বেশি শক্তিশালী না চিনের ‘জেএফ-১৭ থান্ডার’-সামনাসামনি মোকাবিলায় তার পরীক্ষা হতে চলেছে পশ্চিম এশিয়ার আকাশে। ২১ থেকে ২৩ জানুয়ারি বাহরিনের আকাশে হতে চলেছে চিন আর ভারতের এই মহড়া। তবে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা চিনের জেএফ-১৭ থান্ডারের চেয়ে এগিয়ে রাখছেন ভারতের তেজসকেই।
বাহরিনে যে এয়ার শো আয়োজিত হয়েছে, ভারতীয় বায়ুসেনা শুধুমাত্র তেজস এয়ারক্র্যাফ্টই নিয়ে যাচ্ছে। চিনের বিমানবাহিনীও নিয়ে যাচ্ছে শুধুমাত্র জেএফ-১৭ থান্ডার এয়ারক্র্যাফ্ট। তেজস সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতেই তৈরি। মিগ-২১ ফাইটারগুলিকে বাতিল করে দিয়ে তার জায়গায় আরও শক্তিশালী এবং আধুনিক ফাইটার জেট বিমানবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত করতে তেজস প্রকল্প শুরু করেছিল ভারত। হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড (হ্যাল) সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে এই লাইট কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্ট (এলসিএ) গোত্রের তেজস যুদ্ধবিমান তৈরি করতে শুরু করে। চিনের জেএফ-১৭ থান্ডার কিন্তু শুধু চিনা প্রযুক্তিতে তৈরি নয়। পাকিস্তান ও চিন যৌথ উদ্যোগে এই যুদ্ধবিমান তৈরি করেছে। চিনের বিমানবাহিনী এই যুদ্ধবিমানের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল। পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর ক্ষেত্রে জেএফ-১৭ থান্ডার প্রায় মেরুদণ্ডের মতো। চিন-পাকিস্তানের এই যৌথ যুদ্ধবিমান আর ভারতের তেজসের বিধ্বংসী ক্ষমতা মোটামুটি একই রকম। কিন্তু তবু প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা জেএফ-১৭ থান্ডারের চেয়ে তেজসকে কিছুটা এগিয়ে রাখছেন।
আধুনিক বায়ুসেনায় শুধু বোমাবর্ষণের ক্ষমতা বা গোলাগুলি চালানোর দক্ষতা দিয়ে যুদ্ধবিমানের সক্ষমতা বিচার হয় না। ফাইটার জেট কত বেশিক্ষণ লড়াইতে টিকে থাকতে পারে, গতিবেগে কীভাবে প্রতিপক্ষকে টেক্কা দিতে পারে, কত দূর পাড়ি দিয়ে হামলা চালাতে পারে— এই বিষয়গুলি আধুনিক যুদ্ধে খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই সবক’টি বিষয়েই তেজস এগিয়ে জেএফ-১৭ থান্ডারের চেয়ে। দু’টি এয়ারক্র্যাফ্টই মাল্টি-রোল ফাইটার জেট। অর্থাৎ, অনেক উঁচু থেকে হামলা চালানো, মাটির খুব কাছাকাছি নেমে গোলাবর্ষণ করা, প্রতিপক্ষের ফাইটারকে তাড়া করা, প্রতিকূল আকাশসীমায় ঢুকে বিপক্ষের ঘাঁটি এবং সমরসজ্জার নির্ভুল খবর নিয়ে আসা— এই সব কাজই করতে পারে তেজস এবং জেএফ-১৭। এই দুই যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিনের ক্ষমতাও একই রকম। ফারাক গড়ে দিয়েছে তেজসের তীব্র গতি, ক্ষিপ্রতা, বহুদূর উড়ে যাওয়ার ক্ষমতা এবং বেশি জ্বালানি বহনের ক্ষমতা।
জেএফ-১৭ থান্ডার এক বারে পাড়ি দিতে পারে ২০০০ কিলোমিটারের মতো পথ। তেজস একাটানা ২৩০০ কিলোমিটার উড়তে পারে। ২৩০০ কিলোগ্রামের বেশি জ্বালানি বহন করতে পারে না চিনা ফাইটার। তেজস ২৫০০ কিলোগ্রাম জ্বালানি নিয়ে উড়তে পারে।
আকাশেই জ্বালানি ভরা যায় তেজসে। জেএফ-১৭ থান্ডারের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে বিমানঘাঁটিতে ফিরে তা ভরতে হয় চিন-পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানটিকে। টেক-অফের পর মাত্র ৪৬০ মিটার গিয়েই গতিবেগ তীব্র করে তোলে তেজস। কিন্তু চিনা বিমানবাহিনীর জেএফ-১৭ থান্ডার ৬০০ মিটার ওড়ার আগে গতি বাড়াতে পারে না।
তেজসের আর একটি বড় সুবিধা হল এর কম ওজন। কার্বন ফাইবার কম্পোজিটে তৈরি তেজস। জেএফ-১৭ থান্ডার তৈরি স্টিল অ্যালয় আর অ্যালুমিনিয়ামে। ফলে তেজসের চেয়ে থান্ডারের ওজন অনেক বেশি। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষিপ্রতা কম।
বাহরিনের আকাশে তেজসের সক্ষমতা দেখাতে ভারতীয় বায়ুসেনার প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। চিনের তরফেও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। গোটা বিশ্ব তাকিয়ে রয়েছে এই মহড়ার দিকে।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *