কুড়িগ্রাম
রৌমারীতে কোটি টাকা নিয়ে সততা সংস্থার পরিচালক উধাও; অফিসে ঝুলছে তালা
কুড়িগ্রাম ও রৌমারী প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় নির্বাচন কমিশনার মো. আবু হাফিজ এর ছোট ভাই সততা নামে একটি বেসরকারী সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আবু হোসেন প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে দীর্ঘ ২৩মাস ধরে আত্মগোপনে করে আছেন প্রধান কার্যালয়সহ সকল শাখা অফিসে এখন তালা জুলছে। জামানতের টাকা দিয়ে চাকুরী নেওয়া প্রায় ৯ শত কর্মী এখন বিপাকে পড়েছে। ২০১৪ সালের ফ্রেরুয়ারী মাস থেকে এখন পর্যন্ত একদিনের জন্যও ওই পরিচালকে রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী উপজেলার মাটিতে দেখা যায়নি । তিনি কোথায় আছেন তারও কোনো সঠিক সন্ধান কেউ দিতে পারেনি। তিনি ঢাকায় বাসা ভাড়া করে আত্মগোপনে আছেন বলে আভিযোগ পাওয়া গেছে। এর আগে ২০১৩ সালের নভেম্বার মাসে এই এনজিও পরিচালক দাতা সংস্থা ইউ এন পি পির অর্থায়নে সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের উন্নয়নের কথা বলে নারীর ক্ষমতায়ন ও উন্নয়ন প্রকল্প নামের প্রকল্পে লোভনীয় সুযোগ-সুবিধার উল্লেখ করে জাতীয় পত্রিকায নিয়োগ বিজ্ঞত্তি প্রকাশ করে প্রায় ৯শত কর্মী নিয়োগ দেন।
রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী উপজেলা কর্ম এলাকা দেখিয়ে বিভিন্ন পদে নিয়োগের সময় আবেদনকারীদের নিকট থেকে জনপ্রতি ২০হাজার থেকে ১লক্ষ টাকা পর্যন্ত গ্রহন করে। টাকা আদায় করা হয় জামানতের কথা বলে। নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে অনেকে সততা সংস্থার টাকা গ্রহনের রশিদও প্রদান করে। নিয়োগ পাওয়া কর্মীরা যোগদান করার ৩মাসও বেতন ভাতা না পেয়ে বিক্ষুব্দ হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় ২০১৪ইং সালের জানুয়ারী মাসের শেষের দিকে প্রকল্প অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দ আনার জন্য দাতা সংস্থার ঢাকা অফিসে যাওয়ার কথা বলে পরিচালক আবু হোসেন পালিয়ে যায় বর্তমান সে আত্মগোপনে আছেন । আর রৌমারী আসেননি তিনি।
সততা সংস্থার প্রতারণার ফাঁদে পড়া কর্মী কামরুল হাসান, ইছমে জাহান, কোহিনুর শরীফা খাতুন, সিরাজুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন চাকুরী দেয়ার সময় আমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে জামানত হিসাবে ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। আনিচুর রহমান আনিছ, শেফালী অভিযোগ করে বলেন চাকুরী দেয়ার সময় আমাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে জামানত হিসাবে ১লক্ষ টাকা করে নিয়ে ২০ হাজার টাকার রশিদ দিয়েছে। জামানতের টাকা ফেরত নেয়ার জন্য কর্মীরা হন্যে হয়ে পরিচালককে খুঁজে পাচ্ছে না। সংস্থার প্রধান কার্যালয়সহ ৬টি শাখা অফিসে তালা জুলছে।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার টাপুরচর প্রধান কার্যালয়ের মেইন গ্রেটে তালা জুলছে। অফিসের আশপাশের লোকজন জানান আবু হোসেন একজন বাটপার বিভিন্ন সময় সরকারী -বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর লোভ দেখিয়ে ও আমার বড় ভাই নির্বাচন কমিশনার এ পরিচয় দিয়ে মানুষে টাকা মেরে খায়। এলাকাবাসী জানান আবু হোসেন নাকি ঢাকা মোহাম্মাদপুর অফিস ও বাসা ভাড়া করে থাকে। সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় দাতা সংস্থা ইউএনডিপি সততা নামের সংস্থাকে এই নামে কোনো প্রকল্প বা অর্থ বরাদ্দ দেয়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে প্রকল্প সর্ম্পকে কোনো তথ্য নাই।
অভিযোগকারী,আনিচুর রহমান আনিচ,নইমুদ্দিন,সেফালী,মনোয়ারা বলেন কোন অধিদপ্তরে একাদিক ভার অভিযোগ করে আমরা কোন বিচার পাই নাই। কারণ সততা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আবু হোসেন এর বড় ভাই বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের নির্বাচন কমিশনার মোঃ আবু হাফিজ। নির্বাচন কমিশনার সাহেবের ছোট ভাই এ কারণে আমরা সততা সংস্থার পরিচালক আবু হোসেনের কথা বিশ্বাস করে জামাত দিয়ে চাকুরী নেই ও প্রকল্প পেয়ে বলে রৌমারী,রাজিবপুর ও চিলমারী উপজেলার সকল মানুষ বিশ্বাস করে। নির্বাচন কমিশনার মো. আবু হাফিজ সাহেব একজন সৎ লোক একথা অত্রএলাকার সবাই বলে ও আমরাও বিশ^াস করি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী আফিসার (ভারঃ) শঙ্কর কুমার বিশ্বাস বলেন আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি আমার কাছে সততা সংস্থার পরিচালকের বিরুদ্ধে লিখিত কিছু অভিযোগ এসেছে তদন্তপূবক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ৩১ডিসেম্বার বৃহঃবার দৈনিক কালেকন্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে সততা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আবু হোসেন জামানতের টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে সততা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আবু হোসেনের সাথে মোবাইল ফোন ০১৭৯১৩৬০০০৬ নম্বারে বারবার যোগাযেগে চেষ্টা করে যোগাযোগ করা যায়নি।