Connect with us

জাতীয়

অবক্ষয়কে পেছনে ফেলে আলোর পথে চলার প্রত্যয়ে জাতির বর্ষবরণ

Published

on

newsবিডিপি ডেস্ক: সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ রুখে দেয়ার প্রত্যয় এবং সমাজ ও পরিবারের অবক্ষয়কে পেছনে ফেলে মানবতার জায়গান গেয়ে আলোর পথে চলার শপথ গ্রহণের মধ্যদিয়ে জাতি আজ বরণ করে নিল ১৪২৩ বঙ্গাব্দকে।
উগ্র মৌলবাদী হামলার ভীতি তুচ্ছ করে তেজদীপ্ত বাঙালী প্রতিবছরের মতো এবারও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে দিতে এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অব্যাহত ও দ্রুত সম্পন্নের অঙ্গীকারের মধ্যদিয়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় নতুন বছরকে আবারও স্বাগত জানায়।
অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল অনেক বেশি। তাই লাখো মানুষের বর্ণিল ও উচ্ছ্বল উপস্থিতির কারণে বর্ষবরণের আয়োজন রূপ নেয় জনসমুদ্রে।
চির নতুনের ডাক দিয়ে আসা পহেলা বৈশাখ যেন রঙ ছড়িয়ে দিয়েছে বাঙালির মনে, যার প্রকাশ ঘটেছে নারী-পুরুষের রঙিন সাজে, শিশুদের মুখে ফুটে ওঠা আনন্দের হাসি আর বর্ণিল পোশাকে।
কাকডাকা ভোর থেকে নগরবাসীকে ছুটতে দেখা যায় রমনা পানে। বটমূলে বর্ষবরণের আয়োজন শুরুর বেশ আগে থেকেই সেখানে দলে দলে মানুষ সমবেত হতে থাকে। অল্পক্ষণের মধ্যেই বটমূলের অনুষ্ঠানস্থল উপচে মানুষ ছড়িয়ে পড়ে চার পাশে। এক সময় পুরো রমনাই লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
উৎসবে যোগ দিতে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের সঙ্গে বাবা-মার হাত ধরে রমনামুখী হয়েছে শিশুরাও। কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আর্চওয়ে পার হয়ে পার্কে ঢুকতে হয়েছে সকলকে। সকাল ৭টার আগেই রমনায় প্রবেশে দীর্ঘ লাইনে পড়তে হয় মানুষকে।
বিভিন্ন বয়সের মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে রমনা পার্ক ও আশপাশের এলাকাসহ পুরো নগরী। লাল ও সাদা রঙের শাড়িতে নারী, আর পাজামা-পাঞ্জাবিতে দেখা গেছে পুরুষদের। বেশ কয়েকজন বিদেশিকেও দেখা গেছে পাজামা-পাঞ্জাবি পরে রমনার উৎসবে যোগ দিতে। তাদের কারো কারো গালে ফুটে উঠেছে বৈশাখী আলপনা।
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই ভোরের আবহ ধরে রাখতে যন্ত্রসঙ্গীতে রাগালাপ আর কোরাসে মুখরিত হয়ে ওঠে ভোরের বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে শুরু হয় বর্ষবরণের আনুষ্ঠানিকতা ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো…’ ; ‘তুমি নব নব রূপে এসো প্রাণে…’ প্রভৃতি গানে।
এরপর দিনভর বাদ্যযন্ত্রে নগরী মেতে ওঠে বর্ষবরণের বাঙময় উৎসবে। বাঙালী হারিয়ে যায় কবিতায় ও সুরের সাগরে। ভোর থেকে শুরু হওয়া এ উৎসব চলে গভীর রাত পর্যন্ত। এ সময় লাখো মানুষের ঢল পরিণত হয় মহামিলনে।
বাঙালীর অভিন্ন জাতিসত্ত্বাকে লালনকারী এসব মানুষের জন্য আজ বাংলামোটর থেকে রূপসী বাংলা হয়ে রমনা, পল্টনÑপ্রেসক্লাব থেকে মৎস ভবন হয়ে রমনা, পুরান ঢাকা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে রমনা এবং ধানমন্ডি থেকে কাঁটাবন হয়ে রমনায় ঢোকার সকল পথেই যান চলাচল বন্ধ ছিল।
ছায়ানটের বর্ষবরণের অনুষ্ঠান
মৌলবাদের রক্তচক্ষু এবং সমাজ ও পরিবারের অবক্ষয় আর অন্যায় লোভকে পেছনে ফেলে মানবতার জয়গান গেয়ে রমনা বটমূলে বঙ্গাব্দ ১৪২৩ কে স্বাগত জানায় ছায়ানট।
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শিল্পী অভিজিৎ কুন্ডুর রাগালাপ ‘রাগ গুণকেলি’তে শুরু হয় এবারের বর্ষবরণের আয়োজন। এরপর রাগ নিয়ে আসেন শিল্পী সুস্মিতা দেবনাথ শুচি।
নতুনের আবাহনে একক কণ্ঠে জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জাগো সকল অমৃতের অধিকারী’ গানটি নিয়ে আসেন শিল্পী ইলোরা আহমেদ শুক্লা।
শিল্পী সত্যম কুমার দেবনাথ শোনান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমি কেমন করিয়া জানাব’ গানটি। বড়দের দলের সম্মিলিত কণ্ঠে ‘ওই মহামানব আসে’ পরিবেশনের পর এটিএম জাহাঙ্গীর শোনান ‘এখনো ঘোর ভাঙে না তোর যে’।
এরপর সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয়, ‘আমি ভয় করব না, ভয় করব না’, ‘আমি মারের সাগর পাড়ি দেব’, ‘টলমল টলমল পদভরে বীরদল চলে সমরে’, ‘বল ভাই মাভৈঃ মাভৈঃ, নব যুগ ঐ এল ঐ’, ‘আনন্দধ্বনি জাগাও গগনে’, ‘আমরা তো উজ্জ্বল সূর্য’, ভোর ক’রে যাই কালরাত্রি’, ‘সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে’, ‘মানুষ ছেড়ে খ্যাপা রে তুই’, ‘বাংলা ভূমির প্রেমে আমার প্রাণ হইল পাগল’, ‘বাংলা মা’র দুর্নিবার আমার তরুণ দল’ প্রভৃতি গান।
১৫টি একক গান, ১২টি সম্মিলিত গান, তিনটি আবৃত্তি ও পাঠ দিয়ে সাজানো হয় অনুষ্ঠান। প্রায় দেড়শ শিল্পী অংশ নেন এ পরিবেশনায়।
বিগত বছরগুলোর মতো এবারও অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। সকাল সোয়া ৬টায় রাগালাপে শুরু হওয়া অনুষ্ঠান ৮টা ৩৫ মিনিটে শেষ হয় জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে।
ছায়ানটের অনুষ্ঠানের ঐতিহ্য অনুসারে জাতীয় সঙ্গীতের আগে শুভেচ্ছা কথন নিয়ে আসার কথা ছিলো ছায়ানট সভাপতি সনজীদা খাতুনের। তিনি অসুস্থতার জন্য আসতে না পারায় সহ-সভাপতি ডা. সারওয়ার আলী ওই কথনটি পড়ে শোনান।
সনজীদা খাতুনের কথনে উঠে আসে বাংলা ও বাংলাদেশের ইতিহাস। তিনি বলেন, ‘সাংস্কৃতিসহ পূর্ব-পশ্চিমের অর্থনৈতিক বৈষম্য অনুধাপবন করে পূর্ব বাংলা ফুঁসে উঠে। তারপর স্বাধীনতার জন্য কত রক্তপাত, নারীত্বের-মনুষ্যত্বের কত অবমাননার ভিতর দিয়ে এলো প্রিয় স্বাধীনতা। তারপরেও হত্যার রাজনীতিতে দেশপ্রেমিকদের হটিয়ে বাঙালিত্বে অবিশ্বাসীরা শাসন ক্ষমতা দখল করল। এতো ওঠা-পড়ার পরেও অর্থনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে বর্তমানে উন্নয়নের মুখ দেখেছে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষ।’
তিনি বলেন, ধর্মের নামে গোপন ষড়যন্ত্রের বিরাম নেই। ক্ষমতা দখলের জন্য জ্বালাও পোড়াও নীতির নিষ্ঠুর লীলা অব্যাহত রয়েছে। যে ধর্ম আমাদের আশ্রয় স্বরূপ, যে ধর্ম আমাদের ধারণ করে রেখেছে, তার অপব্যাখ্যা দিয়ে যুক্তবাদী বিজ্ঞান সচেতন মানুষদের হত্যা করা হচ্ছে। বিভ্রান্ত মানুষ আজ যেন শিশু হত্যা আর নারী নির্যাতনে মেতে উঠেছে। ধর্মের রাজনীতিতে শাসনের গদিতে বসবার লোভের সঙ্গে যোগ দিয়েছে নানা অন্যায় লোভ।
চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা
চারুকলার এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় বিশাল টেপা পুতুলে মা ও শিশুর অবয়ব ফুটিয়ে তুলে সামাজিক অবক্ষয় রোধের আহবান জানানো হয়েছে। ‘অন্তর মম বিকশিত করো অন্তরতর হে’-এ প্রার্থনার মধ্যদিয়ে বঙ্গাব্দ ১৪২৩’কে বরণ করে নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ।
আজ সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয় শোভাযাত্রা। শাহবাগ দিয়ে রুপসী বাংলার মোড় ঘুরে টিএসসি হয়ে আবার চারুকলার সামনে এসে শেষ হয় এ বর্ণিল যাত্রা।
সামনে-পেছনে ঢাকের বাদ্যের তালে তালে নৃত্য, আর হাতে হাতে ধরা বড় আকারের বাহারি মুখোশ। টেপা পুতুল আর বাঁশের কাঠামোতে মাছ, পাখি, হাতির মতো নানা লোকজ মোটিফে ফুটে উঠেছে বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্য। সেই প্রতীক আবার ধারণ করেছে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের চিহ্ন, অমঙ্গলের আঁধার ঘোচানোর প্রত্যয়।
শোভাযাত্রার বিশাল ময়ূরপঙ্খী নাও নদীমাতৃক বাংলাদেশের সমৃদ্ধির প্রতীক হয়ে উঠে এসেছে। দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখিয়েছে একরোখা ষাঁড়। গাছ আর পাখি, গরুর শিল্প-কাঠামো মনে করিয়ে দিয়েছে প্রকৃতি আর পরিবেশের প্রতি দায়িত্বের কথা।
আয়োজকরা জানান, বিগত বছরজুড়ে শিশুহত্যা, মা ও সন্তানের মধ্যে সম্পর্কে অবনতি আর ধর্মান্ধ শক্তির ‘আস্ফালনের’ প্রেক্ষাপটে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার ‘থিম’ হিসেবে তারা বেছে নেন ‘সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ’।
মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, পুরাতন বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুনের দিকে ধাবিত হচ্ছি আমরা। এর মাধ্যমে আগের বছর যে ভুলগুলো আমরা করেছি সেগুলো শুধরে নিয়ে নতুন করে পথ চলতে হবে।
তিনি বলেন, এবারের শোভাযাত্রায় মা ও সন্তানের সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে কাজ করার একটা আহ্বান আছে। আজকের শিশুরা আগামী দিনে নেতৃত্ব দেবে। নতুন বছরে তাদের জন্য সুন্দর ও শান্তিময় বাংলাদেশ গড়ার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে আমাদের।
বৈশাখ উপলক্ষে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীর ভিড়
পহেলা বৈশাখের সকালে নগরীর অনেকে কড়া রোদ উপেক্ষা করে মিরপুরে জাতীয় চিড়িয়াখানায় গিয়েছে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। বাংলা নববষর্কে কেন্দ্র করে আজ জাতীয় চিড়িয়াখানা প্রাঙ্গণও বাঙালীর বর্ণিল পোশাকের উজ্জ্বল সাজে সেজে উঠেছিল।
সোনারগাঁও জাদুঘরের বৈশাখী উদযাপন
শিকড় সন্ধানী লোকজ সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে বর্ণাঢ্য আয়োজনে চারদিনব্যাপী চৈত্রসংক্রান্তি, বৈশাখীমেলা ও বর্ষবরণ উৎসবের আয়োজন করেছে সোনারগাঁওস্থ বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। আনন্দোৎসবের প্রভাতি এ আয়োজন শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা ও মনোরম ঝিলের জলে নৌকাবিলাসে একঝাঁক বাউলের গান পরিবেশন মধ্যদিয়ে।
মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন ফাউন্ডেশনের পরিচালক কবি রবীন্দ্র গোপ। এ সময় বিশিষ্ট আবৃত্তিশিল্পী কবি আফরোজা কণার আবৃত্তিতে ‘বৈশাখের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু করা হয়।
বৈশাখী আনন্দযজ্ঞে ছিল নৃত্যানুষ্ঠান, লালন, হাছন রাজা, শাহ আবদুল করিমের গান, পুঁথি পাঠ এবং জারি-সারিগানের সুরের মূর্ছনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বর্ষবরণ উপলক্ষে ফাউন্ডেশনের ‘ময়ূরপক্সক্ষী’ লোকমঞ্চে লালন পাঠশালার ছোট সোনামণিদের নাচ-গান- কবিতা আবৃত্তি ও বাউল গানের আসর বসে।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বৈশাখী শোভাযাত্রা
আজ সকাল ৮টায় রাজধানীর বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে বর্ণাঢ্য ও আকর্ষণীয় এক শোভাযাত্রা বের করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। বাঙালীর চিরায়ত ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি তুলে ধরা হয় নববর্ষের এ শোভাযাত্রায়।
শোভাযাত্রার প্রক্কালে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম রহমত উল্লাহ এমপি। আরো বক্তৃতা করেন খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবউল হাসনাত ও সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ।
সুরের ধারা ও চ্যানেল আই’র বর্ষবরণ
মানুষের কল্যাণ ও মঙ্গলময় জীবনের আহবান জানিয়ে ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও চ্যানেল আই ও সুরেরধারার যৌথ আয়োজনে বর্ষবরণ করল। পহেলা বৈশাখ সুর্যোদয়ের সাথে সাথে এক হাজার শিল্পীর কণ্ঠে বর্ষবরণের গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। সার্বিক তত্ত্বাবধবনে ছিলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। সেতার ও বাঁশি রাগ মুর্চনায় ভোর ৬টায় বিভিন্ন বয়সী এক হাজার শিল্পী অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে প্রবেশ করে। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন চ্যানেল আই এর পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ ও শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। সুর্যোদয়ের সাথে সাথে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ওঠো ওঠো রে…পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরুকরেন বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের। এরপর সববেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় বর্ষবরণের বিভিন্ন গান। বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পরিদর্শনে এসেছেন বেসাময়িক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র সাঈদ খোকন।
বাংলা একাডেমির বর্ষবরণ
বাংলা একাডেমি চত্বরে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল সাড়ে ৭টায়। একক বক্তৃতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্বরচিত ছড়া-কবিতা পাঠের মধ্যদিয়ে একাডেমি বর্ষকে বরণ করে নেয়। এ ছাড়া বিসিকের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ১০ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলাও বসিয়েছে একাডেমি নিজস্ব চত্বরে। নববর্ষ উপলক্ষে ‘বইয়ের আড়ং’ শিরোনামে একাডেমি প্রকাশিত বইয়ের মেলার আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি।
আজ এ মেলার উদ্বোধন করেন এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। বাংলা নববর্ষ বিষয়ে একক বক্তৃতা করেন জামিল চৌধুরী।
জাতীয় প্রেস ক্লাব ও ডিআরইউ’র বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ
জমজমাট অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলা নববর্ষ (পহেলা বৈশাখ) বরণ করা হয়। মধ্যাহ্নভোজে দেশীয় বিশেষ খাবারে সদস্যগণ সপরিবারে অংশ গ্রহণ করেন। সকাল ৮টায় প্রেসক্লাব সদস্য ও তাদের পরিবারের জন্য খৈ, মুড়ি-মুড়কি, পায়েস, বাতাসা ও মধ্যাহ্নভোজে সাদা ভাতের সঙ্গে দেশীয় খাবারের আয়োজন করা হয়।
দিনব্যাপী অনুরূপ অনুষ্ঠান আয়োজন করে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিও (ডিআরইউ)।
রাজধানীর কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মাঠে মেলা
উৎসবের অংশ হিসেবে রাজধানীর কলাবাগান ক্রীড়াচক্র মাঠে বাংলা মা গ্রুপ আয়োজন করেছে তিন দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সকাল ১০টায় মেলার উদ্বোধন করেন বাংলা মা গ্রুপের চেয়ারম্যান নুপুর ঘোষ। মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থানের অর্ধশত বিভিন্ন পণ্যের স্টল অংশ নিয়েছে।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে লাঠিখেলা, লোকগীতি, রবীন্দ্র ও নজরুল সংগীত, নৃত্য, যাদু, কৌতুকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান। মেলা চলবে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ২০ টাকা।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *