Connect with us

ঢাকা

অপহৃত আনাস উদ্ধার, গ্রেফতার ৭

Published

on

রাজধানীর শাহবাগ থানাধীন বৈশাখী আবাসিক হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়ে মো. মোহাইমিনুল ইসলাম আনাসকে উদ্ধার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা ও অপরাধতথ্য বিভাগ (ডিবি)। এ সময় ৫ অপহরণকারী ও অপহরণকারীদের সহযোগী দুই বিকাশ এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় একটি মোটরসাইকেল।  গতকাল শুক্রবার দিনগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, শাহাদাৎ হোসেন, শরীফ হোসেন, নিধন চন্দ্র দাস, সেলিম, হোটেল বয়, আব্দুল কাদের, বিকাশ এজেন্ট মালিক নাছির উদ্দিন ও তার কর্মচারী বাপ্পি।  রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, অনলাইনে নিজের ব্যবহৃত মোবাইল হ্যান্ডসেট বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে সেটা বিক্রি করতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন মোহাইমিনুল।

আনাসের বাবা ব্যবসায়ী বাবা ফখরুল ইসলাম জানান, মোহাইমিনুল ইসলাম আনাস গত বছর মোহাম্মদপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে কোথাও ভর্তি হতে না পেরে এবার পুনরায় ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সে জন্য ফার্মগেটে ইউসিসিতে কোচিং করছেন।

ছেলেকে ফিরে পেয়ে খুবই আনন্দিত বাবা ফখরুল ইসলাম। ডিবির প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ আমার ছেলেকে আমার কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমি যে কী খুশি, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। ধরেই নিয়েছিলাম ছেলেকে আর ফিরে পাব না। আমি অপহরণকারীদের কথা শুনিনি। এর আগে দেখেছি, অপহরণকারীরা টাকাও নিয়েছে, আবার বিভিন্ন নদীতে লাশও পাওয়া যায়। তাই আমি সরাসরি আইনের সহযোগিতা নিয়েছি। সেই অনুযায়ী ২২ জুলাই রাতেই আদাবর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। এর পরের দিন ২৩ জুলাই একই থানায় মামলা দায়ের করি।’

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ওই হোটেলের কর্তৃপক্ষের কেউ জড়িত থাকতে পারে। কারণ ৩-৪ দিন ধরে হোটেলের একটি কক্ষে একজনকে বন্দি করে নির্যাতন করা হচ্ছে, আর কর্তৃপক্ষের কেউ জানে না তা তো হতে পারে না। ওই হোটেলের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সাধারণত হোটেলে এ ধরনের অপরাধ কম হয়। তাই হোটেলগুলোতে নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে।

গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, বৈশাখী হোটেলের পঞ্চম তলার ৫০১ নম্বর কক্ষে আটকে রেখে ভিকটিমকে নির্যাতন করে অপহরণকারীরা। ভিকটিমকে নির্যাতন করে চিৎকারের শব্দ তার বাবা-মাকে শোনাত গ্রেফতারকারীরা। অপহরণকারীরা ভিকটিম মোহাইমিনুলের বাবা ফখরুল ইসলামের কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ফখরুল ইসলাম বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি মামলা করেন।

তিনি আরো বলেন, মামলার পর ডিবি ঘটনার গুরুত্ব বুঝতে পেরে তদন্তে নেমে সন্দেহ হলে প্রথমে হোটেল বয় আব্দুল কাদেরকে গ্রেফতার করে। পরে তার তথ্যানুযায়ী শাহাদাৎ ও শরীফকে গ্রেফতার করা হয়। নিধন সার্বক্ষণিক ভিকটিম মোহাইমিনুলকে নজরদারির মধ্যে রাখত। মুক্তিপণের ১০ লাখ টাকা দেওয়া না হলে ভিকটিমকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল অপহরণকারীরা।

মনিরুল ইসলাম বলেন, এ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করে আসছিল। তারা এ পর্যন্ত ৫ থেকে ৬ জনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করেছে। মুক্তিপণের টাকা তারা বৈশাখী হোটেলের পাশের ১৭/২ নম্বর ভবনের নিচতলায় নাছির টেলিকমের বিকাশের দোকান থেকে আদায় করত। এ দোকানের মালিক নাছির ও কর্মচারী বাপ্পি এ কাজে অপহরণকারী চক্রকে সাহায্য করত। অপহরণকারী চক্রের আরো দুজন সদস্য পলাতক। এদের মধ্যে একজন নারী ও একজন পুরুষ। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশেরপত্র/এডি/এ

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *