Connect with us

খেলাধুলা

অধিনায়কের অনবদ্য ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়

Published

on

17-4,8-6 de villiarsস্পোর্টস ডেস্ক:

ঘুরে দাঁড়িয়েছে গত ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা। গত কাল সিডনিতে টানা দুই ম্যাচে বড় জয় পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শুধু জয়ই নয় বরং নিজেদের করা রানের বিশাল টার্গেটের বিপরীতে ক্যারিবীয়দের একপ্রকার লজ্জায়ই ডুবিয়েছে প্রোটিয়ারা। এবি ডি ভিলিয়ার্সের দাপুটে ব্যাটিং আর ইমরান তাহিরদের আগ্রাসী বোলিংয়ে দিনশেষে ২৫৭ রানের সহজ জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিটরা।

ভারতের কাছে ১৩০ রানে হেরে চাপে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। অধিনায়কের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চারশ’ নয় রানের বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ভালো শুরুর সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি ম্যাচ সেরা ডি ভিলিয়ার্স। ওয়ানডের দ্রুততম দেড়শ’ রানের রেকর্ড গড়া এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের তাণ্ডবে শেষ ২০ ওভারে ২৬১ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা।

বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভীষণ বিপদে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডারের অর্ধশতকে কোনোমতে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বড় হার এড়ায় তারা। কিন্তু বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় হারের লজ্জা এড়াতে পারেনি তারা। ২০০৭ সালের আসরে ভারতের কাছে ২৫৭ রানেই হেরেছিল বারমুডা।

গত কাল সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ‘বি’ গ্র“পের ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ৪০৮ রানের দূর্ভেদ্য প্রাচীর গড়ে তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ৩৩ ওভার ১ বলে মাত্র ১৫১ রানে অলআউট হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামা প্রোটিয়াদের শুরুটা ভালো হয়নি। ষষ্ঠ ওভারেই বিদায় নেন ওপেনার ডি কক। হোল্ডারের বলে রাসেলের হাতে ধরা পড়েন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ফাফ দু প্লেসির সঙ্গে ১২৭ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন হাশিম আমলা। অর্ধশতকে পৌঁছানো এই দুই ব্যাটসম্যানকে ফেরানোর কৃতিত্ব গেইলের। ৩০ তম ওভারে তিন বলের মধ্যে দু প্লেসি ও আমলাকে ফেরান গেইল। দু প্লেসিকে (৬২) রামদিনের গ্লাভসবন্দি করে ২৩.৪ ওভার স্থায়ী জুটি ভাঙেন তিনি। এক বল পর আমলাকে (৬৫) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন গেইল। দু প্লেসি ও আমলার বিদায়ের কোনো প্রভাবই দলের স্কোরবোর্ডে পড়তে দেননি ডি ভিলিয়ার্স ও রিলি রুশো। চতুর্থ উইকেটে মাত্র ৭৫ বলে ১৩৪ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটসম্যান। রাসেলের বলে রামদিনের গ্লাভসবন্দি হয়ে রুশোর (৬১) বিদায়ে ভাঙে ১২.৩ ওভার স্থায়ী চতুর্থ উইকেট জুটি। তার ৩৯ বলের আক্রমণাত্মক ইনিংসটি ৬টি চার ও ১টি চারে গড়া। পঞ্চম উইকেটে ডেভিড মিলারের সঙ্গে ৪.৩ ওভারে ৪৮ রানের আরেকটি জুটি উপহার দেন ডি ভিলিয়ার্স। মিলার ফিরে গেলেও থামেনি ডি ভিলিয়ার্স ঝড়। প্রচলিত, অপ্রচলিত সব শট খেলে এলোমেলো করে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং পরিকল্পনা। তার ঝড়ের সবচেয়ে বড় ঝাপটা যায় হোল্ডারের ওপর দিয়ে। তার করা ৪৮তম ওভারে ৩৪ রান নেন ডি ভিলিয়ার্স। অবিচ্ছিন্ন ষষ্ঠ উইকেটে ফারহান বেহারদিনের সঙ্গে মাত্র ৩.২ ওভারে ৮০ রানের জুটি গড়েন ডি ভিলিয়ার্স। হোল্ডারের করা পঞ্চাশতম ওভারে ৩০ রান নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১৬২ রানে অপরাজিত থাকেন ডি ভিলিয়ার্স। তার ৬৬ বলের ইনিংসটি ১৭টি চার ও ৮টি ছক্কা সমৃদ্ধ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের গেইল ও রাসেল দুটি করে উইকেট নেন।
বিশ্বকাপে এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে তিনশ’ রানের লক্ষ্য তাড়া করে কখনো না জেতা ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাকিয়ে ছিল ক্রিস গেইলের দিকে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আগের ম্যাচে দ্বিশতক করা এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান এবার ভালো করতে পারেননি। কাইল অ্যাবটের করা দ্বিতীয় ওভারেই বোল্ড হয়ে যান গেইল। পরের ওভারে মারলন স্যামুয়েসকে কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসবন্দি করেন দলে ফেরা অ্যাবট। ভালো করতে পারেননি জোনাথন কার্টারও। মর্নে মরকেলের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে মাত্র ১০ রান করেন তিনি। বিপর্যস্ত ক্যারিবীয়রা সামলে ওঠার আগেই তাদের ওপর চড়াও হন আরেক প্রোটিয়া বোলার ইমরান তাহির। বোলিংয়ে এসেই নিজের ক্রিজে নিজের আধিপত্য বিস্তার করেন তিনি। প্রথম ওভারেই ডোয়াইন স্মিথ ও লেন্ডল সিমন্সকে ফিরিয়ে দেন এই লেগস্পিনার। জেরোম টেইলরের এক হাতের দারুণ ক্যাচে পরিণত হওয়া মিলার ততোধিক দর্শনীয় ক্যাচে বিদায় করেন স্মিথকে। আর এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে পড়েন সিমন্স। নিজের চতুর্থ ওভারে আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেন তাহির। স্টাম্পিং হয়ে যান ড্যারেন স্যামি আর শর্ট থার্ড ম্যানে অ্যাবটের চমৎকার এক ক্যাচে পরিণত হন আন্দ্রে রাসেল। ৬৩ রানে সাত উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে পড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ একশ’ পার হয় দিনেশ রামদিন ও হোল্ডারের দৃঢ়তায়। তাদের ৪৫ রানের জুটি ভেঙে নিজের পঞ্চম উইকেট নেন তাহির। পাল্টা আক্রমণে অর্ধশতক করে ফিরে যান হোল্ডারও। ৪৮ বলে খেলা তার ৫৬ রানের ইনিংসটি গড়া ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায়। তার বিদায়ের পর এক রান যোগ করেই শেষ হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস। ৪৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা বোলার ইমরান তাহির।

৬৬ বলে ১৬২ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৫০ ওভারে ৪০৮/৫ (ডি কক ১২, আমলা ৬৫, দু প্লেসি ৬২, রুশো ৬১, ডি ভিলিয়ার্স ১৬২*, মিলার ২০, বেহারদিন ১০*; গেইল ২/২১, রাসেল ২/৭৪, হোল্ডার ১/১০৪)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩৩.১ ওভারে ১৫১ (স্মিথ ৩১, গেইল ৩, স্যামুয়েলস ০, কার্টার ১০, রামদিন ২২, সিমন্স ০, স্যামি ৫, রাসেল ০, হোল্ডার ৫৬, টেইলর ১৫*, বেন ১; ৫/৩৯, মরকেল ২/২৩, অ্যাবট ২/৩৭, স্টেইন ১/২৪)

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *